শিউলির আরেক নাম পারিজাত। কৃষ্ণের দুই স্ত্রী-সত্যভামা ও রুক্মিণীর খুব ইচ্ছে তাদের বাগানও পারিজাতের ঘ্রাণে আমোদিত হোক। কিন্তু পারিজাত তো স্বর্গের শোভা! কৃষ্ণ স্ত্রীদের খুশি করতে চান। তাই লুকিয়ে স্বর্গের পারিজাত বৃক্ষ থেকে একটি ডাল ভেঙ্গে এনে সত্যভামার বাগানে রোপণ করেন, যার ফুল রুক্মিণীর বাগানেও ঝরে পড়ে সুগন্ধ ছড়ায়।

এদিকে স্বর্গের রাজা ইন্দ্র তো ঘটনাটা জেনে খুব রেগে যান! তিনি বিষ্ণু অবতারের উপর গোপনে ক্রুদ্ধ ছিলেন। এই অছিলায় তিনি কৃষ্ণকে শাপ দেন কৃষ্ণের বাগানের পারিজাত বৃক্ষ ফুল দেবে ঠিকই কিন্তু ফল কোনদিনও আসবেনা, তার বীজে কখনও নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে না।

 আরেকটি গল্পও আছে, এই ভেষজ বৃক্ষের! পারিজাতিকা নামে এক রাজকন্যা সূর্যের প্রেমে পড়ে তাকে কামনা করেন। কিন্তু শত চেষ্টা করেও সূর্যকে না পেয়ে  তিনি আত্মহত্যা করেন। তার দেহের ভস্ম পারিজাতবৃক্ষ রূপে ফুটে ওঠে। যে কিনা নিরব ব্যর্থ প্রেমের প্রতীক! সূর্যের স্পর্ষ মাত্র যে ঝরে পড়ে আশ্রুবিন্দুর মত।

পৃথিবীর বুকে তুমি তার দুঃখের চিহ্ন দেখবে শত শত অশ্রুবিন্দুর মত সে সুগন্ধি ছড়িয়ে থাকে চারদিকে, আমরা এখন তাকে শিউলি রূপে দেখি তার শুভ্র দেহে গৈরিক বসনে…হিন্দু দেবতার পুজোয় শিউলিই এমন ফুল যেটি মাটিতে ঝড়ে পড়লেও তাকে দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়ে থাকে।