ওসামা বিন লাদেন সৌদি আরবের রিয়াদে ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহন করেন। উচ্চতা- ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি। চোখ- উজ্জ্বল, সবুজ। তার বাবা মোহাম্মদ বিন লাদেন একজন বড় ব্যাবসায়ী ছিলেন। ঊনতিরিশটি ছেলের মধ্যে একুশতম ওসামা বিন লাদেন। তাঁর মা বিবিদের কনিষ্ঠতমা। তার জন্মের কিছু দিন পরই তার বাবা মায়ের মধ্যে সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে। ওসামা বিন লাদেন ইকোনমিক্স এবং ব্যাবসায় প্রসাশনের উপর পড়াশুনা করেন কিংন্স আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকে তিনি কৃতিত্বের সাথে পাশ করে ইন্জিনিয়ারং এর উপর পড়াশুনা করেন কিন্তু ৩য় বছরে তিনি পড়াশুনা বাদ দিয়ে ইসলাম ধর্মের উপর গবেষনা করেন এবং লেখালিখি শুরু করেন।
১৭ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন তার জ্ঞাতিবোন নাজুয়ারকে। ওসামা এবং নাজুয়ার মোট এগারোটি সন্তান। দীর্ঘ জীবনে তিনি ৪ টি বিয়ে করে এবং তার ২৬ সন্তানের বাবা তিনি।
মুহম্মদ আওয়াদ বিন লাদেন(উসামা বিন লাদেন) এর উত্থান চমকপ্রদ। অতি সাধারণ অবস্থা থেকে কোটি কোটিপতি হয়ে ওঠেন ঠিকাদারি সাম্রাজ্যের অধীশ্বর বিন লাদেন। সৌদি আরবের রাজ পরিবারেরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। যে কোনও বিপুল ধনী আরব শেখের মতো জীবন কাটাতে পারতেন ওসামা। কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই একটু একা থাকা ওসামার জীবন ইসলামি পন্ডিতদের হাত ধরে অন্য দিকে চলল। তার প্রথম দুই তত্ত¡গুরু মুহম্মদ কুতব এবং আফগানিস্থানে জিহাদ-এর তত্ত।প্রচারক আব্দুল্লাহ্ আজমা, দু’জনেই জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী সংস্কৃতি পড়িয়েছেন। ইসলামী সংস্কৃতি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্যে আবশ্যিক বিষয়। ১৯৮৯এ সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্থান থেকে সরে আসার পরে ড. আজমের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ায় সিআইএ তাকে দুই পুত্রসহ হত্যা করে। ওসামা বিন লাদেন বিশ্বাস করেন শরিয়া ভিত্তিক ইসলাম ধর্ম।
আব্দুল্লা আজমের যোগাযোগেই ওসামা প্রথমে করাচি, পেশওয়ার এবং তারপর আফগানিস্থান যান। তার পরিচয় হয় সোভিয়েত বিরোধী জিহাদ এর নেতাদের সঙ্গে। ১৯৮২ সালে মোটামুটি পাকাপাকিভাবে আফগানিস্থানে চলে আসেন ওসামা। সঙ্গে আনেন পারিবারিক ব্যবসার বুলডোজার, পাহাড় খোদার যন্ত্রপাতি। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা করতে, কুচকাওয়াজ এবং সেনা ছাউনির জন্যে জমি সমান করতে, পাহাড় কেটে সর্পিল গুহাশ্রয় তৈরি করতে এসব খুব কাজে লেগেছিল। ওসামার তখন মূল কাজ ছিল মুজাহিদিন গোষ্ঠীগুলোর জন্যে নতুন নতুন যোদ্ধা সংগ্রহ করা এবং অর্থ সংগ্রহ করা। সৌদি আরব সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্র তখন এই কাজে প্রত্যÿ উত্সাহ দিয়েছে। মসজিদে মসজিদে ইমামরা তরুণদের স্বেচ্ছাসেবক হয়ে আফগানিস্থানে যুদ্ধে যেতে উত্সাহ দিতেন। প্রত্যেক মসজিদে বিরাট বিরাট কাঠের বাক্স রাখা থাকত এই যুদ্ধের সমর্থনে টাকা তোলার জন্য।
