বাংলার বীরত্বের ইতিহাসের মহান দেশপ্রেমী তিতুমীরের পুরো নাম সৈয়দ নিসার আলী তিতুমীর। ব্রিটিশ শাসক, নীলকর দস্যু ও অত্যাচারী জমিদার গোষ্ঠীর নিপীড়ন নির্যাতন ও শোষণের হাত থেকে বাংলার কৃষক সমাজকে বাঁচানোর লক্ষ্যে তিতুমীর এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। চবি্বশপরগনার নারকেলবাড়িয়া গ্রাম থেকে সেই আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা চবি্বশপরগনা, নদীয়া, ফরিদপুরসহ বিস্তীর্ণ এলাকায়।
অবশ্য আপামর কৃষক সমাজের অধিকার প্রশ্নে এ আন্দোলন গড়ে উঠলেও তিতুমীরের ধর্মীয় চেতনাও আন্দোলনে কাজ করে। ভূমিদস্যু জমিদারদের পীড়নের পাশাপাশি হিন্দু জমিদার কৃষ্ণ রায়ের সাম্প্রদায়িক মনোভাব বিশেষত দাড়ির ওপর করারোপ ঘোষণায় তিতুমীর প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। ব্রিটিশ শাসকদের কাছে তিনি এর প্রতিকার চান। কিন্তু কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় ইংরেজদের বিরুদ্ধেও তিনি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
নারকেলবাড়িয়া গ্রামে তিনি গড়ে তোলেন বিশাল বাঁশের কেল্লা। ১৮৩১ সালে কোম্পানির সৈন্যদের সঙ্গে জমিদারদের বাহিনী একত্রে তিতুমীরের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। ইংরেজ বাহিনীর বিশাল শক্তির কাছে তিতুমীর বাহিনী পর্যুদস্ত হয়। কামানের গোলায় তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা বিধ্বস্ত হয়, সেই সঙ্গে বাংলার মহান দেশপ্রেমী বীরযোদ্ধা তিতুমীরের দেহও ঝাঁঝরা হয়ে যায়। তিতুমীর প্রাণ দিলেও প্রতিবাদের যে আদর্শ রেখে যান তা ছিল অজেয়। যে কারনে ইংরেজ জমিদারদের মাথানত করতে হয়। মুসরিম নিগ্রহের পথ থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় তারা।