নাম পলকজুঁই হলেও প্রকৃত জুঁইয়ের সঙ্গে এদের তেমন কোনো সাদৃশ্য নেই। কারণ, বর্ণিত জুঁই গুল্ম বা মাঝারি উচ্চতার গাছ হলেও প্রকৃত জুঁই লতান ধরনের গাছ। জানামতে, আমাদের দেশে এই গাছ অনেকটাই দুষপ্রাপ্য। ঢাকায় বলধা গার্ডেন ও বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ অন্যান্য পার্ক-উদ্যানে কয়েকটি গাছ দেখা যায়। তবে উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে পলকজুঁই আমাদের সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের পত্রমোচী বনে অল্প-বিস্তর থাকতে পারে। কারণ, গাছটির আদি আবাস পশ্চিম ভারত। সেখান থেকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এখানে এসে থিতু হওয়াটা বিচিত্র কিছু নয়। অবশ্য পুষ্পহীন অবস্থায় এ গাছকে অনেকেই সাধারণ রঙ্গন বলে ভুল করেন। সুঘ্রাণের জন্যও এই গাছের যথেষ্ট খ্যাতি আছে।
পলকজুঁই (Ixora undulata) বড়সড় ধরনের গুল্ম বা ছোট আকৃতির চিরসবুজ গাছ। প্রায় চার মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। সারা বছরই পর্যায়ক্রমে নতুন পাতা গজাতে থাকে। অসংখ্য ডালপালা ও পাতার নিবিড় বুননে এ গাছ দৃষ্টিনন্দন। পাতা ৮ থেকে ১২ সেন্টিমিটার লম্বা, আয়তাকার, মসৃণ ও উজ্জ্বল সবুজ। বোঁটা নেই বললেই চলে, কিংবা বেশ খাটো। বসন্তের শেষ ভাগে ও গ্রীষ্মের শুরুতে সারা গাছ ভরে বড় বড় থোকায় ফুল ফোটে।
ফুলের রং সাদা, ছোট ও সুগন্ধি। দল নল এক সেন্টিমিটার লম্বা ও পাপড়ির সংখ্যা চার। পাপড়ি নল মসৃণ, আট মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা, খণ্ডক আয়তাকার, আগা ভারী ও চার মিলিমিটার দীর্ঘ। ফল ছোট, চার-পাঁচ মিলিমিটার চওড়া, গোলাকার ও কালো। বীজ ছাড়া শিকড় থেকেও চারা গজাতে পারে। নান্দনিক গড়ন ও সুগন্ধের জন্য এই ফুলটি সর্বত্রই রোপণ করা যেতে পারে।
মোকারম হোসেন