বুলবুলি বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন বুলবুল, গুয়া লাল আর ইংরেজীতে Bulbul। বাংলাদেশে পিকনোটিডি পরিবারের বুলবুল পাখি আছে ৯ প্রজাতির। ৪ ধরন বুলবুলি খুব দেখা যায়।

১.হলদে বুলবুল  ২.সিপাহী বুলবুল  ৩.কালো বুলবুল   ৪.বাংলা বুলবুল

কালো বুলবুলঃ

কালো বুলবুলদের ঝুটি ও ডানা কালো ও তার শেষের কয়েকটা পালকের আগা সাদা। লেজের তলাটা লাল সুন্দর। এরা উচু গাছের উপরে বাসা বাধে না, বাসাগুলো দেখতে পেয়ালার মতন যা তৈরী করে খড়-কুটো দিয়ে আর তাতে গোলাপীর উপর লালের দাগ দেয়া কয়েকটি ডিম পারে। বড় লেজ নিয়ে বাসায় বসার জায়গা হয় না তাই লেজ উচু করে ডিমে তা দেয়। নিচু ঝোপে বাসা থাকে বলে বেজি, সাপ, গিরগিটি প্রায়ই এদের ডিমগুলোকে নষ্ট করে দেয়। এরা প্রতি বছর ৩-৪টি ডিম দেয়।এরা লেজসহ লম্বায় ২৪-২৫ সেমি হয়। এর ইংরেজী নাম Black Bulbul আর বৈজ্ঞানিক নাম।
লদে বুলবুলঃ
বাংলাদেশে এদেরকে খুব কম দেখা যায়। এদের গায়ের রঙ হলুদ, মাথা কালো। মাথায় লম্বা কালো ঝুঁটি আছে। বিভিন্ন ফল, কীটপতঙ্গ এদের প্রিয় খাবার। বসন্তকালে গাছের ঝোপালো ডালে এরা কাঠি দিয়ে বাসা বানায়। ২-৪টি ডিম পাড়ে। এরা ঝাঁকে থাকে। খুব কম মাটিতে নামে।এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Black Headed Yellow Bulbul আর বৈজ্ঞানিক নাম Pycnonorus melanicterus।
সিপাহী বুলবুলঃ
সাধারণ বুলবুলের আকার। আরেক রকমের প্রজাতির বুলবুল এই সিপাহী বুলবুল। এদের চোখের রঙ লাল, গালের রঙ সাদা ও মাথায় লম্বা কালো ঝুঁটি আছে। স্বভাব এদের বুলবুলির মত। কণ্ঠ প্রায় একইরকম, তবে একটু সরু। বাংলাদেশের সর্বত্র এদের দেখা যায়।পতঙ্গভুক, উঁচু গাছের ডালে ছোট্ট বাসা বানায়।এরা লম্বায় ২০ সেমি বা ৭ ইঞ্চি।এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Red Whiskered Bulbul আর বৈজ্ঞানিক নাম Pycnonotus jocosus।
বাংলা বুলবুলঃ
বাংলা বুলবুলির শান্ত মেজাজটা শুধু চোখে পড়লেও এদের লড়াকু স্বভাবেরও ঐতিহ্য আছে। একসময় এরা রাজা বাদশা ও বাবুদের পোষা পাখি ছিল সে।একসময় বছরের বিভিন্ন সময় তাদের ট্রেনিং দেওয়া হত প্রতিযোগিতার জন্য। কলকাতার বাবুদের ঘুড়ি উড়ানো আর বুলবুলি লড়ায় খুবই উপভোগের একটা বিষয় ছিল আগের দিনে। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে বহু লোকের সমাগমে বুলবুলির লড়াই হতো। যার বুলবুলি লড়াই-এ জিতলে সে পেতো মোটা অংকের পুরষ্কার। মোঘল আমলে এই প্রচলনটা বেশ ছিল। বাংলা বুলবুল আমাদের দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। প্রাণবন্ত স্বভাবের এ পাখিটির ঠোঁট, মাথা, চূঁড়া ও গলা কালো। পেট সাদা ও নিতম্ব ছাড়া দেহের বাকী অংশ হালকা খয়েরি। লেজের গোড়ার উপরের অংশ সাদা এবং নিচের অংশ লাল। লেজটা পাখির তুলনায় লম্বায় বলা যাবে। লেজের রং কালো। এপ্রিল-আগষ্ট মাসে এরা চিকন ঘাস দিয়ে বাটির মতন বাসা বানায়। ২-৪টি ডিম দেয়। সংসার পরিচালনায় স্বামী-স্ত্রীর সমান দরদ।এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Bangla Bulbul বা Bengal Bulbul