ভূমিকা: বাংলাদেশ একটি নদীমাত্তৃক দেশ। এ দেশের বিশাল অঞ্চল জুড়ে রয়েছে হাওর অঞ্চল। কিশোরগঞ্জ জেলার একটি বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যে এর একটি বিশয়াল এলাকা বছরের প্রায় ৬  মাস পানিতে ডুবে থাকে। কিশোরগঞ্জের ১৩ টি উপজেলার মধ্যে নিকলী, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা  অধিক বন্যাপ্রবন হাওর অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।তাছাড়া বাজিতপুর কুলিয়ারচর ও করিমগঞ্জের অংশবিশেষও হাওর এলাকার অন্তর্ভুক্ত।প্রকৃতির এক অপরুপ মিলন ঘটেছে হাওর অঞ্চলে।শীতকালে  যে এলাকা শুকনো কিংবা বালুচর,বর্ষাকালে সেখানে এমন জলধারা যে দিগন্ত বিস্তৃত চারদিক জলে থৈ থৈ করে,তা স্বচক্ষে দেখা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। শুধু জল প্রবাহই নয় প্রচন্ড ঢেউ আছড়ে পড়ে দ্বীপ সদৃশ্য ভূ-খন্ডে আর দিগন্ত বিস্ত্রিত জলরাশি সাগরের বিশালত্বের কথাই স্নরন করিয়ে দেয়। দ্বীপের মত গুচ্ছ  গ্রামগুলো যেন ভাসে থাকে জলের বুকে।বর্ষাকালে যে হাওড়ের পাগল করা ঢেউয়ের  দোলায় হাওরের শুষ্ক প্রন্তর গুলি উত্তাল হয়ে উঠে,শুকনো মৌসুমে স্খানে পানি থাকেনা একফোটাও। যতদুর চোখ যায় শুধু বোরো ধানের শীষ বা সোনা রাঙা ধানের সুবিপুল প্রয়ানময় উদ্বেলিত করে।কোন বছর অকাল বন্যা হলে কৃষককূল বোরো ফসল হারিয়ে কপালে হাত দিয়ে বসে আর্তনাদ করে।শীতকালে হাওর অঞ্চলে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখিদের আগমন হাওড় অঞ্চলে ন্তুন ভাবে প্রান সঞ্চার করে।

ভূ-প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক এতিহ্য: মূল প্রবন্ধে প্রবেশ করার আগে হাওড় অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতিগত বৈচিত্র এবং আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এতিহ্যের সংক্ষিপ্ত ধারনা দেয়া সমীচীন মনে করছি।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হাওরঞ্চল নদী সমতল ভূমি ও উঁচু ঢিবি সদৃশ জনপদ নিয়ে গঠিত। নিকলী,মিঠামইন,ইটনা ও অষ্টগ্রাম অঞ্চলের বড় হাওর নামে পরিচিত যা দক্ষিন অষ্টগ্রাম, উত্তর মিঠামইন,উত্তর পুর্বকোনে ইটনা,পশ্চিমে নিকলী এবং পূর্বে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানা পর্যন্ত বিস্তৃত।দক্ষিনে অষ্টগ্রামের ৭ টি ইউনিয়ন, ইটনার ৮ টি ইউনিয়ন,মিঠামইন থানার ৮ টি ইউনিয়ন এবং নিকলী থানার ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে বড় হাওড়ের অবস্থান।বর্ষাকালে বড় হাওড়ে নৌকা ভাসালে মনে হয় অকুল দরিয়া পার হতে যাচ্ছে।কুল নাই কিনার নাই শুধু অশান্ত ঊর্মিমালা উঠানামা করছে বিরামহীন ভাবে।সকালে যখন রক্তলাল সূর্যের উদয় ঘটে তখন মনে হয় ঢেউয়ের ছন্দ দোলায় রক্তিম সূর্য একবার পানির নিচে ডুবছে আবার ভেসে উঠছে।এ প্রশংগে শ্রী দীনেশ চন্দ্র দেবনাথ স্মৃতিচারন করেছেন এভাবে অতি প্রত্যুষে দিগন্ত বিস্তৃত নিস্তব্ধ জলরাশি ভেদ করে চারিদিকে অয়াবীর ছড়িয়ে সূর্য যখন স্বেচ্ছায় তার তেজ সংবরন করে পুর্বদিক থেকে একটি বড় লাল গোলাকৃতি বলের মত লাফিয়ে লাফিয়ে উঠতে থাকে তখন সে দৃশ্য যে কত চিত্তাকর্ষক যে না দেখেছে তাকে বুঝিয়ে বলার সাধ্য আমার নেই।

