প্লেটো (প্রাচীন গ্রিক ভাষায় প্লাতন্‌) (খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৭ – খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৭) বিশ্ববিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক। তিনি দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন এবং দার্শনিক এরিস্টটল তার ছাত্র ছিলেন। এ হিসেবে প্রাচীন গ্রিসের সবচেয়ে প্রভাবশালী দিনজন দার্শনিকের মধ্যে প্লেটো দ্বিতীয়। প্রথম সক্রেটিস এবং শেষ এরিস্টটল। এরাই পশ্চিমা দর্শনের ভিত রচনা করেছেন বলা যায়। প্লেটো একাধারে গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক ভাষ্যের রচয়িতা হিসেবে খ্যাত। তিনিই পশ্চিমা বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। এটি ছিল এথেন্সের আকাদেমি। প্লেটো সক্রেটিসের অনুরক্ত ছাত্র ছিলেন, সক্রেটিসের অনৈতিক মৃত্যু তার জীবনে প্রগাঢ় প্রভাব ফেলেছে।

প্লেটোর সঠিক জন্ম তারিখ জানা যায়নি। প্রাচীন তথ্যসূত্রগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে আধুনিকতম বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছেন প্লেটো ৪২৮ থেকে ৪২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কোন এক সময়ে গ্রিসের এথেন্স বা এজিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এরিস্টন। ডায়োজিনিস লিরটিয়াসের প্রদত্ত তথ্যমতে এরিস্টনের পূর্বপুরুষ ছিল এথেন্সের রাজা কডরাস এবং মেসেনিয়ার রাজা মেলানথাস। প্লেটোর মা’র নাম পেরিকটিওন যার পারিবারিক পূর্বপুরুষ ছিল বিখ্যাত এথেনীয় আইনজ্ঞ এবং কবি সোলন। এ হিসেবে প্লেটো মা ও বাবা উভয় দিক দিয়েই বিশেষ বংশমর্যাদার অধিকারী ছিলেন। এছাড়াও প্লেটো সুদর্শন ও স্বাস্থ্যবান ছিলেন। বলা হয়ে থাকে, আয়তাকার কাঁধের অধিকারী ছিলেন বলেই সবাই তাকে প্লেটো নামে ডাকতো। দর্শনের প্রতি অনন্যসাধারণ নিষ্ঠা ছাড়াও তার বেশ কিছু গুণ ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তিনি সৈনিক ও ক্রীড়াবিদ হিসেবে প্রভূত সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

প্লেটো যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ছিল সুবশেষ অনুকূল। এই সুযোগের সঠিক সদ্ব্যবহার করেতে পেরেছিলেন প্লেটো। সমকালীন শিক্ষার সবরকম সুযোগ-সুবিধাই তিনি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। হিরাক্লিটাসের একটি বিখ্যাত দার্শনিক মত ছিল, পরিবর্তনশীল ইন্দ্রিয়জগৎ সম্পর্কে কোন স্থিত জ্ঞান সম্ভব নয়। এরিস্টটলের মতে এই দার্শনিক মতের সাথে প্লেটো বাল্যকালেই পরিচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও প্লেটোর জীবনে এসময় প্রভাব পড়েছিল পারমেনাইডিস এবং পিথাগোরাসের দর্শনের।

প্লেটোর জীবনে সবচেয়ে বেশি যিনি প্রভাব ফেলেছিলেন তিনি হলেন তার শিক্ষক মহামতি সক্রেটিস। তার জীবনে সক্রেটিসের প্রভাব অতি সুস্পষ্ট কারণ সক্রেটিসের সব কথোপকথন প্লেটোই লিখে গেছেন। শৈশবকাল থেকেই প্লেটোর সাথে সক্রেটিসের পরিচয় ছিল।

সুত্রঃ উইকিপিডিয়া