পলাশ ফুলের নাম জানেনা এমন লোক যেমন খুব কম আছে, তেমনি ঢাকাতে বাসিদের মাঝেও খুব কম লোক আছেন যারা পলাশ ফুল চেনেন বা দেখেছেন। আপনিকি জানেন পলাশের আরেক নাম “কিংশুক”। ইংরেজী নাম Flame of the Forest, আর বৈজ্ঞানিক নামঃ Butea monosperma বুটিয়া মনোস্পার্মা।

চমৎকার এই ফুলটি সম্পর্কে উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মা তার “ফুলগুলি যেন কথা” বইতে লিখেছেন- “মাঝারি আকারের পত্রমোচী দেশী গাছ। তিনটি পত্রিকা নিয়ে যৌগিক পত্র। ফুল ফোটে বসন্তে। ফুল ৭.৫-১০ সে. মি. শিম ফুলের মত, গাঢ় কমলা, লম্বা মঞ্জুরীতে ঘনবদ্ধ থাকে। সারাগাছ ফুলেফুলে ভরে ওঠে। বীজ থেকে সহজেই চারা জন্মায়। বাড়েও দ্রুত।”

মূলত বসন্তের শেষে গাছগুলি যখন তাদের পাতা হারিয়ে দৃষ্টিকটুতায় আক্রান্ত হয়, তখনই প্রকৃতি তার আপন লীলায় মত্ত হয়ে দৃষ্টিকটু গাছে উজ্জ্বল লাল বা গাড় কমলা রংএর এই পলাশ ফুটিয়ে পলাশ গাছের আদর বাড়িয়ে দেয়। পাতাহীন গাছের প্রায় লেংটো ডালের যত্রতত্র ফুটতে দেখা যায় পলাশকে। তাইতো রবীন্দ্রনাথ পলাশকে দেখে লিখেছিলেন “রাঙ্গা হাসি রাশি-রাশি। আরো শুনতে পাই “পলাশ ফুটেছে, শিমুল ফুটেছে; এসেছে ফাগুন মাস…”।

পলাশের বিচি থেকে দেশীয় ভেজ্যষ ঔষধ তৈরি কারা হয়। একসময় পলাশ গাছের শিকড় দিয়ে মজবুত দড়ি তৈরি করা হতো। সেই সাথে পলাশের পাতা দিয়ে তৈরি হতো থালা। আজও কলকাতা সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই পলাশ পাতার ছোট্ট বাটিতে ফুচকা বা পানিপুরি বিক্রি করা হয়। পলাশের আরো কিছু প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়, যেমনঃ Butea frondosa, Erythrina monosperma, Plaso monosperma

এরকমই আরেক প্রকার পলাশ যার বাংলা নাম “রুদ্রপলাশ”। এটা আমাদের পরিচিত পলাশ ফুল থেকে একটু ভিন্ন।

সূত্রঃ দ্বিজেন শর্মার “ফুলগুলি যেন কথা”