হাওর যে বিশাল জনপদ তা কিন্তু অনেক প্রাচীন গভীর জঙ্গলময় এই বিশাল প্রাচীন যুগে  বিভিন্ন উপজাতিদের আবাসস্থল ছিল।আদিকাল থেকেই গাড়ো, হাজং, কোচ প্রভৃতি উপজাতি হাওড়ের বিভিন্ন এলাকায় বসত গড়ে তুলে।চাষাবাদ ও মৎস্য আহরন করেই এদ্রর সুখের জীবন চলছিল। কিন্তু মধ্যযুগে ও এবং এওংরেজ আমলে এসব এলাকা চলে যায় বহিরাগত জমিদার,তালুকদার এবং তাদের পাক পেয়াদা ও বরকান্দাজদের দখলে।

আদিবাসীরা চলে যায় সীমান্তবর্তী পাহাড়ী এলাকায়।বিশাল কৃষিভূমি কুক্ষিগত হয় আঠারবাড়ী,মুক্তাগাছার জমিদার ও ঢাকার নবাব্দের দখলে।সৃষ্টি হয় বিত্তশালী জমিদার শ্রেনী এবং ভুমিহীন কৃষক শ্রেনী।পরবর্তীতে এরাই বিশাল ভূ-সম্পত্তি ও জলাশয়ের মালিক।সমগ্র হাওর অঞ্চল কিশোরগঞ্জের শস্য ও  মৎস ভান্ডার হিসেবে পরিচিত।নিকলী,মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রামে ফসলী জমি রয়েছে মোট-৯০০,৪০৫ হেক্টর,আবাদযোগ্য ৮৯,৯৯১ হেক্টর,ভূমিহীন পরিবার ও চাষী রয়েছে ২৮,৮৮১,প্রান্তিক চাষী ১৯,৪৪৬, ক্ষুদ্র চাষী ১৬,২০৩ এবং বৃহৎ চাষী ৪,৬৮৬।তাদের জমির পরিমান নিম্নে ৪৯ শতক এবং উর্ধে ৭৫০ এরও বেশী।অর্থাৎ ভূমিহীন,ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীর সংখ্যাই হাওড় অঞ্চলে অধিক।

জনস্বাস্থ্য: এই বিশাল হাওর অঞ্চলের চিত্তাকর্ষক বর্ণনা শুনলে প্রানমন পুলকিত হলেও হাওর জনপদের জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে গাঁ শিউরে ওঠে।কারণ বাংলাদেশের অধিক ঝুকিপ্রবন হাওড় অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বন্যাজনিত ক্ষয়ক্ষতি অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেজনস্বাস্থ্য অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের।বর্তমানে তাদের স্বাস্থ্যগয় সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে বিসুদ্ধ পানির অভাব,নদী ভাঙ্গন এবং স্যানিটেশনের তীব্র সংকট।বাড়ীর পাশে,নদীতে,খোলা ও ঝুলন্ত পায়খানার ফলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ বালাই লেগেই থাকেও হাওড় অঞ্চলে।সারা বছর কলেরা,টাইফএদ,আমাশয়,কৃমি জন্ডিস ইত্যাদি রোগের পেছনে প্রায়ই তাদের মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়।দরিদ্র জনগোষ্ঠী এসব রোগে সময়মত চিকিৎসা অর্থ ব্যয় করতে না পারায় প্রতি বছর হাজার হাজার শিশু মারা যায়।বছরে ছয় মাস হাওড় অঞ্চলের শ্রমজীবী কৃষকরা বেকার থাকে।এরা কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকা,সিলেট,চট্টগ্রাম প্রভৃতি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।বিশাল বিশাল ঢেউয়ের তোড়ে হাওড়ের জনপদ ও বাড়িঘর যখন ভাঙ্গতে থাকে তখন ধনী গরীব নির্বিশষে অনেকে শহর এলাকায় আশ্রয় নেয়।বাকীরয়া বিশেষ করে স্ত্রী ও সন্তানেরা তাদের ভিটা মাটি আকড়েঁ ধরে টকে থাকে কিংবা আশেপাশের আত্নীয় বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে থাকে।অনেকের ভিটা মাটি বিলীন হয়ে যায়,তছনছ হয়ে যায় ঘর – বাড়ী।প্রচন্ড রকম অভাব দেখা দেয়। নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার। নিম্নে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের কিছু তথ্য তুলে ধরছি।

