art_weedingআজ রিয়ার বিয়ে। বাড়ি ভর্তি মানুষ। বিয়ে উৎসবে বাড়িটা কেমন যেন গমগম করছে। বাহিরে হালকা হালকা বৃষ্টি কিন্তু তবুও যেন মানুষের কমতি নেই। যার কাজ নেই সেও খোঁজে খোঁজে কাজ করার চেষ্টা করছে। যে ব্যস্ত নয় সেও ব্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। আবার সময় সুযোগ পেলেই তরুণ তরুণীদের আলাপ চারিতায় মেতে উঠতে দেখা যায়। তামাসা ছলে গায়ে রং দিতে গিয়ে তরুণীদের জড়িয়ে ধরার চেষ্টাতেও পিছিয়ে নেই তরুণেরা। এমন বিপাকে পরে তরুণীরাও সাময়িক লজ্জা ঢাকার জন্য কোথাও গিয়ে আড়াল হয়। পরিস্থিতি বুঝে আবারও তারা তরুণদের সাথে তামাসা করতে রং কিংবা কালি নিয়ে বেরিয়ে আসে। কখনো একা কখনো বা দলবদ্ধ হয়ে। গ্রামে বা মফস্বলের বিয়েতে এমন চিত্র অহরহই মিলে।

তরুণেরা এমনিতেই সুযোগ খোঁজতে থাকে তার উপর যদি তরুণীরা নিজেরাই এসে ধরা দেয়, তবে তো তরুণদের ভাল লাগারই কথা! মধ্যবয়সীরা বিয়েবাড়ির রান্না-বান্না থেকে শুরু করে। আগন্তুক মেহমানদেরকে খেদমতসহ বিভিন্ন প্রকার কাজে ব্যস্ত। এরই মধ্যে একদল মেয়ে কনেকে সাজাচ্ছে। কেউ কেউ খুনসুটি করে বলছে- “এই বুঝি তোর বর এল! চিলের মত ছোঁ মারি তোরে নিয়ে যাতি”। কথাটি শেষ হতেই অপরাপর সঙ্গীদের মধ্যে হাসির ধুম পড়ে গেল। কনে পক্ষের ছেলে-বুড়ো সকলেই বরের আগমনের প্রত্যাশায় রয়েছে।

বিকেল চারটার দিকে বর পক্ষের লোকেরা এল। সুসজ্জিত বাংলা ঘরে তাদের বসতে দেয়া হল। কনে পক্ষের একজন গিয়ে উঁকি দিয়ে গুণে ফেলল বর পক্ষের সদস্য সংখ্যা। একশ বিশ জন। সংখ্যাটি শুনামাত্রই কন্যার বাপ রিয়াজুল সরকারে শরীরে যেন ১০৬ ডিগ্রি জ্বর আসার মত অবস্থা হল! সে আকাশের দিকে তাকায়। সর্বশান্ত হওয়া মানুষের মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তার দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে ওঠে আকাশ। শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে। চোখে কেবলি সে আলো-ছায়া দেখছে। যেখানে আসার কথা ত্রিশজন সেখানে কিনা এসেছে একশ বিশ জন! মানুষের কি আর আক্কাল-পছন্দ থাকতে নেই, বিচার বিবেচনা কি দেশ থেকে ওঠে গেল? নিজের মনে নিজেই প্রলাপ বকতে থাকে সে। আবার এটাও সে জানে যে- খানিতে একটু উনিশ থেকে বিশ হলে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। বহু কষ্টে এই সমন্ধটি জুটিয়েছে। এমন পাত্র কালে ভদ্রেই মিলে। সুতরাং কোনভাবেই সমন্ধটি হাতছাড়া করা যাবে না। তাছাড়া গ্রামে কোন কারণে মেয়ের বিয়ে একবার ভেঙ্গে গেলে আর সহজে বিয়ের সমন্ধ আসতে চায় না। এই অপ্রত্যাশিত বিষয়টি এক এক করে সবার কানেই পৌঁছল। কনে পক্ষের লোকেদের মধ্যে যেন চাপা আতঙ্কের সাড়া পড়ে গেল। এখন উপায়?

শিশির ও সফিক ব্যাগভর্তি লেবু নামিয়ে রাখতে রাখতেই শুনলো সব ঘটনা। এতক্ষণে বাহিরে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে ওরা অনেকটাই ভিজে গেছে। ইতোমধ্যে বৃষ্টির মাত্রা যেন আরও ঘন থেকে ঘনতর হতে শুরু করল। আকাশ বিদীর্ণ করে গর্জনও হচ্ছে। মেঘ দেবতা বুঝি আজ খুবই রুষ্ট!