১৯৮৪ সালে ওসামা পেশওয়ারে একটা কেন্দ্র তৈরি করেন। আরব দেশগুলো থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবকরা প্রশিক্ষণ শিবিরে যাওয়ার আগে এখানে জায়গা পেত। তখনও ওসামার নিজস্ব শিক্ষা শিবির ছিল না। ১৯৮৬ নাগাদ আফগানিস্থানের বিভিন্ন জায়গায় সেইসব শিবির তৈরি হল। ১৯৮৮ সালে একটা দফতর তৈরি করলেন ওসামা যে সব মুজাহিদীন নিহত হয়েছেন তাদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য। এই নথির নাম আল কায়দা (ভিত্তিভ‚মি) বলা হয়, এই হচ্ছে ভ্রণাকারে আল কায়দার জন্ম।
১৯৮৯-তে পাকিস্থান গোয়েন্দা দফতর ওসামাকে সতর্ক করে দিল যে, সিআইএ তাকে এবং আব্দুল আজমকে হত্যা করতে চায়। ১৯৯০-এ সৌদি আরবে ফিরে গেলেন ওসামা। এই বছরই তাকে গৃহবন্দি করা হল। এই সময় সরকার ইসলামের পথ থেকে সরে আসছে বলে ওসামার বিভিন্ন বক্তৃতা এবং চিঠি সৌদি রাজ পরিবারকে বেশ অস্বস্তিতে রাখছিল। শাসন ব্যবস্থার পরিশুদ্ধি চেয়ে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী প্রিন্স আসাদ বিন আব্দুল আজিজকে লেখা এক চিঠিতে ওসামা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সাদ্দাম কুয়েত আক্রমণ করবেন। যখন ১৯৯০ সালের ২ আগস্ট সাদ্দাম সত্যিই কুয়েত আক্রমণ করলেন, ওসামা আবার মন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানালেন কুয়েত মুক্ত করার যুদ্ধের জন্য তিনি মুসলমান দুনিয়া থেকে এক লাখ মুজাহিদ এর বাহিনী তৈরি করতে পারেন এদের মধ্যে অনেকেই আফগান যুদ্ধের পোড়খাওয়া সৈনিক। তা না করে সৌদি সরকার যখন দেশ রক্ষা এবং কুয়েত মুক্ত করার জন্য মার্কিন বাহিনীকে আমন্ত্রণ করলেন, ওসামা এক বিরাট ধাক্কা খেলেন। শেখ বিন উথায়াসিনের এক ফতোয়াকে হাতিয়ার করে মুজাহিদ সংগ্রহ করে আফগানিস্থান চলে যাওয়া স্থির করলেন ওসামা। কিন্তু পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত। রাজ পরিবারের সঙ্গে পুরনো যোগাযোগ ভাঙিয়ে কোনও রকমে পাকিস্থান যাওয়ার অনুমতি পেলেন ওসামা। সেখান থেকে আফগানিস্থান এসে দেখলেন, পুরনো মুজাহিদ বন্ধুরা এখন নিজেদের মধ্যে মারামারিতে লিপ্ত। দেখেশুনে সুদান চলে গেলেন ওসামা। সেটা ১৯৯১।
সুদানে নির্মাণ এবং কৃষি প্রকল্পে বিশাল টাকা লগ্নি করলেন তিনি। আল কুদস আল আরবির প্রধান সম্পাদক আবদেল বারি আটওয়ানকে ওসামা বলেছেন, সুদানে তার দুশো মিলিয়ন ডলার লগ্নি করা ছিল। অকৃতজ্ঞ সুদান সরকার কিছুই প্রায় তার ফেরত দেয়নি। ১৯৯৪ সালে সৌদি আরব ওসামার নাগরিকত্ব বাতিল করে। সুদানও চাইছিল না ওসামা সেখানে থাকুন। দুটি পথ খোলা ছিল ওসামার সামনে দেশে ফিরে গিয়ে সারাজীবন কারাগারে বা গৃহে বন্দি হয়ে থাকা, অথবা আমৃত্যু ঘোষিত শক্রদের সঙ্গে লড়ে যাওয়া। সবাই জানে, তিনি দ্বিতীয় পথটিই বেছে নিয়েছিলেন। ড. আইমান আল জওয়াহিরির এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। শুধু স্থানীয় সমস্যার মধ্যে আটকে না থেকে এক বিশ্বজোড়া জিহাদ এর ধারণা জওয়াহিরিই ওসামার মাথায় ঢোকান।