নিরাপদ পানি : নিকলী উপজেলার লোকসংখ্যা ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৫৪৮ জন। এ জনসংখ্যার জন্য সচল নলকুপ রয়েছে ৩,৭৪২ টি এবং অচল ২০০ টি।সচল নলকুপের ২,৭৪৭ টি আর্সেনিক মুক্ত এবং ৯৯৫ টি আর্সেনিকযুক্ত যা ব্যবহার অনুপযোগী।

মিঠামইনের সংখ্যা ১ লক্ষ ২১ হাজার ৯০০ জন।সচল নলকূপ রয়েছে ৩,৬৪৩ টি এবং অচল ২৮৫ টি।এর মধ্যে আর্সেনিকমুক্ত ৩৮৫৬ টি।

ইটনা উপজেলার লোকসংখ্যা ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫২১জন। জন।সচল নলকূপ রয়েছে ৩,৬০৫ টি,এবং অচল  ১৯৫ টি, আর্সেনিকমুক্ত ২,৬৪২ টি,আর্সেনিকযুক্ত ৯৬৩ টি।

অষ্টগ্রাম উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৪০০ জন। জন।সচল নলকূপ রয়েছে ১৫২৮ টি,এবং অচল  ১৬৩ টি, আর্সেনিকমুক্ত ১৩০৯ টি, আর্সেনিকযুক্ত ১৮০টি।

বাজিতপুর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫ হাজার ১৪০ জন। জন।সচল নলকূপ রয়েছে ২৬৬৫ টি,এবং অচল ২১৪ টি।

কুলিয়াচরের জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭৮২ জন। জন।সচল নলকূপ রয়েছে ১৩,৬৫৬ টি,এবং অচল ২৯০ টি, আর্সেনিকমুক্ত ১০,৭৭১ টি, আর্সেনিকযুক্ত ২৮৮৫ টি।

করিমগঞ্জের জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৮২০ জন। জন।সচল নলকূপ রয়েছে ২৪৮৩ টি,এবং অচল ২৩১ টি।

২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরের সরকারী ভাবে স্থাপিত নিকলীতে১৪ টি, পপি আর বিপি কর্তৃক ১৯ টি।মিঠামইনে পপি আর বিপি কর্তৃক ১৫ টি।করিমগঞ্জে ব্রাক-২৩ ও আর এ -০৪ টি।উল্লিখিত তথ্যে দেখা যায় যে,জনসংখ্যা অনুপাতে ইউনিসেফ প্রদত্ত নলকূপের সংখ্যা অন্যান্য উপজেলার চেয়ে হাওড় অঞ্চলে তুলনামূলক ভাবে বর্তমানে পর্যাপ্ত। হাওড় এলাকা যেহেতু দুর্গম এবং ডায়রিয়া প্রবণ এলাকা সেহেতু এসব এলাকায় নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি জরুরী।আর এ জন্যই নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা জোরদার করা হয়েছে।ফলে ডায়রিয়ার প্রবনতাও আগের তুলনায় অনেক কমেছে।তবে তথ্য চিত্রে দেখা যায় যে, প্রচুর নলকূপ অকেজো ও আর্সেনিকযুক্ত এবং এ প্রবনতা দিন দিন বাড়ছে।নিম্নে তথ্য চিত্রে তা দেখানো হল-