শিশির রান্নাঘরে ঢুকে বাবুর্চির সাথে কানেকানে কী যেন ফিসফিস করে বলল। এরপর কনের পিতাকে আশ্বাস দিয়ে বলল- “আফনে কোন চিন্তা খরইন না যে, সব ঠিক অয়ি যাইব”। সফিকের দিকে তাকিয়ে সে কৌশলে দৃষ্টি বিনিময় করে। তারপর আশান্বিত কণ্ঠে পুনরায় রিয়াজুল সরকারকে বলে- “আফনে খালি থোরা ভাত আর পোলাওয়ের ব্যবস্থা করুক্কা। আমি বিশ মিনিটের মধ্যে পোলট্রি মুরগির লইয়া আইরাম”। মুহূর্তেই রিয়াজুল সরকারের চোখ-মুখ আশার আলোতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মুমূর্ষু রোগী নিশ্চিত মৃত্যুর কবল থেকে বেঁচে উঠলে যেমন আশান্বিত হয় তেমনি আর কি! কিন্তু কীভাবে এই অল্প সময়ের মধ্যে করবে তা যেন তিনি ভেবেই পাচ্ছেন না। কেননা, এখান থেকে বাজার প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের পথ। যাওয়া আসাতে প্রায় ঘণ্টা তিনেকের মত লেগে যাবে। কিন্তু তারা বিশ মিনিটের মধ্যে কীভাবে আনবে! বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি দ্বিধান্বিত কণ্ঠে প্রশ্ন করলেন- “তোমরা করবা মানে, ক্যামনি করবা”?
-“চাছা ইতার লাগি আফনে কোন টেনশন খরবানা। আমি যেলান আফনার লগে মাতিছি আফনে অলান করুক্কা। আমরা খুব জলদি আইরাম। আয়রে সফিক”।

এতক্ষণ সফিক আশ্চর্য হয়ে ওর কথা শুনছিল; কিন্তু কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। সফিকের মত কনে পক্ষের সবাই এতক্ষণ হা হয়ে শিশিরের কথা শুনছিল। তার আশ্বাসে সবার চোখেমুখেই দীপ্তির ছটা দেখা ঢেউ খেলে গেল। কথাটি গড়াতে গড়াতে রিয়ার কানেও গেল। শিশির দেরি না করে সফিকের হাত ধরে টেনে প্রচ- বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ছাড়াই বেরিয়ে পড়ল। কোন কোন শুভাকাঙ্খি গোছের নারী ছাতা নিতে বললেও তারা তা কর্ণপাত করে নি। শিশিরের এমন কর্মকা-ে কনে পক্ষের লোকেদের মধ্যে ধন্যধন্য পড়ে গেল। তরুণীদের কাছেও তখন সে রীতিমত নায়ক বনে গেল।

শিশিরের বাড়ি সফিকের বাড়ি থেকে মিনিট দশেকের পথ। একটু সামনে যেতেই সে সফিককে সব বুঝিয়ে বলল। এই প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও সফিকের হাসতে হাসতে যেন টলে পড়ার মত অবস্থা হল। শিশির সফিকের বাল্যবন্ধু। এসএসসি পরীক্ষার পর সফিক পড়াশোনা বাদ দিলেও শিশির বাদ দেয় নি। বর্তমানে সে একটি নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ছে। অবস্থান ও সময়ের পরিবর্তন ঘটলেও তাদের বন্ধুত্বের কোন হেরফের ঘটে নি।

মিনিট বিশেক পরে ওরা একটি কালো ব্যাগ হাতে নিয়ে রান্না ঘরে ঢুকলো। কনে পক্ষের লোকেরা নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও বিশেষ করে তরুণীদের তা দৃষ্টি এড়ায় নি। কোন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার পর মানুষ যেমন স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়ে তেমনি সফিকের পিতার ক্ষেত্রেও ঘটল। রান্না ঘরে ওরা কী ব্যস্থা করছে তা দেখার জন্য তরুণীরাসহ বয়োজ্যেষ্ঠরাও ভীড় করার চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু বাবুর্চি বেটা খুবই রাগী মানুষ। দাড়োয়ানের মত কুচকুচে কালো গোঁফ। ভিতরে রসকস নেই বললেই চলে। কাজের সময় কেউ রসিকতা করুক এটা তার মোটেও পছন্দ নয়। এই কারণে সে রান্না ঘরে শিশির ও সফিক ছাড়া অন্য কাউকে থাকতে দিল না।

