আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে দ্বিতীয় জাতীয় হাওর সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনে সভাপতি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট । অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে উদ্দেশ্য করে অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (জাপা) এমপি মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “হাওরে যারা চাষাবাদ করে, তারা ধানের মূল্য কম পাচ্ছে। কিন্তু ধান ছাড়া হাওরের মানুষের কিছু নেই। তাই ধানের দাম যদি আপনারা ঠিকমতো দিতে না পারেন তবে আগামী নির্বাচনে খবর আছে।”

এ বক্তব্যের রেশ ধরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট বলেন, “আসলে ধানের দামের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার। তা না হলে আগামী নির্বাচনে সমস্যাই হবে। ভোটের হিসাব যে কি হবে আল্লাহই ভরসা।”  তিনি বলেন, “সারাজীবন নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। শেষ বয়সে এসে ফেল না করে রিটায়ার করবো কি না ভাবছি।” এ বক্তব্যের আবহে নিজের বক্তৃতায় ধানের দাম বাড়াতে না পারার পাশাপাশি কিছুট আত্মসাফাইও যেন গান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সফল হইনি। তবে উপকরণ দিয়ে কৃষকদের সাহায্য করা হচ্ছে।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “হাওরে জীবনযাপনের সমস্যা সবচেয়ে বড় সমস্যা। শিক্ষার ব্যাপারেও মহাসমস্যা রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারে নি।” হাওর এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ ভাতা দেওয়ার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুহিত বলেন, “নীতিগতভাবে এই ভাতা দেওয়ার বিষয়ে কোনো বিরোধ নেই। তবে আগে কর্মরতদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।”  অনুষ্ঠানে আরো অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের এমপি রেবেকা মমিন ও মতিউর রহমান।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর একেএম মুসা, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব মোস্তফা জব্বার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার আরো বলেন, “২৫ বছর বয়সে গণপরিষদের সদস্য হয়েছি। তখন থেকে হাওর এলাকার জন্য কাজ করছি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। সাবমার্জ রোড নিয়ে শুরু থেকেই চেষ্টা করছি, কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।”  তিনি বলেন, “হাওর এলাকার উন্নয়নে একটি হাওর ও জলাশয় বোর্ড রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এর প্রধান। ঢাকায় এর অফিস রয়েছে। কিন্তু হাওরের উন্নয়নে বোর্ড কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারছে তা ভাবতে হবে।”  হাওর উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, “কাগজে-কলমে মহাপরিকল্পনাটি সুন্দর। কিন্তু এটি কখন কবে কিভাবে কোন অর্থের উৎসে বাস্তবায়িত হবে তা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে এটি একটি কাগুজে দলিলে পরিণত হবে।”

সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন বলেন, “হাওর এলাকার খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার উন্নয়ন আগে করতে হবে। হাওর এলাকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা হাওর এলাকা নিয়ে কিছুই জানেন না। মন্ত্রীদের নিয়মিত ওই এলাকায় যাওয়া উচিত।”  সংসদ সদস্য মতিউর রহমান বলেন, “হাওর নিয়ে সরকারের নীতিমালা প্রশাসন সঠিকভাবে পালন করছে না। সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে হাওর এলাকার উন্নয়ন হবে। হাওর এলাকার মহা-পরিকল্পনার কথা মুখে বললে হবে না, বাস্তবায়ন করতে হবে।”

সুত্রঃ বাংলা নিউজ ২৪