কালো রঙের পাখি। বুলবুলি পাখির মত আকার। তবে এর দেহের সমস্তটা উজ্জ্বল কালো রঙের, তার উপর নীলের আভা। এদের লম্বা লেজটির মাঝখানে চেরা। দূর থেকে দেখলেও অনায়াসে চেনা যায়। এরা পতঙ্গভুক। উড়ে উড়ে পোকা শিকার করে। লম্বা গাছের ডালে গরমকালে ফিঙে বাসা বানায়। ঘাস ও কাঠি দিয়ে। বাড়ির নিরাপত্তার প্রশ্নে এই ফিঙে কারও সাথে আপোষ করে না। কাকের সাথে প্রায়ই ঝগড়ায় লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়। শহরেও মাঝে মাঝে চোখে পড়ে। বাংলাদেশের সর্বত্র এই ফিঙে দেখা যায়। এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Black Drongo আর বৈজ্ঞানিক নাম Dicrurous Adsimilis।
ফিঙে ছোট পাখি হলে কী হবে অনেক বড় পাখিদের চেয়েও তার সাহস অনেক বেশি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফিঙে তার চাইতে বড় পাখি যেমন-কাক, চিল, বাজ, পেঁচা এমনকি শকুনকেও আক্রমন করে। এদের চলাফেরায় কেউ ঝামেলা পাকালেই কিছুতেই সে ছাড় দেয় না। এ স্বভাবটা ফিঙের বেশি দেখা যায় প্রজননকালে। এসময় তার বাসার চারপাশে কাউকেই পাখিটি সহ্য করতে পারে না।
কিছু কিছু শান্ত, নিরীহ পাখি আছে যারা ফিঙে যে গাছে বাসা বানায় সে গাছেই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য বাসা বানায়। এসব গুণ আর বাহাদুরির জন্যই মনে হয় অনেকেই ফিঙেকে পাখির রাজা বলে। ফিঙের প্রজননকাল ফেব্রুয়ারি-আগষ্ট মাসে শুরু হয়। এ সময় এরা দু’ডালের মাঝখানে নরম ঘাস, লতাপাতা দিয়ে বাসা বানায়। ৩-৪টি বাদামী ফোঁটাযুক্ত ডিম পারে। স্বামী-স্ত্রী একত্রে মিলে সংসার দেখাশুনা করে।
ফিঙে করভিডি পরিবারের গায়ক পাখি। মিষ্টি সুরে ডাকার পাশাপাশি এরা কর্কশ কন্ঠেও ডাকে। এদের নকল ডাকের অভ্যাসও আছে। ফিঙেকে অনেক এলাকায় ফিচকা, ফিঙা, ধেথচুয়া,রাজাপাখি এমনকি ডাকাতপাখি নামেও চেনে।