ক্রঃ
নং
উপজেলার নাম মোট লোক সংখ্যা মোট নলকূপ সচল অচল আর্সেনিক মুক্ত আর্সেনিক যুক্ত ২০০৬-০৭ স্থাপনকৃত নলকূপ
সরকারী আরবিপি/ পপি অন্যান্য
১. নিকলী ১,২৫,৫৪৮ ৩৭৪২ ২০০ ২৭৪৭ ৯৯৫ ১৪ ১৯
২. মিঠামইন ১,২১,৯০০ ৩৬৪৩ ২৮৫ ৩৪৫৬ ১৮৭ ১৫
৩. ইটনা ১,৪১,৫২১ ৩৬০৫ ১৯৫ ২৬৪২ ৯৬৩
৪. অষ্টগ্রাম ১,৪৫,৪০০ ১৫২৮ ১৬৩ ১৩০৯ ১৮০
৫. বাজিতপুর ২,০৫১৪০ ২৬৬৫ ২১৪ ২৮
৬. কুলিয়ারচর ১,৫৪,৭৮২ ১৩৫৬ ২৯০ ১০,৭৭১ ২৮৮৫ ২৩১
৭. করিমগঞ্জ ২,৫১,৮২০ ২৪৭৩ ২৩১ ২৭ ২৩ ব্রাক ও  ৪ ও আর এ

তথ্যসূত্রঃ-২০০৫ইং/ ডিপিএইচই,নিকলী ও মিঠামইন জরিপ অনুযায়ী ও ইটনা, অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর।*২০০৩ ইং ডিপিএইচই, জরিপ কুলিয়ারচর*২০০৭ ইং ডিপিএইচই, করিমগঞ্জ জরিপ * ২০০১ ইং/ সালের জনগণনা (Ceusus) পরিসংখ্যান অনুযায়ী।

# বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, প্রবন্ধকার ও গবেষক অধ্যক্ষ প্রিন্স রফিক খান এর হাওড় সম্পর্কিত বাস্তব রিপোর্টের আলোকে

স্যানিটেশন:

*নিকলী উপজেলার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৪৮ জন।এর মধ্যে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে ৮২২৪ টি।২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরে সরকারী ২১ টি এবং পপির স্তাপিত ১৩৭ টি।

*মিঠামইন উপজেলার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ২১ হাজার ৯০০ জন।এর মধ্যে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে ৮৯৭৩ টি।২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরে পপির স্তাপিত ১৫৬ টি।

*ইটনা উপজেলার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫২১ জন।এর মধ্যে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে ৮৯৭৩ টি।

*অষ্টগ্রাম উপজেলার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৪০০ জন।এর মধ্যে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে ২১৫০টি

এবং খোলা পায়খানা আছে ৮৩৩৮ টি।২০০৭ সাল পর্যন্ত অষ্টগ্রাম উপজেলায় স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার কভারেজ শতকরা ৪৪,০৮ %এবং অস্বাস্থ্যকর ৫৫,১৪%।

*নিকলীতে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা কভারেজ ৬৩,৫০% এবং অস্বাস্থ্যকর পায়খানার শতকরা হার ৭১,৮৮%, মিঠামইনে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা ৫১,৪২% এবং অস্বাস্থ্যকর ৬৭,৯০%।

ইটনায় স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে ৩৫,৩৩%। অথচ কিশোরগঞ্জ সদরের স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার কভারেজ হচ্ছে ৮২,৭২%,করিমগঞ্জে ৫৬,৭৪%,তাড়াইলে ৭১,২৪%,কুলিয়ারচরে ৭৪,৪৯%,বাজিতপুরে ৬০,৭২%,এবং ভৈরব ৭১,২২%।অর্থাত হাওড় অঞ্চল গুলোতে অস্বাস্থ্যকর তথা খোলা ও ঝুলন্ত পায়খানার সংখ্যা অন্যান্য উপজেলার তুলনায় অনেক বেশী।