সুদান থেকে উড়ে আসার পর ওসামার তালেবান গোষ্ঠীর সঙ্গে বিশেষ সখ্য জন্মায় এবং মোল্লা ওমরের কাছে ওসামা আনুগত্যের প্রতিশ্ক্রতি দেন। ১৯৯৮-এ ওসামা এবং জওয়াহিরি ইহুদি এবং ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে বিশ্ব ইসলামি ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। ওই বছর ৭ আগস্ট নাইরোবি এবং দার এস সালামের আমেরিকান দূতাবাসে যে বিস্ফোরণগুলো ঘটানো হয়, ইসলামি ফ্রন্টের সেটাই প্রথম আক্রমণ। জবাবে আফগানিস্থানে আল কায়দার বিভিন্ন ঘাঁটির উপর বোমাবর্ষণ করে যুক্তরাষ্ট্র। কান্দাহারে ওসামার ডেরাও তার মধ্যে ছিল। কিন্তু ওসামা বেঁচে যান।
আফগান যুদ্ধ চলাকালীন অন্তত চল্লিশবার গোলাবর্ষণের মধ্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন ওসামা। একবার তার কুড়ি গজের মধ্যে একটা স্কাড মিসাইল ফেটেছিল। একবার বিষাক্ত গ্যাস আক্রমণে প্রায় মারা পড়েছিলেন ওসামা। এখনও যার ফলে মাঝে মাঝে গলার ব্যথায় ভুগতে হয় তাকে। একবার কান্দাহারের ঘাটি থেকে খোশতের দিকে রওনা দেন ওসামা। কান্দাহারের পাচকদের মধ্যের এক চর সিআইএকে খবর দেয়। যে সময় ওসামার খোশতে থাকার কথা, সেখানে বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। কিন্তু ওসামা, কেউ জানে না কেন হঠাৎ পথ পরিবর্তন করে কাবুল চলে যাওয়ায় বেঁচে যান। আর ২০০১ এর সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারের পতনের পর এক বিধ্বংসী বিমান আক্রমণ হয় তোরা বোরায় বা ঈগলের গুহা নামে খ্যাত আফগানিস্থানের পাহাড়ি ডেরায়। সেবারও অল্পের জন্য বেঁচে যান ওসামা। কিন্তু এক্ষেত্রে সম্ভবত তাকে খবর দিয়েছিল পাকিস্থানের আইএসআই-এর কোনও বন্ধু।
পরের জানুয়ারিতে যখন আলজাজিরার পর্দায় দেখা যায় তাকে তখন তার বাঁ কাঁধটা ব্যান্ডেজ থাকার দরুন ডান কাঁধের থেকে উচু দেখায় এবং বাঁ হাতি হওয়া সত্তে¡ও দেখা যায় বাঁ দিকটা তিনি একদম নাড়ছেন না। পরে ওই বছরই আর একটি টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা যায় ইচ্ছে করেই বাঁ হাত নাড়িয়ে জানিয়ে দিচ্ছেন ওসামা, তিনি সেরে উঠেছেন। বাঁ কাঁধে গোলার টুকরো লেগেছিল তার।
আফগানিস্থানে রুশ বাহিনীকে মোকাবিলার জন্য তাকে প্রয়োজন ছিল মার্কিনীদের। তারাই প্রশিক্ষণ দিয়ে, সমর্থন দিয়ে তৈরি করে তাকে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর মার্কিনীদের যাবতীয় হিসাব নিকাশের ছক যায় পাল্টে। মিত্র লাদেন পরিণত হন শক্রতে । লাদেন তার শক্র মোকাবিলায় বেছে নেন সন্ত্রাসের পথ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টিভি পর্দায় টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে আগুন জ্বলতে দেখে বিস্মিত হয়ে গিয়েছিল সারা পৃথিবীর মানুষ। খোদ আমেরিকার মাটিতে এত বড় হামলা এর আগে হয়নি কখনো। এই হামলার হোতা লাদেনকে বিশ্ববাসী চিনে নিয়েছিল আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবেই। লাদেনকে ধরতে এবং তার বাহিনী গুঁড়িয়ে দিতে যে বহুজাতিক বাহিনী আফগানিস্থানে পাঠানো হয়েছিল, তাতে সায় ছিল সারা বিশ্ববাসীর। কিন্তু মিথ্যা অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের পর এই প্রেক্ষাপটও পাল্টে যায়। তার সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিতেও অনেকটা পরিবর্তন আসে। এরপর থেকে অনেকেই লাদেনকে দেখতে থাকেন মার্কিন বিরোধিতার প্রতীক হিসেবে। সন্ত্রাসী হিসেবে যতই দুর্নাম থাক, মার্কিন বিরোধিতার কারণে অনেকের কাছেই ‘হিরো’ হয়ে ওঠেন তিনি। