কিশোরগঞ্জ ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর একটি জেলা। কিশোরগঞ্জ পর্যটন শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিপুল রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব হবে। বর্তমানে পর্যটন পৃথিবীতে একটি লাভজনক বানিজ্যে পরিণত হয়েছে। ভ্রমনের ফলে মানুষের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভান্ডার সমৃদ্ধ হচ্ছে।স ময়ের পরিক্রমায় পর্যটন রুপ নিয়েছে সমৃদ্ধ শিল্পে। ভারত শ্রীলংকা নেপাল, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশ পর্যটন শিল্পে আমাদের দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে। এই সব দেশ এই শিল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। সেই সাথে পর্যটনকে কেন্দ্র করে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে যে গুলো অযত্ন অবহেলায় ও পতিত রয়েছে। এগুলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে দর্শনীয় স্পটে পরিণত করা যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারে সরকারী প্রচেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারী ব্যবস্থাপণায় অনেক দর্শনীয় স্থান তৈরো হয়েছে যেখানে দেশি বিদেশী পর্যটকদের জন্য যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা কিশোরগঞ্জে অসংখ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন যা আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় এগারসিন্দুর সপ্তদশ শতাব্দীতে বাংলার বিখ্যাত বানিজ্যবন্দর হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিল।

এখানে অসংখ্য বানিজ্য তরী নোঙ্গর করত। এছাড়াও এগারসিন্দুরে ঈশাখাঁর বাস জঙ্গল বাড়ি, ধর্ম প্রচারক পীর আউলিয়া ওবিশিষ্ট ব্যক্তিদের বাসস্থান হিসেবে সুনাম রয়েছে। এখানে আছে দীঘি, মাজার সাদী মসজিদ, শাহ মাহমুদের মসজিদ, বেবুদ রাজার দীঘি, ভেলুয়া সন্দুরীর দীঘি ইত্যাদি।এছাড়াও রয়েছেবাংলার বার ভূইঁইয়ার অন্যতম মসনদে আলা ঈশাখাঁর বাড়ি, পরিখা মসজিদ দেখার জন্য প্রতিদিন বহু লোকের আগমন ঘটে। কিশোরগঞ্জ এলাকার বিশাল হাওর একদিকে যেমন মিঠা পানির বিশাল ভান্ডার তেমনি প্রচুর মৎস সম্পদে ভরপুর। হাজারো জীববৈচিত্রের পাখি জলজ উদ্ভিদ এবং মুক্তাসহ ঝিনুক রয়েছে হাওরের সর্বত্র। হাওর এলাকায় রিজার্ভার নির্মাণসহ পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশাল সুযোগ রয়েছে। বর্ষার হাওরের গ্রামগুলো পানিতে টলমল করতে থাকে, অগাধ জলরাশির অনুপম সৌন্দর্য দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষন করতে পারে।মানুষ হাওরেও ঢেউ দেখার জন্য হাওরে ছুটে আসবে। কিশোরগঞ্জ হাওরেও সৌন্দর্যকে ব্যবহার করে দর্শনীয় স্থান গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।

তাছাড়া কিশোরগঞ্জের পাবলিক লাইব্রেরী বত্রিশের পরামানিকের দীঘি, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ, সেকান্দার নগর সাহেব বাড়ি, কিশোরগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টার। কিশোরগঞ্জ শহরের নীলগঞ্জে বাংলার প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতির বাড়ি, হয়বতনগর দেওয়ান বাড়ী, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠ, সদরেও যশোদলের রাজা গোবন ও কালকা বাড়ি, হোসেনপুরের গোবিন্দপুরে অবস্থিত গাঙ্গাটিয়ার জমিদার বাড়ি, সদরের বৌলাই সাহেব বাড়ি, তাড়াইলের জাওয়ার সাহেব বাড়ী, শাহ সেকান্দারের মাজার,অষ্টগ্রামের দেওয়ান বাড়ি, ইটনার দেওয়ান বাড়ী,মি ঠামইনের দিল্লীর আখড়া, নিকলীর প্রাচীন গুরুই মসজিদ ইত্যাদি এখনো মানুষের দৃষ্টি কাড়ে।

বাজিতপুরে ভাগলপুরে অবস্থিত দেশের শ্রেষ্ঠ ধনী জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ভাগলপুর দেওয়ান বাড়ী, সরারচরে লেংটা সাধুর আশ্রম, এছাড়াও রয়েছে ভৈরবে অবস্থিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু, হোসেনপুরে খুরশীদ মহল সেতু অত্যন্ত আকর্ষণীয়, পাকুন্দিয়ার হযরত পীরে কামেল আব্দুল হেলিম রঃ, কুলিয়ারচরের হযরত মাওলানা আকতার উদ্দিন শাহ, কটিয়াদীর হযরত শামসুদ্দিন রঃ মাজার।

লিখেছেনঃ শাহ মাসুকুর রহমান