অষ্টগ্রামে যেখানে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে শতকরা ৪৪,০৮%। নিকলীতে সেখানে ৬৩,৫০%, তাড়াইলে ৭১,৭২%।মিঠামইনে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা রয়েছে শতকরা যেখানে ৫১,৫২%, পাকু্ন্দিয়ায় সেখানে ৭৩,৮৮%। ইটনায় সেখানে ৩৫,৩৩%,কুলিয়ারচরে সেখানে রয়েছে ৭৪,৪৯%।

২০০৭ সালের স্যানিটারী পায়খানার তথ্য:

ক্রমিক নং উপজেলার নাম স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার (%) অস্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার (%)
অষ্টগ্রাম ৪৪.০৮%
নিকলী ৬৩.৫০%
মিঠামইন ৫১.৪২%
ইটনা ৩৫.৩৩%
কিশোরগঞ্জ ৮২.৭৫%
করিমগঞ্জ ৫৬.৭৪%
তাড়াইল ৭১.৭২%
হোসেনপুর ৬২.৬৩%
পাকুন্দিয়া ৭৩.৮৮%
১০ কুলিয়ারচর ৭৮.৪৯%
১১ বাজিতপুর ৬০.৭২%
১২ ভৈরব ৭১,২২%


২০০৫ সালের উপজেলা ওয়ারী স্যানিটারী পায়খানার বিবরন:

ক্রমিক নং উপজেলার নাম পরিবার সংখ্যা স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার (%) অস্বাস্থ্যসন্মত পায়খানার (%) পায়খানা নাই শতকরা হার নাই
স্বাস্থ্যসন্মত অস্বাস্থ্যসন্মত
কিশোরগঞ্জ ৪৭০৬৩ ২৪৪২২ ১৮৯৮ ২০৭৪৩ ৫১,৯০% ০৪,০৩% ৪৪,০৭%
করিমগঞ্জ ৫৩০৩৮ ২২৪৩৫ ১৯৫৭ ২৮৬৪৬ ৪২.৩০% ০৩.৬৯% ৫৪.০১%
তাড়াইল ২৫৯৩৯ ১৬৭৭৩ ৬১৮৮ ২৯৭৮ ৬৪.৬৬% ২৩.৮৫% ১১.৪৯%
হোসেনপুর ২৬৭৭৪ ১১৮৬০ ১৫৭২ ১৩৩৪২ ৪৪.৩০% ০৫.৮৭% ৮৯.৮৩%
পাকুন্দিয়া ৪৯৮৯৮ ২৬৫৩৭ ৩০৮৬ ২০২৭৫ ৫৩.১৮% ৬.১৮% ৪০.৬৪%
কটিয়াদী ৪২৬৩৭ ১৭৯৬১ ৩১০৩ ২১০৬৪ ৪২.১২% ৭.২৮% ৫০.৬০%
বাজিতপুর ৩৫৬২৯ ২০৭২২ ১২৮১১ ২০৯৬ ৫৮.১৬% ৩৫.৯৫% ৫.৮৯%
ভৈরব ২০৮৫৯ ৮৮৭২ ৬২১৬ ৫৭৭১ ৪২.৫৩% ২৯.৮০% ২৭.৬৭%
কুলিয়ারচর ২৫৭১৭ ১৫৭৬৮ ২৪৪১ ৭৫১২ ৬১.৩০% ৯.৪০% ২৯.২৩%
১০ অষ্টগ্রাম ২২৯৪০ ৫৪৭৬ ১২৬৫০ ৪৮১৪ ২৩.৬৭% ৫৫.১৪% ২০.৯৯%
১১ নিকলী ২১৮০২ ১২৫৭৪ ১৫৬৭৩ ৬৬৪৫ ৫৭.৬৭% ৭১.৮৮% ২৯.৫৫%
১২ মিঠামইন ১৬৯৫০ ১৩৩৩ ১১৫০৯ ৪৩৮৮ ৩৭.৩৮% ৬৭.৯০% ৫.২৬%
১৩ ইটনা ২৭৮৪৮ ৫৯৮৬ ৯০১১ ১২৮৫১ ২১.৫০% ৩২.৩৫% ৪৮.১৫%

 

