সেই গুরুদত্ত-নার্গিসের সময় থেকেই বলিউডি টিনসেলে জুটির পর জুটি নিয়ে সমীক্ষা চলে আসছে। কোনো জুটি হয়তো হিট আবার কোনোটি এই রংমহলের সিংহ দরোজা দিয়ে ঢোকার অনুমতিই হয়তো পায় না! কোনো জুটির রসায়নে দর্শকরা উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন, আবার কোনো জুটির দিকে তারা ফিরেও তাকান না। আর তাই নতুন জুটি নিয়ে গবেষণা করতে যাওয়া এক কথায় বেশ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বৈকি! তবে এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি সাফল্যের সঙ্গে করে দেখিয়েছেন পুণিত মালহোত্রা, ফলাফলটিও পেয়েছেন একেবারে নগদেই। আর এদিকে বলিউডও পেয়ে গেছে আরেকটি নতুন জুটি। নতুন জুটি, নতুন রসায়ন, সোনম আর ইমরান এর ‘আই হেট লাভ স্টোরিজ’।
‘আই হেট লাভ স্টোরিজ’ এর বাংলা করলে অবশ্য আমি ভালোবাসার গল্প ঘৃণা করি- এমনটিই দাঁড়ায়। তবে যাই দাঁড়াক না কেনো এই সিনেমা দিয়ে সবাইকে নিজেদের প্রতি ভালোবাসায় আবদ্ধ করে ফেলেছেন হালের এই দুই সেনসেশন। সবার মনেই এখন ‘আই হেট লাভ স্টোরিজ’ এর বন্দনা।
সিনেমার গল্পে সিমরান (সোনম কাপুর) ভালোবাসার ব্যাপারে খুবই বিশ্বাসী। সে বলিউডের ভালোবাসার গল্পগুলো দারুণ পছন্দ করে। তার প্রতিটি দিনই শুরু হয় একটি ভালোবাসার ছবি বানানোর স্বপ্ন নিয়ে। সিমরানের একজন প্রেমিক আছে, রাজ (সমীর দাত্তানি), পেশায় সে ব্যাংকার। তার প্রেমে বেশ ভালোই কাটছিলো সিমরানের দিনকাল।
অন্যদিকে জয় (ইমরান) একজন নামী পরিচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করে। যে তার রোমান্টিক ছবির জন্য স্বনামধন্য। কিন্তু এরকম একজন পরিচালকের সহকারী হয়েও জয় কিন্তু ভালোবাসায় মোটেও বিশ্বাস করে না। তার কাছে ভালোবাসার অর্থ হচ্ছে- অসুস্থতা। যারা ভালোবাসে, তারা অসুস্থ! জয়ের মনে হয়, প্রেমিক-প্রেমিকার এক্ষেত্রে চিকিৎসা দরকার।
তবে বাস্তবে কিন্তু তাকে প্রতিদিনই পর্দার ভালোবাসার কাহিনী নিয়েই কাজ করতে হয়। বিপত্তি বাঁধে তখনই, যখন প্রথম সিমরানের সঙ্গে পরিচয় হয় জয়ের। এক কথায় সিমরানকে জয়ের অসহ্যই লাগে, কারণ আর কিছুই নয়; সিমরানের এই অতিরিক্ত ‘প্রেম প্রেম’ ভাবটিই বিরক্ত করে জয় কে। জয় তাই প্রথমদিনই সিমরানকে যথেষ্টই বিরক্ত করে তার এই ‘রোমান্টিক’ চরিত্রের জন্য। কিন্ত এই জয়কেই আবার সিমরানের সহকারী হিসেবে কাজ করতে হয়। এদিকে সিমরানও সুযোগ বুঝে পাকেচক্রে পড়া জয়ের বিরুদ্ধে তাকে বিরক্ত করার প্রতিশোধ নেবার পরিকল্পনা করতে থাকে। তবে জয়ের কাছাকাছি এসে তার ভেতরের মানুষটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে শেষপর্যন্ত প্রতিশোধ নেয়া থেকে বিরত থাকে সিমরান।
একসঙ্গে কাজ করতে করতে একে অপরের কাছাকাছি চলে আসে জয় এবং সিমরান; তৈরি হয় দুজনের বন্ধুত্ব, আর এরপর থেকেই একে অপরের প্রতি ভালোলাগার বোধটি কাজ করতে থাকে সিমরান আর জয়ের। এক পর্যায়ে জয়ের প্রেমে পড়ে সিমরান। কিন্তু সে দোটানায় পড়ে তার প্রেমিক রাজ কে নিয়ে। শেষে সে জয়কে সব বলবে বলেই সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এর পরেই ঘটে আরেক ঘটনা। সিমরান জয়কে অন্য এক মেয়ের হাতে চুম্বনরত অবস্থায় দেখতে পায়। তারপরও তার ভালোবাসার কথা সে জয়কে বলে। আর তা শুনে জয় তাকে জানায় যে, এভাবে সে কখনো ভাবেই নি!
অবশ্য সিমরানকে একথা বললেও এরপরের দিনগুলোতে জয় বুঝতে পারে যে, সে আসলে সিমরানের অভাব বোধ করছে। এদিকে সিমরানও তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখে। জয় বুঝতে পারে যে, সে সিমরানের প্রেমে পড়েছে! এভাবেই একসময় কাহিনীর মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটে।