‘আয়না বিবিরর পালা’ ময়মনসিংহ গীতিকার অন্যতম জনপ্রিয় একটি আখ্যান। আয়না বিবি দূর যুগের লৌকিক গল্প বা কথন থেকে গ্রামীণ প্রেম বিশ্বাসের পটভূমিকায় মৌখিকভাবে রচিত। আয়না বিবি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার এক নিষ্ঠুর বলি। স্বামীর ছলনায় যে ছেড়েছিলো একদা নিজের ঘর, সমাজ। পথ হারা আয়না অনেক দিন পর পথ চিনে স্বামীরালয়ে ফিরে এসে দেখে তার স্বামী উজ্যাল পুনর্বার বিয়ে করেছে। সে যুগে একাধিক পত্নী গ্রহণ অনৈতিক বা অন্যায় না হলেও প্রশ্ন জাগে যে আয়নার জন্য উজ্যাল ফকিরী নিলো, জর্জরিত হলো, সেই আয়নাকে সমাজের কথায় পরিত্যাগ করার আগে কেন উজ্যাল বিদ্রোহী হয়ে ওঠেনি বা পারেনি দাঁড়াতে সমাজের বিপরীতে। কারণ কি সে নিজেও পুরুষ সমাজের অংশ বলে এবং সেও পুরুষতান্ত্রিকতার বাইরে নয় বলে। স্নেহময়ী শ্বাশুড়ি আয়নাকে কোলে তুলে নিতে চায়, আঁচলে বেধে রাখতে চায় পরম মমতায়। শ্বাশুড়ির স্নেহ-আদরে আয়না যেমন বিগলিত তেমনি উজ্যালের দ্বিতীয় দার গ্রহণের ঘটনায় অত্যন্ত ক্লিষ্ট। আগেরবার আয়নাকে স্বামীর ছলনায় ঘর ছাড়তে হয়েছিলো, এবার স্বেচ্ছায় ছাড়লো স্বামীগৃহ। এই হচ্ছে আয়না বিবির পালা’র গল্প। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন রবিউল আলম।
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় নাট্য সংগঠন লোক নাট্যদল আয়োজিত ‘ময়মনসিংহ গীতিকা নাট্যোৎসব- ২০১৪’ এর চতুর্থ দিন রোববার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হলো নাট্যধারা প্রযোজিত নাটক আয়না বিবির পালা।