সম্প্রতি আজকের দেশ পত্রিকার এক অনুসন্ধানী রিপোর্টে জানা যায় যে,কিশোরগঞ্জ জেলার হাওড়ঞ্চলের ৬ টি উপজেলার বর্তমানে ৩৫% পরিবার স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা ব্যবহার করছে।গড়ে ৬৫% পরিবার এখনও ঝুলন্ত পায়খানা বা কাচাঁ পায়খানা ব্যবহার করছে। জেলার হাওড়ঞ্চলে স্বাস্থ্যসন্মত পায়খানা ব্যবহারের প্রবণতা খুবই কম।বছরের ৬ মাস হাওর অঞ্চলের বিপুল সংখক মানুষ ক্ষেতখামার, ঝোপ-জংগল, পুকুর পাড়, হাওড় বাওড়, নদীর পাড়,বর্ষা মৌসুমে খোলা ও ঝুলন্ত পায়খানায় মলমূত্র ত্যাগ করে।উন্মুক্ত জলাশয়ে মলমূত্র ত্যাগ করায় বিস্তীর্ণ হাওড় অঞ্চলের পানি দূষিত হচ্ছে। যার ফলে কলেরা টায়ফয়েড ইত্যাদি  রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে।পরিবেশ মারাত্নক ভাবে দূষিত হচ্ছে। দূষিত নদীর পানি দিয়েই লোকজন গোসল ও অন্যান্য গ্রহস্থালীর কাজ সেরে নিচ্ছে।এমন কি বিশুদ্ধ পানি থাকা সত্বেও অজ্ঞতা ও অশিক্ষার কারনে দূষিত পানি পান করার ফলে সুবিশাল হাওড় অঞ্চলে প্রতি বছর ডায়রিয়া, আমাশয়,নিউমোনিয়া ,কৃমি,জন্ডিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যায়।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর চিকিৎসকের তথ্য অনুযায়ী হাসপাতালে যে সব রোগী আসে তার অধিকাংশই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যে,ডায়রিয়া জনিত শিশু মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম।সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধির ফলে হয়ত এটা সম্ভব হয়েছে।এ তথ্য চিত্রে স্বাস্থ্য সচেনতা দিন দিন যে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার প্রমান পাওয়া যায়।

সেবা ও রোগ বিষয়ক তথ্য

উপজেলার নাম হাসপাতালের সংখ্যা ক্লিনিক বেড সংখ্যা কর্মরত ডাক্তার ও সহকারীর সংখ্যা ডায়রিয়া জনিত মৃত রোগীর সংখ্যা
অন্যান্য রোগের কারনে মৃত রোগীর সংখ্যা
সরকারী বেসরকারী ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মী সহকারী ০-৫ ৫ উর্দ্ধ ০-৫ ৫ উর্দ্ধ
নিকলী ০১ ০১ ০০ ৩১ ০৬ ৩৪ ০২ ০০ ০০ ০০ ০২
মিঠামইন ০১ ০০ ০১ ৩১ ০৬ ১৩ ০০ ০৫ ০২ ০৬ ০৪
ইটনা ০১ ০০ ০০ ৩১ ০২ ২১ ০১ ০৩ ০০ ১০ ১০
অষ্টগ্রাম ০১ ০০ ০১ ৩১ ০৫ ২২ ০১ ০৩ ০৩ ০৪ ০৩

মা ও শিশু স্বাস্থ্যঃ

জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমে্র মধ্যে মা ও শিশু স্বাস্থ্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম।হাওর অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র অশিক্ষা ও নানা প্রকার কুসংস্কারের জন্য মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিস্থি্তি খুবই নাজুক।বন্যার সময় এ পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করে।বিশাল জলরশি অতিক্রম করে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ প্রদাণ দুইই কঠিন হয়ে পড়ে।ফলে মানুষ স্থানীয়ভাবে ঝাড়ঁ-ফোঁক ও পানি পড়া,তাবিজ কবজ ব্যবহার করে রোগ মুক্তির প্রচেষ্টা চালায়।বিশেষ করে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা পায় না।

নারীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টিঃ

হাওড়ঞ্চলের নারীদের খাদ্য সংস্কৃতি আর দশটি গ্রাম অঞ্চলের মতই ঐতিহ্ বাহী।অর্থাৎ নারীরা খাওয়া দাওয়া শেষে যা-ই অবশিষ্ট থাকুক না কেন তা খেয়েই সন্তুষ্ট থাকে।বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নারীদের যেন এতা নিয়তি নির্ধারিত।অভাবের সময় হাওড়ের দরিদ্র নারীদের এ অবস্থা আরো তীব্র আকার ধারণ করে।পুরুষদের যখন কোন কাজ থাকেনা তখন খাদ্যভাব দেখা দেয়।হাওড় অঞ্চলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তানসম্ভবা মায়েরা মারাত্নক পুষ্টিহীনতার শিকার হয়। এ কারণে মাতৃমৃত্যু, শিশু মৃত্যুর হার বেড়ে যায়।

পুষ্টি সংক্রান্ত তথ্যঃ

উপজেলার নাম কেদ্রের সংখ্যা ওপুষ্টির শিকার গর্ভবতী মায়ের সংখ্যা প্রসূতি মায়ের সংখ্যা বাচ্চার সংখ্যা চিকিৎ্সাধীন রোগীর সংখ্যা কর্তব্যরত চিকিৎ্ সক  ও সেবকের সংখ্যা মন্তব্য
মায়ের সংখ্যা শিশুর সংখ্যা ০-২ বছর ২-৫ বছর
নিকলী ১১১ ৩৫৭ ২৬১৫ ১৫৬৮ ১২৭৯ ৬১৬০ ০০ ০০ ০০ সম্ভবত কোন তথ্য সংগৃহিত হয় নাই
মিঠামইন ০০ ০০ ০০ ০০ ০০ ০০ ০০ ০০ তথ্য নেই
ইটনা ৩৭ ৮৫৬২ ৪৪৪৭ ৩০৩ ৬৭ ৯০৯ ৪৬৫০ ৭১৬৯ ১৪
অষ্টগ্রাম ৩৭ ৬৮৪ ৩৬০ ১০৪০৪ ৯৭৩০ ৩৫১০ ৬৭৩৫ ২২৮০ ০৬

 

জনসংখ্যা ও পরিবার পরিকল্পনাঃ

বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই একটি বিস্ফোরন্মোখ জনসংখ্যার দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত।ছোট্ট একটি দেশে ১৪ কোটি লোকের বাস।পৃথিবীর মধ্যে ৫ম বৃহত্তম জনবহুল দেশ।প্রতি বর্গ কিঃমিঃ ১০০০লোকের বাস।হাওড় অঞ্চলে অবশ্য ৩০০-৪০০ লোকের বাস।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সঙ্গে জনস্বাস্থের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে।পরিবার ছোট না হলে খাদ্য,পুষ্টি,স্বাস্থ্য,শিক্ষা সবকিছুতেই টান পড়ে।খাদ্যভাবের কারণে পুষ্টিহীনতা,রোগ, শোক শিশু ও মাতৃমৃতুয়র হার বৃদ্ধি পায়।হাওড় অঞ্চলে অশিক্ষা,কুসংস্কার,স্বাস্থ্যহীনতা,অন্ধবিশ্বাস,কুপ্রথা হাওড়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে পশ্চাতমুখী করে রেখেছে।ফলে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের গুরুত্ব এখনও হাওড় অঞ্চলের লোকেরা বুঝতে অক্ষম।বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিকট এসব অর্থহীন।তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি গ্রহনেও অনীহা।সংশ্লিষ্ট তথ্য বিবরনীতে তা স্পষ্ট হয়েছে।আলোচ্য প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনান্তে এবং তথ্য চিত্র থেকে হাওড় অঞ্চলেরর জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা চিহ্নিত করা গেছে।সমস্যাগুলো নিম্নরুপ –

