কিশোরগঞ্জে নরসুন্দা নদী সংস্কার করে লেকসিটি গড়ে তুলতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৬৪ কোটি টাকা। এই সংবাদ প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত এক মাসে নদীর শহর অংশের দুই পাশের কয়েক একর ভূমি দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা।প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার কারণে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা রাতারাতি নদী দখল অভিযানে নেমেছে বলে শহরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন।
পরিবেশ রক্ষা মঞ্চ পরমের উদ্যোগে গত এক মাসে দখলবাজি বন্ধের দাবিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে শহরের সর্বদলীয় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়।
সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, লেক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শুনে দুই মাস ধরে নদী ভরাট ও দখলের মহোৎসব শুরু করেছে ভূমিদস্যুরা। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জরুরি অবস্থা চলাকালে নরসুন্দার অবৈধ দখল ঠেকাতে অভিযান শুরু হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রভাবশালীরা আবারও নতুন করে অবৈধ দখল শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসক মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, অবৈধ দখল ও মাটি ভরাটের বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। অবিলম্বে অবৈধ দখলদার, মাটি ভরাটকারী ও অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে তা উচ্ছেদ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে তা অবশ্যই করতে হবে।
কিশোরগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র গৌরাঙ্গ বাজারে জ্ঞানদা সুন্দরী ব্রিজ, স্টেশন সড়ক, ঈশা খাঁ সড়ক, বড়বাজার, বত্রিশ, মনিপুরী ঘাট, একরামপুর, বয়লা, পাগলা মসজিদ, গুরুদয়াল কলেজ, আখড়া বাজার—এসব এলাকার দুই তীরের বাসিন্দারা মাটি ভরাট করে নদীটি ক্রমশ দখল করে নিচ্ছে।
পরমের সভাপতি অধ্যক্ষ শরীফ সাদীসহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, নরসুন্দা নদী সংস্কার করে লেকসিটি করার বিষয়টি স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং বর্তমান পৌর মেয়র মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়ার নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। এখন কথা হলো, নরসুন্দা নদীর অবৈধ স্থাপনা কীভাবে অপসারণ করা যাবে?
-prothom alo