কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরকে প্রশাসনিক জেলায় উন্নীত করার দাবিতে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বাজিতপুর জেলা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে বিভিন্ন স্তরের কয়েক শ জনতা অংশ নেয়। শেষে আলোছায়া মোড়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাজিতপুরকে জেলা করার শত বর্ষের দাবি অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক। জেলা বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত বাজিতপুরবাসী নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবে’। জেলা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ নূরুন্নবী বাদলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ছালেহুজ্জামান খান রুনু, আবদুল্লাহ বোরহান কুফিয়া পিনু মিয়া, অধ্যাপক ইন্দ্রজিত দাস, মোবারক হোসেন, শৈলেশ্বর দাস, আনোয়ারুল হক, সানোয়ার আলী শাহ সেলিম, দীন ইসলাম, অধ্যাপক তফাজ্জল হোসেন বাদল, রকিব পারভেজ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ১৮২৩ সালে ব্রিটিশ সরকার ‘বাজিতপুর’ ও ‘হয়বতনগর’ নামে দুটি থানা প্রতিষ্ঠা করে। পরে হয়বতনগরকে কিশোরগঞ্জ ও বাজিতপুরকে ভেঙে কয়েকটি থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৮৬৭ সালে বাজিতপুরে গঠিত হয় দেওয়ানি আদালত। বাজিতপুরে সেই থেকে ভৈরবসহ পাঁচ থানার সহকারী জজ আদালত কার্যকর রয়েছে। ১৮৬৯ সালে বাজিতপুর পৌরসভায় উন্নীত হয়। ১৯১২ সালে তৎকালীন সরকার কিশোরগঞ্জ মহকুমাকে ভাগ করে বাজিতপুরকে পৃথক মহকুমা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বছরই বাজিতপুরে প্রায় ২২৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে প্রশাসনিক ভবনসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ ও মাটি ভরাট করা হয়।

সুলতানি আমলেই মসলিনের জন্য বিশ্বব্যাপী বাজিতপুরের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৭৭৮ সালে প্রকাশিত ব্রিটিশ মেজর জেমস র‌্যানেল প্রণীত মানচিত্রে বাজিতপুরকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাজিতপুরকে মহকুমা করতে ১৯২২, ১৯৫২ ও ১৯৭৭ সালে ব্রিটিশ ও বাংলাদেশ সরকার তিনটি পৃথক কমিশন গঠন করে। তিন কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনেই এ অঞ্চলের মধ্যবর্তী থানা বাজিতপুরে মহকুমা স্থাপনের প্রস্তাব করে। ভৈরব, কুলিয়ারচর ও বাজিতপুরের এএসপি কার্যালয়ও বাজিতপুরে। দেশের খ্যাতনামা জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল বাজিতপুরেই অবস্থিত। কোনো সরকারই এসবের গুরুত্ব বিবেচনা না করে বাজিতপুরকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রেখেছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।

– নাসরুল আনোয়ার