বৃষ্টিও তখন অনেকটাই থেমে গেছে। বাবুর্চি ময়নাল আগে থেকেই তরকারী রান্নার জন্য যাবতীয় মসলা এবং বড় হাড়ি-পাতিল প্রস্তুত রেখেছিল। পনের মিনিটের মধ্যে ওদের রান্নার কাজ শেষ হল। এর মধ্যে তরুণীরা শিশিরকে দেখার জন্য বেশ কয়েকবার রান্না ঘরে ঢুকার চেষ্টা করেছিল; কিন্তু ঐ ব্যাটা বাবুর্চি ময়নালের জন্যই ওদের চেষ্টা সফল হয়ে ওঠে নি। তার সেরা অবদানের জন্যই বর থেকেও যেন শিশির সবার কাছে প্রধান আকর্ষণ হয়ে পড়েছে!

একটু পর শিশির ও সফিক রান্না ঘর থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে এল। এই বৃষ্টিভেজা দিনেও ওরা ঘেমে গেছে। উঠানে আরাম করে চেয়ারে বসে। রুমাল দিয়ে শরীরের ঘাম মুছতে চেষ্টা করে। এমন সময় কয়েকজন তরুণী পাখা এনে তাদের বাতাস করার চেষ্টা করে। উদ্দেশ্য শিশিরকেই বাতাস করা। সফিক বিষয়টি বুঝতে পেরে মুখ টিপে হাসছে। শিশির খানিকটা লজ্জাবোধ করলেও তা ঢাকার জন্য বলে- “থাক্ । তোমাতান আর কষ্ট করা লাগতো নায় গো”!
সফিক বলে- “দিক না, ক্ষতি কি? তোর অবশ্য একটু বেশিই ভাল লাগার কথা”! বলেই সে শিশিরের দিকে একটু আড় চোখে তাকায়। শিশিরও মুচকি হেসে বলে –“শালা! চুপ থাক”। তরুণীরা খানিকটা লজ্জা পেলেও সরে যায় না। মিষ্টি রেখে যেমন পিঁপড়া যায় না তেমনি আর কি! বিয়ের অনুষ্ঠানে ঐরকম সুখকর লজ্জা তাদের মোটেও খারাপ লাগে না!

ময়নাল বাবুর্চি খাবার পরিবেশনের সব ব্যবস্থা করে। ইউনিয়ন জুড়েই ময়নাল বাবুর্চির খুব সুনাম রয়েছে। যে কোন ধরনের অখাদ্যকে সুখাদ্য করতে তার জুড়ি নেই। শিশির খাবার পরিবেশনের জন্য সফিকের বাবার কাছে বেশ কয়েকজন দক্ষ মানুষ চায়। যাতে পরিবেশনে কোন প্রকার ত্রুটি না হয়। যেই কথা সেই কাজ। খাবার পরিবেশনের জন্য আগে থেকেই মানুষ সেটিং করা ছিল। এজন্য তাদের খুব একটা বেগ পেতে হল না। তবে রিয়াজুল সরকার আজকের খানির তদারকির ভার সফিক ও শিশিরের হাতেই দিলেন। অন্যান্যরা তাদের সহযোগিতায় থাকবে।

ক্ষুধায় ক্লান্ত শ্রান্ত বর পক্ষের লোকেরা এতক্ষণে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। খাবার আসছে খবরটি শুনতেই ওদের মধ্যে প্রফুল্লতার জোয়ার বইতে শুরু করল। ক্ষুধার্ত বাঘ শিকার সামনে পেলে যেমন খুশি হয় তেমনি আর কি!

যাহোক, খাবার পরিবেশন শুরু হল। প্রথমে সাধ্যমত পিঠা-পায়েস, এরপর পোলাও ভাত ইত্যাদি। পোলায়ের সাথে সবাইকে একটি করে রোস্ট পরিবেশন করা হয়েছিল। অবশ্য মাছ ও খাশির মাংসও ছিল। তাদের দক্ষ পরিবেশনায় নিখুঁতভাবেই খাওয়ার পর্ব শেষ হল। ঢেঁকুর তুলতে তুলতে, কেউ বা খিলাল করতে করতে বিশ্রাম কক্ষের দিকে গেল।

