কিশোরগঞ্জে কনসার্টের নামে টিকেট বিক্রি করে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকালে কিশোরগঞ্জে সৈয়দ নজরুল ইসলাম আধুনিক স্টেডিয়ামে হাজার হাজার দর্শক টিকেট কেটে কনসার্ট দেখতে যায়। কিন্তু কনসার্ট না করে অনুষ্ঠান শেষ করায় বিক্ষুব্ধ দর্শকরা ভাংচুর চালায়। ডেসটিনির কয়েকজন কর্মকর্তাকেও তারা লাঞ্ছিত করে। এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার বিকালে স্টেডিয়ামে কনসার্ট হবে জানিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ডেসটিনির পক্ষে কিশোরগঞ্জে প্রচারণা চালানো হয়।
প্রচারণায় ডেসটিনির চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে স্টেডিয়ামে সেমিনার ও কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়। আরো বলা হয়, কনসার্টে ঢাকা থেকে ক্লোজ-আপ ওয়ানসহ দেশের প্রখ্যাত শিল্পীরা কনসার্টে গান করবেন। টিকেটের দাম ধরা হয় ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন মানের। অনেকেই কয়েকগুণ বেশি দামে কালোবাজারেও টিকেট কিনেছেন। জন্য সকাল থেকেই জেলার দূর-দূরান্ত থেকে তরুণ-তরুণীরা স্টেডিয়ামে আসতে থাকে। দুপুর নাগাদ স্টেডিয়াম পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
বিকাল ৪টার দিকে ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন হেলিকপ্টারে করে স্টেডিয়ামে নেমে বক্তব্য দেন। কিশোরগঞ্জের ডেসটিনির ব্রাঞ্চ ইনচার্জ এমটিআর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাই, কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র মাজহারুল ইসলাম ভূঞা, ডেসটিনি গ্রুপের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদ আল ফয়সাল প্রমুখ। বক্তব্যের পরে কনসার্ট হওয়ার কথা থাকলেও অনুষ্ঠান সমাপ্তির ঘোষণা দেয় তারা। এতে টিকেট নেওয়া হাজার হাজার দর্শক বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। উত্তেজিত জনতা মঞ্চ ও চেয়ার-টেবিলসহ প্যান্ডেলে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং ডেসটিনির কয়েকজন কর্মকর্তাকে পিটুনি দেয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা হেলিকপ্টার আটকের চেষ্টা করলে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন তড়িঘড়ি করে হেলিকপ্টারে উঠে স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন।
এসময় জনতা ডেসটিনির বিরুদ্ধে ম্লোগান দিয়ে শহরে মিছিল করে। সমাবেশস্থলে উপস্থিত মামুন মিয়া জানান, “কনসার্ট উপভোগের জন্য আমরা ১৫ জন বন্ধু মিলে ৫০ টাকার টিকিট ২০০ টাকা করে কিনে স্টেডিয়ামে যাই। কিন্তু ডেসটিনি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পর কনসার্ট না করেই অনুষ্ঠান শেষ করে দেয় তারা।” কনসার্টের নামে ডেনটিনি প্রতারণা করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, স্টেডিয়ামে সেমিনারের জন্য অনুমতি নেওয়া হলেও কনসার্ট এবং এর জন্য টিকিট বিক্রির কোনো অনুমতি ছিল না। ডেসটিনি অনুমতি ছাড়াই গোপনে টিকিট বিক্রি করেছে। প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জে ডেসটিনির ব্রাঞ্চ ইনচার্জ এমটিআর খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম