১২ বছরের শিশু ফরিদ। পরনে নোংরা শার্ট, ছেড়া প্যান্ট। খসখসে ধুলোমাখা শরীর। হাত-পায়ের বিভিন্ন যায়গায় দগদগে ঘা। বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার এ বয়সেই শিশু ফরিদ আসক্ত হয়েছে ভয়াবহ এক নেশায়। জুতা-স্যান্ডেলের সোল জোড়া লাগানোর জন্য ব্যবহৃত গাম বা আঠা দিয়ে বিশেষ উপয়ে নেশা করে ফরিদ স্থানীয় ভাষায় একে ড্যান্ডি বলে  । আর তারমত অসংখ্য ছিন্নমূল শিশু এখন প্রতিদিন গাম দিয়ে নেশা করছে স্কুলে যাওয়ার এ বয়সেই। জুতা বা স্যান্ডেলের সোল জোড়া লাগানোর জন্য ব্যবহৃত গাম বা আঠা একটি পলিথিনের ব্যাগে ভরে বাতাস দিয়ে ফুলালে সৃষ্টি হয় তীব্র গন্ধযুক্ত গ্যাসের। আর সে গ্যাস মুখ দিয়ে টেনে ফুসফুসে নেয়ার সাথে সাথেই হয় ভয়াবহ নেশা। নেশারত অবস্থায় কথা হয় ফরিদের সাথে। সে জানায়, তার বাড়ি ময়মনসিংহে। জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকার রেললাইন বস্তিতে থাকে সে। সারাদিন ময়লা আবর্জনার স্তুপ ঘেটে প্লাস্টিকের বোতল, ভাঙা কাঁচ, লোহা বা টিনের টুকরো যা পায় তা বিক্রি করে কোন রকমে দিন কাটে তার। নেশার জন্য ব্যবহৃত প্রতিকৌটা গামের দাম ৪৫ থেকে ৭০ টাকা। তাই নেশার টাকা যোগাড় করতে প্রায়ই চুরি করতে হয় তাকে। নেশা না করলে কষ্ট হয় ফরিদের। আর নেশা করলে ভাল লাগে তার। ফরিদ জানায় এ নেশায় খরচ কম। সহজে পাওয়া যায়। কিনতে গেলে কেউ সন্দেহও করেনা। তাই তারমত অসংখ্য ছিন্নমূল পথশিশু এখন আসক্ত হয়ে পড়েছে এ গামের নেশার। কেউ কেউ আবার গাঁজা, হেরোইনেও আসক্ত বলে জানায় ফরিদ।