‘দোলে দোলে দোলে প্রেমের দোলন-চাঁপা হূদয়-আকাশে’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে এভাবেই উঠে এসেছে দোলনচাঁপা ফুল। কবিগুরু তাঁর কল্পনাশক্তি দিয়ে দোলনচাঁপাকে হূদয়ের আকাশে দোল খাওয়ার কথা বললেও এটি আসলে মাটির কাছাকাছি একটি ফুল। বহুবর্ষজীবী কন্দজাতীয় উদ্ভিদ হচ্ছে দোলনচাঁপা। এটি ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। এখন দোলনচাঁপার সময়। রাস্তায় বের হলে বিশেষ করে বিজয় সরণি, শাহবাগ, রূপসী বাংলা হোটেল ও সোনারগাঁও হোটেল মোড়ে দোলনচাঁপার ফুল হাতে বিক্রেতাদের দেখা যাচ্ছে। যেখানে দোলনচাঁপা সেখানেই সুগন্ধ। রাতের বেলা এর সৌরভ আরও বেড়ে যায়।
দোলনচাঁপার সঙ্গে আমার পরিচয় ছেলেবেলায়। সে সময় ফুটবল খেলতে বাড়ির কাছের কবি নজরুল কলেজ মাঠে যেতাম। ফেরার পথে ডাফরিন হলে একবার ঢুঁ মারতাম। সেখানকার বিশাল ফুলের বাগান ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বর্ষা মৌসুমে দোলনচাঁপার জন্য ডাফরিন হলের টান খুব বেশি ছিল। একবার আমি বাগানের মালীকে অনুরোধ করে দুটো দোলনচাঁপার গাছ তুলে এনেছিলাম।
দোলনচাঁপার বৈজ্ঞানিক নাম Hedychium coronarium। এটি Zingiberaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ। ইংরেজি নামের মধ্যে Butterfly Ginger Lily, White Ginger Lily, Dolan champa উল্লেখযোগ্য। মণিপুরি ভাষায় দোলনচাঁপা হচ্ছে তখেল্লৈ অঙৌভা। সোনটাকা এর মারাঠি নাম। আসামে দোলনচাঁপা হলো সুরুলি সুগন্ধি। সমতল ও পাহাড় দুই জায়গাতেই ভালো হয় দোলনচাঁপা। এর আদি বাড়ি উত্তর ভারত। বর্ষা ও শরৎ দুই ঋতুতেই সুরভিত ফুল থাকে গাছে।
সুত্রঃ ফারুখ আহমেদ