কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে গতকাল শনিবার একই সময়ে অনুষ্ঠান আহ্বান করে বিএনপিপন্থী ‘জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম’ ও ‘সচেতন মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম’। এ অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মিলনায়তন ব্যবহারের অনুমতি বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম ওসমান ফারুকের বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তন ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে গত ১১ মার্চ জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম’ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। সে অনুযায়ী তাঁদের জন্য মিলনায়তন বরাদ্দ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে মওদুদ আহমদকে প্রধান অতিথি এবং ওসমান ফারুককে প্রধান বক্তা হিসেবে উল্লেখ করে শহরে প্রচার চালায় মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম। একই সময়ে একই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমী ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে গত বৃস্পতিবার আবেদন করে ‘সচেতন মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম’।
তারা ওই দিন বিকেলে অনুষ্ঠানের পক্ষে এবং ওসমান ফারুককে প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়ে শহরে মিছিল করে। এ অবস্থায় মিলনায়তন বরাদ্দের বিষয়টি জানিয়ে গতকাল সকালে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি পাঠান জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য সচিব ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরে আলম সিদ্দিকী। চিঠিতে একই স্থানে একই সময়ে দুটি সংগঠন সমাবেশ আহ্বান করায় সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর পরপরই একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ শিল্পকলা একাডেমীর সামনে অবস্থান নেয়। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের কিশোরগঞ্জ জেলার সভাপতি মাজহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁদের অনুষ্ঠান পণ্ড করতে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় কিছু লোক তাঁদের পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানস্থলে অনুষ্ঠান আহ্বান করে।
তবে সচেতন মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা পারভেজ সাংবাদিকদের বলেন, ওসমান ফারুক ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিতর্কিত ভূমিকা পালন করে বিএনপিকে বিভক্ত করেছিলেন। এ জন্য তাঁরা ওসমান ফারুককে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। এদিকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে মওদুদ আহমদ, ওসমান ফারুক, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এম হামিদুল্লাহ খান ও শামা ওবায়েদসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা গতকাল দুপুরে কিশোরগঞ্জ পৌঁছান। পরে শিল্পকলা একাডেমী ব্যবহারের অনুমতি বাতিলের বিষয়টি জানতে পেরে মওদুদ আহমদ সফরসঙ্গীদের নিয়ে করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া গ্রামে ওসমান ফারুকের বাড়িতে যান। পরে বিকেলে জেলা শহরের স্টেশন এলাকায় যুবদলের কার্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে মওদুদ আহমদ ও ওসমান ফারুকসহ বিএনপির নেতারা সেখানে বক্তব্য দেন।
– প্রথম আলো