*প্রাকৃতিকবন্যা, দূর্যোগ, খরা এবং নদী ভাঙ্গন। বিশুদ্ধ পানির অভাব।

*স্যানিটেরী ল্যট্রিনের অপর্যাপ্ততা, পুষ্টিহীনতা

*বর্ষাকালে বেকারত্ব ও তীব্র খাদ্যাভাব। চিকিতসা ও স্বাস্থ্যসেবা অপ্রতুল।

*দারিদ্র প্রকট, হাওড় অঞ্চলের জনগনের কৃষি উপর নির্ভর শীলতা।

*শিক্ষার সুযোগ সুবিধার অভাব।যাতায়াত সংকট।

সমস্যা সমাধানে করণীয়ঃ

*হাওড় অঞ্চলের উল্লেখিত সমস্যার সমাধান করা খুব সহজ কাজ নয়।সমগ্র হাওড় অঞ্চলের গ্রাম গুলো গুচ্ছাকারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভক্ত।এগুলোকে যুক্ত করে মাটি ভরাট করা গেলে স্যানিটেশন সমস্যা দূর করা সহজ হতে পারে।এ কাজে সরকারের পাশাপাশি পপি,প্রশিকা,ডরপ,আশা,পল্লীবিকাশ কেন্দ্র,ব্রাক ইত্যাদি বেসরকারী সংস্থা আরো কার্যক্রম চালাতে পারে।

*হাওড় এলাকায় এক সময় Flood Shelter তৈরী করা হয়েছিল।নদী ভাঙ্গনের ফলে যে সব জনপদ বিলীন হয়ে যেত,সে সব পরিবারগুলোকে Flood Shelter- এ আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো।এ কার্যক্রমটি পুনরায় চালু কররা প্রয়োজন।

*হাওড় এলাকায় সুষ্ঠভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য গুচ্ছগ্রাম গুলোতে শুকনো মৌসুমে সমবায় ভিত্তিতে মাটি কাটার কার্যক্রম গ্রহন করতে হবে।ভিজিডি,ভিজিএফ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য অর্থ,টি আর কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।

*কাছাকাছি যেসব গুচ্ছগ্রাম সরুখালের দ্বারা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে সে গুলো মাটি ভরাট করে সংযুক্ত করে রাস্তা তৈরী করা যেতে পারে।এতে গুচ্ছ গ্রাম গুলোতে যাতায়াত সহজ হবে।এ ব্যাপারে এন জি ওরা গুরুত্ত পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

*আরো বেশী ক্লিনিক,স্বাস্থ্যকেন্দ্র,ডাক্তার নার্সের ব্যবস্থা করতে হবে।সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে।

*প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান করতে হবে।বর্ষাকালে কর্মহীন অবস্থায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিকল্প কর্মের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।এ ক্ষেত্রে এনজিওরা, যুবউন্নয়ন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারে।

*১০০% স্যানিটেশন নিশ্চিতকল্পে স্থানীয়ভাবে এনজিওদের দ্বারা রিং-স্লাব নির্মাণ ও সল্পমূল্যে বিতরনের কর্মসূচী জোরদার করা জেতে পারে।

*হাওড়ের আর্থ-সামাজিক ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কল্পে পৃথক হাওর উন্নয়ন বোর্ড তৈরী করতে হবে।

ভৌগলিক বাস্তবতার জন্য হাওড় অঞ্চলে বর্ষাকালে ঝুলন্ত পায়খানা নির্মাণ করা ছারা কোন বিকল্প উপায় থাকেনা।ঝুলন্ত পায়খানাগুলো নদীর কূল ঘেষেই তৈরী করা হয়।তাই জনগনকে এর বিকল্প হিসেবে গুচ্ছ পরিবার গুলোর সুবিধাজনক উঁচু জায়গায় কমিউনিটি স্যানিটারী ল্যাট্রিন তৈরী করার ব্যাপারে আগ্রহী ক্রা যেতে পারে।সরকার ও এনজিওরা যৌথ ভাবে এ কাজটি করতে পারে।ইউ পি চেয়ারম্যান,সদস্য,স্থানীয় নেত্রিবৃন্দ,যুবনেতা,মসজিদের ইমামদের এ কাজে সম্পৃপ্ত করতে হবে।

গবেষণা
অধ্যক্ষ (অব) প্রফেসর রফিকুল ইসলাম খান