প্রতিযোগিতা পুর্ন এ বিশ্বে মানুষ নানা ভাবেই হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরছে। পরাশোনায় ব্যর্থতা, ব্যবসায়ে ক্ষতি, ভালবাসায় অপূর্ণতা, সাংসারিক কলহ মানুষের মনকে বিষিয়ে তোলে। ফলে সহজেই মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরে। এটা এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা যার ফলে হতাশাগ্রস্থরা সিদ্ধান্ত নেয় এ জীবনের কোন মূল্য নেই। মৃত্যুই এখন একমাত্র প্রতিকার। অথচ সামান্য একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় মৃত্যুই সব সমস্যার সমাধান নয়। যারা বিভিন্ন ভাবে হতাশায় ভুগছেন তাদের উচিৎ হতাশা থেকে মুক্তির কিছু উপায় অবলম্বন করা।
তার মধ্যে রয়েছে উদ্বুদ্ধ করণ বই, বিশ্ব বিখ্যাতদের জীবনী, যোগ ব্যায়াম এবং ধর্মীয় রীতি নীতিদর সঠিক নিয়মানুবর্তিতা। এগুলো মানুষের মন থেকে ভয় হতাশা দূর করে। সব সময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখার মাধ্যমে সহজেই হতাশা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। দিনে অন্তত একবার ভাবুন রবার্ট ব্রাউনের কথা। যিনি পরপর ৬ বার যুদ্ধে পরাজিত হয়েও ক্ষান্ত হননি। সপ্তম বারে তিনি যুদ্ধে জয়ী হয়ে ফিরে পেয়েছিলেন নিজের রাজত্ব। তিনি যদি প্রথম বার পরাজিত হওয়ার পর এখানেই সব শেষ ভেবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেন তবেতো তার এই বিজয়ের মুকুট মাথায় পরতে পারতেন না। আজ যে আইনস্টাইনকে আমরা জানি তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে পারেননি।
তাই বলেতো তিনি আত্ম হত্যা করেন নি। আর তাই বিজ্ঞানের রাজ্যে আজ তার জয় জয়কার। একটা পদক্ষেপও বলতে গেলে আইনস্টাইনের তত্ত্বকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়না। সমস্ত ভয় ও হতাশাকে কাটিয়ে ওঠার জন্য দরকার নিজের একাগ্রতা এবং ধৈর্য্য। একটু ভেবে চিন্তে কাজ করলেই এ জীবনে সফলতা আসবেই। সফলতা একদিনে আসেনা। আর তাইতো প্রবাদ আছে Rome was built not in a day এই প্রবাদ দ্বারা এটা বোঝানো হয়েছে যে বৃহৎ কোন কিছুই রাতারাতি হয়না। তার জন্য দরকার হয় সাধনা ও ধৈর্য্যের। মনে রাখতে হবে ধৈর্য্য আর একাগ্রতার কারনেই কচ্ছপের মত ধীর গতির প্রাণী খরগোশকে পরাজিত করতে পেরেছিল। সুতরাং সিদ্ধান্ত নিতে হবে হতাশার কারণে আত্মহত্যা আর নয়। মনে মনে আমাদের একটি কথাই ভাবতে হবে কিছু কিছু ব্যর্থতা পরবর্তী জীবণে সফলতা বয়ে আনে। ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের মনে প্রশান্তি এনে দেয় ফলে সিদ্ধান্তে ধীরস্থীরতা আসে। একজন বীর হতাশায় নুইয়ে পরে জীবনকে জলাঞ্জলী দেয়না। সে বার বার উঠে দারায়। প্রকৃত সাহসীরা হতাশাকে বুরো আঙ্গুল দেখিয়ে উন্নতির শেখরে ওঠে।
নিজেকে তাই বীর ভাবতে শিখুন। মুসা ইব্রাহীম একদিনে রাতারাতি এভারেষ্ট জয় করতে পারেননি। নীল আর্মষ্ট্রং মন চেয়েছে বলেই চাদে যেতে পারেননি। তার জন্য লেগেছে অনেক সাধনা অনেক পরিশ্রম। আমাদের জেনে রাখা উচিত যে মানুষ তার আশা ও স্বপ্নের সমান বর। সুতরাং যা কিছু স্বপ্ন দেখি সে অনুযায়ী কাজ করলে সফলতা আসবেই। তাই সর্বপরি বলতে হয় আত্মহত্যা নয় আত্মগ্লানীকে পেছনে ফেলে রেখে বার বার চেষ্টা করলে সফলতা আসবেই। আমাদেরকে ভাবতে হবে আমি যা চাই সেটা পেতে হলে আমাদেরকে কি কি করতে হবে। আমরা শুধু তাই করবো। আমরা শুধু শুধু কেন ভাববো যে এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সব সময় ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বাচতে হবে। তাহলে একসময় নেতিবাচক বিষয়গুলো বা আমাদের ধরাছোয়ার বাইরের বিষয়গুলো আমাদের কাছে খুব সহজ হয়ে যাবে। ভাবুন আপনার জীবনটা তুচ্ছ কোন ফেলনা বিষয় নয় যে ইচ্ছে হলো আর সেটা নষ্ট করে দিলাম। জীবনের মুল্য সব কিছু থেকে বেশি। সুতরাং সেই জীবনকে বুঝতে শিখুন এবং বুঝতে চেষ্টা করুন। দেখবেন সব হতাশা এবং চোখের জল শুকিয়ে গেছে। ঠোটের কোণ থেকে হারিয়ে যাওয়া হাসিটা ফিরে এসেছে।
এসএম হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়