হবিগঞ্জে টেম্পোতে যাত্রী ওঠানো নিয়ে গতকাল শনিবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিললুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা ও দুই শতাধিক গ্রামবাসী আহত হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ৩৫ জনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সাতজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষ চলাকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ ও চুনারুঘাট থানার কয়েক প্লাটুন পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই সময় উত্তেজিত জনতা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। তারা হলো দুলাল মিয়া, আহাদ মিয়া, সামছু মিয়া ও শাহ আলম।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিশাপট গ্রামের জলফু মিয়া দুই দিন আগে সুতাং বাজার থেকে টেম্পোযোগে শায়েস্তাগঞ্জ আসেন। ভাড়া নিয়ে টেম্পোর মালিক ইসমাইলের সঙ্গে তাঁর বাগিবতণ্ডা হয়। এ নিয়ে নিশাপট ও তালুগড়াই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

গতকাল সালিস বৈঠক ডাকা হলেও একটি পক্ষ সালিস মানেনি। গতকাল আবার দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের নিশাপট গ্রামের সঙ্গে যোগ দেয় জাকিজাঙ্গাল, মড়রা, কাজীরগাঁও ও করকরহাটি গ্রামসহ সাতটি গ্রামের বাসিন্দারা। অপর পক্ষে ছিল শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার তালুগড়াই, জগন্নাথপুর, বিরামচর, দক্ষিণ বড়চর, নিজগাঁও, শ্যামপুর, কদমতলী, চরনুরসহ আট গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা। সংঘর্ষে উভয় পক্ষ বল্লম, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। এ সময় শায়েস্তাগঞ্জ বাজারে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে প্রথমে শায়েস্তাগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলী মিয়া হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা ও চুনারুঘাট থানা থেকে আরও পুলিশ পাঠান। পাশাপাশি হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক ও ভাইস চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেন। পুলিশ এ সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে রাবার বুলেট, শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সংঘর্ষে দুই শতাধিক গ্রামবাসী আহত হয়।