‘কলাগাছ লাগাইয়া আমি না অন্যায় করছি, কলাগাছ কী দুষ করছে। স্যারে যেমনে খুশি আমার বিচার করত। তা না কইরা কলাগাছটিরে এমুন কুঁচি কুঁচি কইরা কেমনে কাইট্যা ফালাইল।’ মঙ্গলবার  বাজিতপুরের রাবারকান্দির গরিব চাষি ছেনু মিয়া এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভেতরে তাঁর রোপণ করা ১৫০টি কলাগাছ সোমবার কেটে ফেলে। ফলে তাঁকে পথে বসতে হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এলাকাবাসী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। পরে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। জানা গেছে, কমিটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে।

জানা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে ছেনু মিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. জমিরউদ্দিনসহ কর্মচারীদের অনুমতি নিয়ে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে কলাগাছ রোপণ করেন। দীর্ঘদিন পরিচর্যার পর সম্প্রতি অর্ধেক গাছে থোড় আসে। এ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল হাশিম সোমবার গাছগুলো কাটিয়ে ফেলেন। ছেনু মিয়া বলেন, কলাবাগান করতে ঋণকর্জ করে তিনি অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। কেটে ফেলায় তাঁর সব গেছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ নুরুন্নবী বাদল ভাইস চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, বলিয়ারদী ইউপির চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল ও মাইজচরের চেয়ারম্যান তৈয়বুর রহমানকে দিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ভাইস চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জানান, তদন্তে শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলার প্রমাণ মিলেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. জমিরউদ্দিন জানান, ক্যাম্পাসের ফাঁকা জায়গায় কলাগাছ লাগাতে ছেনু মিয়াকে মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

লিখেছেনঃ নাসরুল আনোয়ার