আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষতাকে সঙ্গী করে অনেকটাই এগিয়েছি যাচ্ছি। কিন্তু মাঝে মাঝে সংঘটিত অনাকাঙ্খিত কিছু কর্মকান্ডে বেশ মর্মাহত হতে হয়। মনে হয় দেশ ও সমাজের চিন্তা আমাদের মস্তিস্কে অনুপস্থিত।মানবকিতার আর্তনাদ আমাদের ব্যথিত করে না।সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাস সত্যার্থী বলেছেন, ‘স্বপ্ন দেখতে হবে বড়, নিজের জন্য নয়, সবার জন্য’।কথাটি আমাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট ও অনুপ্রাণিত করেছে। আমার বিশ্বাস, আমরা যদি অন্ততঃ এই কথাটি আমাদের হৃদয়ে ধারণ করে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে ব্যক্তি তথা সামষ্টিক উন্নয়ন সম্ভব।অনেকেই জীবনের প্রতিকূল অবস্থায় জীবনকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতেই অভ্যস্ত।

অনেকে এতটাই হতাশ হয়ে পড়েন, ফলে নিজের সৃজনশীল সক্ষমতার কথাও ভুলে যান। ভুলে যান নিজেকে অনুপ্রাণিত করে এগিয়ে যাবার ক্ষুদ্র কৌশলটুকুও। কিন্তু আমাদের সবার মাঝেই কিছু না কিছু প্রতিভা আছে, সেগুলোর অর্থপূর্ণ প্রায়োগিক উপস্থাপন করতে পারলেই কিন্তু সফলতার দিশা খুঁজে পাওয়া সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র দক্ষতার বিকাশ ও ইতিবাচক মানসিকতার অভাবে স্বপ্ন পূরণের আশার চেয়ে হতাশাই বেশি ভর করে আমাদের। আমরা ভাবি কাউকে সহযোগিতা করলেই বুঁঝি নিজের প্রতিদ্বন্ধী বাড়লো, কিন্তু না! অন্যের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমেও নিজের সুযোগ আরো বেশি বিকশিত হয়। জীবনে প্রতিকূলতার উত্তরণে ও জীবন দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে মানুষের জন্য উপকার ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততা অনেক বেশি ভূমিকা রাখে।

জীবনের প্রতিকূলতায় আমরা যারা নিজেদের জীবনে এগিয়ে যেতে ভয় পাই। যারা নিজেকে এখনো তুলে ধরতে পারিনি বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায়। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, পৃথিবীর এই বিশাল ভূখন্ডে যারা সফল ও প্রতিষ্ঠিত, তাদের অধিকাংশই শুধু নিজেদের সাফল্য নিয়ে তৃপ্ত বা ব্যস্ত নন। তারা সারথী হতে হতে চান অন্যের সম্ভবনাময় জীবনে। এ নোবেল বিজয়ীর সাথে একাত্মতা পোষন করে বলতে চাই, ‘স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজের জন্য নয়, সবার জন্য’। আর এর মাধ্যমেই বিকশিত হবে ব্যক্তির উন্নয়ন।এর জন্য প্রয়োজন ভয় কে জয় করা।তাই কবির ভাষায় বলতে চাই- “মুক্ত করো ভয়, আপন মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়”।