আমাকে সব জায়গায় দেখা যায়না।জয়দেবপুর শ্রীপুর অঞ্চলে আমার দর্শন মেলে বেশি। আর স্যাঁতস্যাঁতে নালা নর্দমার পাড়েই হয় আমার শ্রীবৃদ্ধি। অনেক সময় শহুরে সাহেবরা পিকনিক কিংবা শিকারে এসে বেশ বিপদে পড়ে যান-আমার ঝোপের ভেতর ঢোকে। কারণ দূর থেকে আমাকে অনেক নিরীহ বলে মনে হয়-অনেকটা দমকলসের মতো। কিন্তু আমার পুষ্পগুচ্ছ ও পাতার আড়ালে লুকিয়ে আছে অত্যন্ত তীক্ষ্ম কাঁটা।এই কাঁটা গুলো একটু হলদে রঙের।তাই শজে চোখে পড়েনা।পায়ে গেঁথে গেলে বেশ বিপদ যন্ত্রনায় কিছুক্ষন ছটফট করতে হয়।

এবার বলা যাক আমার নাম প্রচলিত নাম কুলেখাড়া, তালমাখনা।বৈজ্ঞানিক নাম Hygrophila spinosa,এরা  Acanthaceae পরিবার ভূক্ত। আমার আছে অনেক ঔষধীগুন। রাজনিঘন্টু ও বহু কবিরাজের নথিপত্রে আমার কথা প্রচুর উল্লেখ আছে। আমার পাতা শিকড় ও বীজ সবই উপকারী রাসায়নিক উপাদানে ভরপুর।যেমন-এলকালয়েড্‌স, ফাইটোস্টেরোল, ও সুগন্ধের তৈলাক্ত পদার্থ। আর আছে এনজাইম ডাইয়াসটেস ও লিপেস।ফলে আমার রস প্রস্রাববর্ধক,মূত্রনালির নানা রকম রোগ্র উপকারী।এমনকি মূত্রনালির পাথর দূর করতেও বেশ সাহায্য করে থাকে।এ সব ছাড়াও জন্ডিস ও বাতজনিত রোগেও আমার বীজের তেল বেশ কার্যকরী।

পরিশেষে একটা কথা বলা দরকার, সেটা হলো-আমরা ধীরে ধীরে এক বিপন্ন প্রজাতি হয়ে পড়েছি। ধান চাষের তোড়জোরে আমাদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই হয়তো আমরা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারি।

-ডঃ নওয়াজেশ আহমদ