আমারনাম তোমরা নিশ্চয় শুনে থাকবে।আমার কাঠের তৈরী আসবাবপত্র তোমাদের কাছে বেশ প্রিয়।আমার নাম গামারি।বন জঙ্গলেই বাস করে থাকি।আমার আদিবাস নিয়ে বেশ মতবাদ আছে পন্ডিত মহলে।তবে আমি জানি বর্মাই আমার আদিস্থান।শুধু বাড়ি ঘরের সাজ-সরঞ্জামই নয়,নৌকা ও ঢোলের খোল বানাতে আমার হালকা ও বাদামি রঙের টেকসই গেছের বেশ চাহিদা আছে।শীত শেষে পাতা ঝরার সময় সারা বছরের অন্যান্য মৌসুমে আমার গাছ দেখতে বেশ সুন্দর।হৃদয়াকৃতি ঘন সবুজ পাতার এক সুঢৌল আচ্ছাদন।আমার অনেক বিভূষিত নাম আছে।
যেমন-সুভদ্রা,কৃষ্ণবৃন্তা,শ্রীপর্ণী,কম্ভারী,গোপভদ্রা,মধুমতি,সুফলা,মেদেনী,কাশ্মরী,ভ্রমরপ্রিয়া।তোমরা শুধু আমার কাঠের উৎকর্ষের কথাই জানো।কিন্তু আমি যে ঔষধিসমৃদ্ধ এক ভেষজ উদ্ভিদ,সে কথা কি কখনো শুনেছো!পুরাকাল থেকে চরক ও সুশ্রুত সবাই আমার ভেষজ গুনে মুগ্ধ! আমি কটুতিক্ত রস, গুরুপাক, উষ্ণবীর্য, কফ ও শোথনাশক, ত্রিদোষনাশক, বিষদোষ দাহ, জ্বর তৃষ্ণা ও রক্তদোষনাশক।নব্যের সমীক্ষায় দেখা যায়,আমার পাতায় আছে এলক্যালয়েড্স্, বিটাস্থেরোল।শিকরে আছে মেমিনোল, একটাকমানল।
ছাল ও কাঠে আছে ওনেক তিক্ত পদার্থ ও স্থেরোল।পাতার রসে আছে জীবাণুনাশক শক্তি।গণোরিয়া ও বেশ কিছু চর্মরোগে ব্যবহার করা হয়।শিকড় কৃমিনাশক ও কুষ্ঠরোগে উপকারী।আর ফুলের রসে নাকি আছে হৃত যৌবনশক্তি ফিরে পাওয়ার দাওয়াই।বসন্ত কালে আমার পাতাহীন ডালে ডালে দেখা দেয় গাঢ় হলুদ বরণ ফুলের ঝিকিমিকি।দূর থেকেও সে সৌরভের আমেজ ভেসে আসে।ওনেকটা চাঁপা ফুলের গন্ধের মতো।কেন জানিনা,আমার পুষ্পমধু ভোমরাদের খুবই প্রিয়।সে জন্যই হয়তো আমার এক ভ্রমরপ্রিয়া পুরাকাল থেকেই প্রচলিত।
-ডঃ নওয়াজেশ আহমদ