রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে গেলেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
গুরুতর অসুস্থ বিএনপির সাবেক মহসচিব মান্নান ভূঁইয়াকে বুধবার রাতে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে পঞ্চম তলায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে খোন্দকার দেলোয়ার বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালে যান। এরপর তার শয্যাপাশে কিছু সময় অবস্থান করেন তিনি।
পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেলোয়ার বলেন, “আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে এসেছি। আমি মহাসচিব হিসেবে নয়, ব্যক্তি দেলোয়ার হিসেবে তাকে দেখতে এসেছি। আমি তার আরোগ্য কামনা করছি।”
এর আগে দুপুরে সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে যান। তারা চিকিৎসকদের কাছ থেকে তার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন।
এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, মাহবুবুর রহমান, সহসভাতি আবদুল্লাহ আল নোমান, আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন,কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাদা মিয়া,সাংসদ আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী, মাহী বি চৌধুরী, জাতীয় পার্টির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোস্তফা জামাল হায়দার, পিডিপি’র ফেরদৌস আহমেদ কোরেশি প্রমূখ নেতারা মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে যান।
মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে যাওয়ার পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন। তিনি আইসিইউতে যেতে না পারলেও নিচতলায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে তার খোঁজ-খবর নেন।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধানও বৃহস্পতিবার মান্নান ভূঁইয়াকে দেখতে যান।
মান্নান ভূঁইয়াকে সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় এনে বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে না পারায় সোমবার থেকে তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে।
ফুসফুসের চিকিৎসার জন্য গত ৩১ মে মান্নান ভূঁইয়া সিঙ্গাপুরে যান। সেখানে তিনি সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মান্নান ভূঁইয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, ফুসফুসের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য তার দেহে মোট আটটি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। সর্বশেষ কেমোথেরাপি দেওয়ার পর থেকে তিনি স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন না।
সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ টো হ্যাং চেং ও সার্জন টি অ্যাগেস্টাইনের তত্ত্বাবধানে গত জানুয়ারি মাস থেকে তার চিকিৎসা চলছিলো। এ চিকিৎসার জন্য তিনি দুই দফা সিঙ্গাপুর যান। সর্বশেষ চিকিৎসা শেষে গত ৩০ এপ্রিল দেশে ফিরেছিলেন তিনি।
চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী মান্নান ভূঁইয়া টানা ১১ বছর বিএনপির মহাসচিব ছিলেন।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার আগ মুহূর্তে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। এরপর ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন তিনি।