কিশোরগঞ্জের দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতগুলোতে মামলার স্তূপ বাড়ছে। ফলে বিচারপ্রার্থী অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, বিচারক ও জনবল না থাকায় এবং দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে,জেলা জজ আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও কক্ষ না থাকায় বিচারকদের পালা করে আদালত পরিচালনা করতে হয়।
বিশেষ করে প্রধান বিচারিক হাকিম ও বিচারিক হাকিমদের নিজস্ব ভবন না থাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কয়েকটি কক্ষ ব্যবহার করে তাঁদের বিচারকাজ করতে হচ্ছে।আদালত সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত দায়রা জজের একটি পদ, যুগ্ম জেলা জজের একটি পদসহ বিচারিক হাকিমদের অনেকগুলো পদ শূন্য রয়েছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ও দ্রুত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
১৩টি উপজেলা নিয়ে গঠিত দেশের বৃহত্তম জেলা কিশোরগঞ্জের জেলা জজ ও বিচারিক হাকিম আদালতে এখন ফৌজদারি, দায়রা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং বিচারিক আদালতে বিচারাধীন মামলা রয়েছে ২৫ হাজার ৪২৪টি। এ বছর নভেম্বর মাস পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৮৮টি মামলা। গত ২৬ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ জজ আদালত সম্মেলনকক্ষে বিচারবিভাগীয় বার্ষিক সম্মেলনে পুরো জেলার বিচারব্যবস্থার এ অবস্থা তুলে ধরা হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আ ম ম মো. সাঈদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মো. সিদ্দিকুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর রেজাউল আলম, মুখ্য বিচারিক হাকিম নিলুফার সুলতানা, সরকারি কৌঁসুলি শাহ আজিজুল হক, সিভিল সার্জন হোসাইন সারোয়ার খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো, শহীদুল ইসলামসহ জজশিপের বিচারকরা এতে অংশ নেন।
আইনজীবী ভূপেন্দ্র ভৌমিক জানান, জজ আদালত ও সহকারী জজ আদালত দুই জায়গায় হওয়ায় একজন আইনজীবীকে দুই জায়গায় সময় দিতে গিয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। জজ আদালত ভবনকে চারতলা ভবনে উন্নীত করে জেলা জজের সব আদালত একীভূত করা হলে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা নিঃসন্দেহে বাড়বে।
কিশোরগঞ্জের জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘দ্রুত বিচারকাজ নিষ্পত্তি করা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার একটি শর্ত। অবকাঠামো, বিচারক ও জনবল নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।’
-prothom alo