রিয়াজুল সরকার বরপক্ষের মুরব্বী গোছের কয়েকজনকে ডেকে ভদ্রতাসুলভভাবে জিজ্ঞেস করল খাওয়া দাওয়ায় কোন ত্রুটি আছে কিনা। সবাই তৃপ্তির হাসি হেসে বলল- এমন খাওন খাওয়াইছেন বেয়াই হাতের মাজি গেরান বরি রইছে! কথাটি শোনামাত্রই জলিল সাহেবও ঈষৎ লজ্জাস্কর তৃপ্তির হাসি হাসলেন।

বরপক্ষের এবং কনে পক্ষের মাঝে কিছু লেনদেনের ব্যাপার ছিল। তা বাক-বিতন্ডতার মাধ্যমে শেষ হতে হতে সন্ধ্যে হয়ে এল। সন্নিকটের মসজিদ থেকে আযানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে এলে মুরব্বী গোছের অনেকেই নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে চলে যায়। তরুণীরাও মাথায় ওড়না টেনে দিয়ে অন্তঃপুরের দিকে চলে যায়।

প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকলেই ফিরে এল। বিয়ের কাজ শেষ করে কনেকে বরের হাতে তুলে দেওয়া হল। রিয়া খুব কান্নাকাটি করছে। কনেকে অবশ্য বরের হাতে তুলে দেওয়ার সময় বেশির ভাগ মেয়েই কাঁদে। কেউ কেউ অজানা ভয়ে, কেউ হয়ত মন থেকে আবার কেউ বা কাঁদার জন্য কাঁদে। রিয়ার কান্নার হেতুটা কী তা ঠিক বুঝা গেল না! রাত আটটার দিকে বর পক্ষের লোকেরা বিদায় নেয়।

সফিকদের বাড়িটা এখন নীরব। এতটাই নীরব যে, এই মুহূর্তে মনেই হচ্ছে না এটা কোন বিয়ে বাড়ি ছিল! বিদ্যুতের আলোয় সবুজ বৃক্ষগুলোর পাতা চকচক করছে। হঠাৎ নীরবতা ভেঙ্গে ঝিঁ ঝিঁ পোকারাও ডেকে ওঠলো। একটু বিষণ্ন মনে উঠানের মধ্যে চেয়ারে গা এলিয়ে বসে শিশির, সফিক আর ময়নাল বাবুর্চি। সারাটা দিন বেশ একটা ধকল গেছে ওদের ওপর। রিয়াজুল সরকার হঠাৎ এসে শিশিরের হাত ধরে বলে- “বাবা, আইজ তুমি আমার ইজ্জত বাঁচাইলা”।

– “ছি! চাচা, ইতা ফারে না। আমি আফনারার লাগি তেমন কিচ্চু করতাম ফারছি না। হয়ত অনেক কিছু খরার আছিল কিন্তু সব কিছু আফনে এত দ্রুত করছইন যে এই থুরা সময়ে তেমন কিচ্চু খরতাম পারছি না”।
– তারপরেও তুমি অনেক কিছু করছ। এই মেঘ-বৃষ্টিতে ভিজে অনেক কষ্ট করেছ বাবা, এবার খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম নাও।
জলিল সরকার কথাটি বলেই ঘরের ভিতরে চলে যান।

বাহিরে হুহু করে বাতাস বইছে। আবারও হয়ত বৃষ্টি হবে। সফিকের পেটের মধ্যে সেই গোপন কথাটি বেলুনের মতই যেন ফুলে ফেঁপে ওঠছে। প্রকাশ না করলে বুঝি তার আর রক্ষে নেই! তাই অনেকটা উচ্ছ্বাস এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের স্বরে বলেই ফেলল- দোস্ত, আইজ যদি তুই বুদ্ধি কইরা এই ষাটটি ভোতা ব্যাঙ্গ জবাই কইরা রোস্ট না করতি তবে সারা জীবনের জন্যই আজকের দিনের লজ্জাটা সরণীয় হয়ে থাকত।

শিশির একটু মুচকি হেসে ব্যঙ্গ করে শুদ্ধ ভাষায় বলল- লজ্জাটা স্মরণীয় হয়ে নাই বা থাকলো, আজকের এই ঘটনাটাই স্মরণীয় হয়ে থাক, এটাই তো ভাল নাকি? শিশিরের কথা শেষ হতেই বাবুর্চি ময়নাল হু হু করে হেসে ওঠলো। সঙ্গে সফিক এবং শিশিরও যোগ দিল। খোলা আকাশের নিচে ওরা প্রাণখুলে হাসছে। একজনের হাসি থামলে অপরজন পুনরায় শুরু করে। উদোম হাসিতে ফেটে পড়ছে ওরা। হাসছে তো হাসছেই।