jobhuntচাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীতকরণ বিষয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ এর উদ্যোগে আগামী বৃহঃবার সকাল ১০:০০ টায় গণগ্রন্থাগার অডিটোরিয়াম, শাহবাগ, ঢাকায় একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। উল্লিখিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জনাব এম.এ মান্নান উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও একাধিক সংসদ সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্বনামধন্য আইনজীবী, জনপ্রিয় কলামিস্টসহ অনেকেই উপস্থিত থাকবেন বলে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ সাধারণ ছাত্ররা চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২৭ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করা হয়। এর পর প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির বয়স ৬ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে, অনার্স ও ডিগ্রি কোর্স সম্পন্নের মেয়াদ ১ বছর করে বাড়ানো হয়েছে, শুধু ডিগ্রিধারীদের বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে, উচ্চ শিক্ষা সমাপনে ভয়াবহ সেশনজটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে এতে করে তাদের শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকরি পাওয়ার আগেই বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগে একজন ছাত্রর শিক্ষা জীবন ছিল ২১ বছর এখন সেটা ২৩ বছর হলেও নানাবিধ জটিলতার কারণে ২৭/২৮ বছরের পূর্বে তা শেষ হচ্ছে না। এতে করে তারা ২/৩ বছর সময় পাচ্ছে চাকরিতে প্রবেশের জন্য। প্রতি বছর বাংলাদেশের শ্রম বাজারে ২২ লাখ মানুষ প্রবেশ করছে এর থেকে চাকরি পায় মাত্র ৭ লাখ চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সীমাবদ্ধ থাকার ফলে মেধা থাকা সত্ত্বেও চরম প্রতিযোগিতার কারণে অনেকে বেকার থেকে যাচ্ছে। তাছাড়া বিশ্বে উন্নত দেশগুলোতে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ থেকে শুরু করে কোথাও কোথাও ৬০ বছর পর্যন্ত আছে।

২০১২ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স ২ বছর বাড়িয়ে ৫৭ হতে ৫৯ করা হলেও প্রবেশের বয়স বাড়ানো হয়নি। বাংলাদেশের বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি ৯ম সংসদের তৎকালীন স্পিকার চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার বিষয়ে সংসদে দৃষ্টি আকর্ষণ প্রস্তাব দেন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিকত স্থায়ী কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর করা সুপারিশ করে। ৯ম সংসদের শেষ সময়ে মহাজোট সরকার চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। সর্বশেষ ২০১৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২/৩৩ বছর করার সুপারিশ করা হয়। এর বাইরে বিভিন্ন সময় এটি নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়েছে, প্রস্তাব এসেছে।

 বিভিন্ন সময়ে সাধারণ ছাত্ররা রাজপথে নেমেছে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার জন্য। এ দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন, মশাল মিশিল, জাতীয় শহিদমিনারে অনশনও করেছে তারা। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সাধারণ ছাত্রদের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালে আয়োজিত এক সেমিনারে বর্তমান বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর হওয়া যৌক্তিক বলে মেনে নিয়ে অচিরেই এটি ৩২ বছর করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই ছাত্ররা আবারো সেমিনারের আয়োজন করেছে।

এই সেমিনারকে সফল করে তুলতে তারা চাকরি প্রত্যাশীদের পাশাপাশি সচেতন ব্যক্তিদেরকে উপস্থিত থাকার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আশা এই যৌক্তিক দাবি সরকার মেনে নিয়ে শীঘ্রই একটি বিল পাশ করবে।

মুনশি আলিম
প্রধান বার্তা সম্পাদক, এক্সপ্রেসটাইম২৪.কম
মোবাইল: ০১৭৪১৪৩৬৮৫১