ঈসা খাঁ মসনদে আলা, মানসিংহের জঙ্গলবাড়ি এবং বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামায়াত শোলাকিয়া ঈদগাহ্ আর ছোট-বড় অসংখ্য হাওড়-বাওরের জেলা কিশোরগঞ্জ। কিশোরগঞ্জ অঞ্চলটি আঠার শতকের শেষ প্রান্তেও কাটাখালী নামে সমাধিক পরিচিত ছিল। জেমস টেলরের বর্ণনায় এলাকাটিকে জঙ্গলবাড়ি হিসেবেই উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে ধারণা করা হয়, উনিশ শতকের প্রথম ভাগেই কিশোরগঞ্জ-এর নামকরণ হয়েছে। কিন্তু এ নামকরণের উৎস সর্স্পকে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। তবে বিজ্ঞজনদের ধারণা ও জনশ্রুতি থেকে অনুমান করা যায় যে, বর্তমান বত্রিশ প্রামাণিক পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণদাস প্রামাণিকের ষষ্ঠ ছেলে এবং প্রামাণিকদের কীর্তি একুশ রত্নের স্রষ্টা নন্দকিশোর-এর ‘কিশোর’ ও তারই প্রতিষ্ঠিত হাট বা গঞ্জের ‘গঞ্জ’ যোগ হয়ে কিশোরগঞ্জ নামকরণ হয়েছে। প্রামাণিকদের যে প্রভাব ও প্রতিপত্তি ছিল সে হিসেবে কাটাখালী নাম পরিবর্তন করে এলাকার নাম ‘কিশোরগঞ্জ’ করা বিচিত্র নয়। জেলা গেজেটিয়ারে অবশ্য বলা হয়েছে যে, কৃষ্ণদাসের সাত ছেলের একজন ব্রজকিশোর এবং তার নামানুসারে ‘কিশোরগঞ্জ’ নামকরণ হয়েছে। এছাড়া মুক্তাগাছার জমিদারদের নামের সাথে ‘কিশোর’ যোগ হতে দেখা যায়। সে থেকেও কিশোরগঞ্জ নামকরণের কথা কেউ কেউ বলে থাকেন। তবে এ যুক্তিটি সম্ভবত সঠিক নয়, কারণ এ অঞ্চলটি কখনোই তাঁদের জমিদারির অন্তর্ভূক্ত ছিল না।