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার মাথার মূল্য ৫০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেও ধরতে পারেনি তাকে। আফগানিস্থান, মধ্যপ্রাচ্য ও পাকিস্থানের অনেক এলাকার মানুষ নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে হলেও লাদেনকে রক্ষা করতে চায়। তাদের দৃষ্টিতে লাদেন সন্ত্রাসী নন মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় এক অকুতোভয় যোদ্ধা।খুব সম্ভবত জওয়াহিরি, যিনি একজন পাস করা শল্যচিকিত্সক, টুকরোটা বের করেছিলেন। ২০০৪ এর পর জনসমক্ষে কোনও প্রামাণ্য নিশ্চিত আত্মপ্রকাশ ঘটেনি ওসামার। তার পলাতক জীবন এবং অসমর্থিত মৃত্যুর খবর নিয়ে জল্পনা এবং গালগুজব চলছেই।
মে মাসের ২ তারখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজেই হোয়াইট হাউস থেকে লাদেনের নিহত হওয়ার খবর ঘোষণা করেন । তাঁর এ ঘোষণার পর লাদেনের লাশ দ্রুত সাগরে সমাহিত করা, অভিযান বিষয়ে কর্মকর্তাদের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য, মৃতদেহের ছবি বা ভিডিও প্রকাশ না করা—ষড়যন্ত্রের কিছু তত্ত্বকে জোরালো করে তুলছে।
সমালোচকদের কেউ কেউ জোর দিয়ে বলছেন, লাদেন কয়েক বছর আগেই নিহত হয়েছেন। লাদেনের নিহত হওয়ার নতুন এ ঘোষণা আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনকে বৈধতা দেওয়ার কৌশলমাত্র। মার্কিন স্বার্থেই সিআইএ এত দিন মৃত লাদেনকে বাঁচিয়ে রেখেছিল ইত্যাদি।
মার্কিন নাগরিক এবং দেশটির যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের সোচ্চার কর্মী সিন্ডি শিহান তাঁর ফেইসবুকে লিখেছেন,
‘আপনি যদি লাদেনের নিহত হওয়ার নতুন এ খবর বিশ্বাস করেন, তবে আপনি বোকা।’
সিন্ডি শিহান যুক্তি দিয়ে বলেছেন,
‘মার্কিন সেনারা এত দ্রুত কীভাবে এবং কোথায় লাদেনের ডিএনএ পরীক্ষা করলেন, এত দ্রুত কেন তাঁকে সমাহিত করা হলো। কেন এখনো নিহত লাদেনের কোনো ভিডিও প্রকাশ করা হয়নি।’
সিন্ডি শিহান আরও বলেছেন,
‘এর আগে ২০০৭ সালে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো নিজেই দাবি করেছিলেন যে লাদেন এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন।’
এ প্রশ্ন কেবল শিহানের একার নয়। ইয়াহু ওয়েবসাইট বলছে, গত সোমবার তাদের সাইটের সার্চ তালিকায় শীর্ষ ছিল, ‘লাদেন মরেননি’, ‘লাদেন এখনো জীবিত’—এসব বাক্য।
ইয়াহুর মতে, খোদ মার্কিন মুল্লুকে এখনো অনেক মানুষ আছে, যারা লাদেন নিহত হওয়ার বিষয়ে ওবামার ঘোষণায় আস্থা রাখতে পারছে না।
ইয়াহুর তথ্য অনুসারে,
‘বিন লাদেন ষড়যন্ত্র’ নামে অধিকাংশ সার্চ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন, উইসকনসিন, নর্থ ক্যারোলাইনা ও নিউ জার্সি থেকে এলাকা থেকে।