ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানায় ইউরিয়ার অতিরিক্ত মজুদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। গুদামে জায়গা না হওয়ায় ৫০ হাজার টন সার খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন খোলা সার। বাকিগুলো বস্তায় ভরা। খোলা সারগুলো বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাচ্ছে।

কারখানা সূত্র জানায়, কারখানার খোলা সার মজুদ রাখার গুদামে (বাল্ব স্টোর) ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু মজুদ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে এই গুদামে ৮২ হাজার মেট্রিক টন সার রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত সারের চাপে গত বুধবার গুদামের দেয়াল ধসে যায়। এতে গুদামের প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন সার পাশের সড়ক ও ড্রেনের ওপর ছড়িয়ে পড়ে। বৃষ্টির সময় এসব সার ভেসে যাচ্ছে।

অপরদিকে কারখানার ব্যাগভর্তি সার রাখার দুটি গুদামের ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু মজুদ বেশি থাকায় গত তিন মাস ধরে অসংখ্য ব্যাগভর্তি ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কারখানা ও আবাসিক কলোনির বিভিন্ন সড়কে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। ত্রিপল দিয়ে এসব সারের বস্তা ঢেকে দেওয়া হলেও তাতে বৃষ্টির পানি ঢুকছে। রোদের তাপে সারের গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মজুদ সমস্যার কারণে ইতিমধ্যে এক কোটি টাকার সার নষ্ট হয়েছে। কারখানার মহাব্যবস্থাপক মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, বর্তমানে সারের তেমন চাহিদা নেই; কিন্তু পুরোমাত্রায় উৎপাদন হচ্ছে। তাই মজুদের পরিমাণ বেড়ে গেছে। বর্তমানে কারখানায় খোলা সার ৮২ হাজার টন ও বস্তাবন্দী সার ৫২ হাজার টন মজুদ রয়েছে। অতিরিক্ত মজুদের কারণে বাল্ব স্টোরের দেয়াল ধসে পড়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু সার গলে নষ্ট হয়েছে। তবে ব্যাগভর্তি করে সার রক্ষার জন্য রোববার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।

কারখানার বিক্রয় বিভাগ সূত্র জানায়, কারখানায় আমদানি করা সারও রয়েছে। ওই সার বাফার গুদামে মজুদ রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে বিপুল পরিমাণ সার মজুদের কারণে কোনো অবস্থায় গুদাম সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এদিকে কারখানার আওতাধীন পাঁচটি জেলার ডিলারদের মধ্যে জুলাই মাসের বরাদ্দের ৩০ হাজা্র মেট্রিক টন সার এখনো সরবরাহ বাকি রয়েছে।

লিখেছেনঃ সুমন মোল্লা, ভৈরব