এই বইতে স্টিফেন হকিং বলেছেন, মহাবিশ্ব তৈরীতে ঈশ্বরের অপ্রয়োজনীয়তার কথা।  হকিং পূর্বে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন এবং জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানের সঙ্গে ঈশ্বরের কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু তার নতুন বই-এ তিনি বলেছেন, বিগ ব্যাং ছিলো পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়মানুযায়ী অবশ্যাম্ভাবী একটা ঘটনা।  হকিং এর নতুন এই বইটির নাম ‘দ্যা গ্র্যান্ড ডিজাইন’। বইটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে হকিং জানিয়েছেন, বিশ্বের এই বিশাল নকশা সময়ের তালেই তাল মিলিয়ে সারিবদ্ধ হয়েছে। আর তাই এভাবে সাজাতে ঈশ্বরকে ভেবে নেবার কোনো প্রয়োজন পড়ে না।

নতুন বইতে হকিং কালের আর্বিভাব বিষয়ে স্যার আইজ্যাক নিউটানের তত্ত্বের বিরোধিতা করেছেন। আইজ্যাক নিউটন বিশ্বাস করতেন, বিশ্ব ঈশ্বরের তৈরি কারণ এই সুশৃঙ্খল বিশ্ব কোনো গোলমাল থেকে বের হয়ে হয়ে আসেনি । এই বইটির সহকারী লেখক মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী লিওনার্দো মিওদিনো।

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে স্টিফেন হকিং তার বেস্ট সেলিং বই ‘ অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’-এ ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করে বলেছিলেন ‘বিশ্ব সৃষ্টিতে ঈশ্বরের ভূমিকা আছে’।  সম্প্রতি স্টিফেন হকিং জানিয়েছেন, এই বিশ্ব তৈরি হয়েছে নিজে থেকেই, আর তা তৈরি হয়েছে কোনো ঐশ্বরিক কারণ ছাড়াই। এমন নয় যে তিনি বললেই ঈশ্বর নেই হয়ে যাবেন। কিন্তু তার মত বিজ্ঞানের একজন অথরিটির বক্তব্য ফেলনা তো অবশ্যই নয়। এই পোষ্ট কারো গাত্রদাহ সৃষ্টি করলে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করছি।

স্টিফেন হকিংস এবং লিউনার্ড ম্লডিনোর সম্মিলিত লেখা আলোড়ন তোলা বই The Grand Design free ডাউনলোড করার জন্য ভিজিট করুন এই লিংকে অথবা এই লিঙ্কে

মহাবিশ্ব ক্রমেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে-স্টিফেন হকিং এর সাক্ষাতকার

২২ বছর আগে স্টিফেন হকিং তার বিখ্যাত ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ গ্রন্থে পরোক্ষভাবে ঈশ্বরের অস্তিত্বে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন…তার সর্বশেষ গ্রন্থ ‘দ্যা গ্রান্ড ডিজাইন’ এ এবার তিনি দাবি করছেন বিশ্বব্রক্ষান্ড সৃষ্টির পেছনে কারো হাত নেই…বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাকে ১০ টি প্রশ্ন করা হয়েছিলো…টাইম ম্যাগাজিনের গত সংখ্যায় সেগুলো প্রকাশ করা হয়

প্রশ্ন-ঈশ্বরের অস্তিত্ব যদি না থাকে তবে কেন তাঁর অস্তিত্ব বিশ্বজনীন?

হকিং=আমি কখনো দাবি করিনি যে,ঈশ্বরের কোনো অস্তিত্ব নেই…আমরা যে এ বিশ্বে রয়েছি তার কারন হলো ‘ঈশ্বর’…তবে আমি মনে করি না,এ বিশ্ব এমন একজন সৃষ্টি করেছে,যার সঙ্গে কেউ একজন ব্যক্তি ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে পারে…বরং আমি মনে করি,বিশ্বজগত্‍ সৃষ্টির নেপথ্য রয়েছে পদার্থের অন্তনির্হিত বৈশিষ্ট্য-যাকে আমরা ‘নৈর্ব্যত্তিক ঈশ্বর’ বলতে পারি

-এ বিশ্বব্রক্ষান্ডের কি শেষ আছে? যদি থাকে,তবে এর পরে কি আছে?

=বিশ্বব্রক্ষান্ডের বিভিন্ন পর্যবেক্ষন্ন নির্দেশ করে যে এ মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে থাকবে অসীম হারে…এটি চিরতরে বাড়তে থাকবে এবং ক্রমে শূণ্য ও অন্ধকারাচ্ছন্ন হতে থাকবে…এ বিশ্বব্রক্ষান্ডের কোনো শেষ নেই,যদিও এর শুরু ছিল একটি ‘মহাবিস্ফোরণ’ থেকে

-আপনি কি মনে করেন,মহাবিশ্বের গভীরে কোথাও আবাস গেড়ে মানবসভ্যতা আরো অনেক দিন টিকে থাকতে পারবে?

=আমি মনে করি,সৌরজগতে অন্যান্য জায়গায় উপনিবেশ গড়ে টিকে থাকার বেশ ভালো সুযোগ আছে আমাদের…যদিও পৃথিবীর মতো আবাসযোগ্য এত উপযুক্ত স্থান সৌরজগতের আর কোথাও নেই…সে কারনে এটি ঠিক পরিস্কার করে বলা সম্ভব নয় যে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেলে আমরা কিভাবে টিকে থাকবো…আমাদের অস্তিত্ব সুদূরপ্রসারী সময়ের জন্য টিকিয়ে রাখতে হলে অন্য নক্ষত্রে পাড়ি জমাতে হবেই…তা হলে একমাত্র আশা করতে পারি,অনাদিকালের তরে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে পারব।