মাদারীপুরের হাজি খাদেম হোসেন শিকদার পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত বয়স্ক মানুষ! গতকাল তিনি ১৫০ বছর ৫ মাস ২৭ দিন বয়সে পা রাখলেন। সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুর শিকদারকান্দি গ্রামের খাদেম শিকদার এখনো বেঁচে আছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ১৫০ বছর ৫ মাস ২৭ দিন। পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত বয়স্ক মানুষ হিসেবে গিনেজ বুকে নাম লিখিয়ে পৃথিবী ছাড়তে চান এই প্রবীণ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১৯ আগস্ট ভারতের হাবিব মিয়া ১৩৮ বছর বয়সে পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হিসেবে মৃত্যুবরণ করেন। সে খবর বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় ২০০৮ সালের ২০ আগস্ট প্রকাশিত হয়। পৃথিবী জানত, হাবিব মিয়াই ওই সময়ের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত মানুষ। প্রকৃতপক্ষে দেখা গেছে, হাজি খাদেম হোসেন শিকদার দেড়শ বছর পেরিয়ে এখনো বেঁচে আছেন। হাজি খাদেম হোসেন শিকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার সমবয়সী এখন আর কেউ পৃথিবীতে বেঁচে নেই। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, ৩০০ বার কোরআন শরিফ খতমের পর যেন তিনি আমাকে পৃথিবী থেকে নিয়ে যান। আমার মনে হচ্ছে, আমার ৩০০ বার কোরআন খতম হয়নি। তাই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়াও আমার পাঁচজন পীর ও জিন আছে তাদের জন্য আমি এখনো বেঁচে আছি। আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বুড়া কিনা তা জানি না, তবে আমার বয়সী কেউ দুনিয়াতে বেঁচে নেই, এটা আমার বিশ্বাস।’
কথা প্রসঙ্গে তিনি ব্রিটিশ ও জাপান যুদ্ধের কথা বলেন। তার চোখের সামনে সবই ভাসছে। পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, গুরুদাস সাহা জমিদার বাড়িতে একটা স্কুল ছিল, সেখানে পড়ালেখা করেছেন। কোরআন শিখেছেন নিজ বাড়িতে হুজুরের কাছে।
খাদেম শিকদারের ৬ষ্ঠ ছেলে মোস্তফা শিকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বাবার বয়সী মানুষ এখন আর পৃথিবীতে কেউ নেই। সুদীর্ঘ জীবনে বাবা দুটি বিয়ে করেন। আমরা মোট সাত ভাই, চার বোন। সে হিসেবে বর্তমানে বাবার নাতি-নাতনির সংখ্যা হচ্ছে ৪৫ জন। নাতি-নাতনির ঘরে পুতির সংখ্যা ৩৫ জন। বাবা এখনো খালি চোখে কোরআন শরিফ পড়তে পারেন। তিনি আরো বলেন, ভারতের হাবিব মিয়া যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবিত মানুষ ছিলেন এটা ভুল ধারণা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবিত মানুষ হিসেবে আমার বাবার নাম এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় বাবার নাম উঠে আসা উচিত। আর সেটা হবে বাংলাদেশের জন্য একটা গর্বের বিষয়। সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আমার বাবার নাম গিনেজ বুকে লেখানো সম্ভব।’ জেলা নির্বাচন অফিসার মোহম্মদ আলাউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘খোয়াজপুর এলাকার খাদেম শিকদারের জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সঠিক। তার জন্ম তারিখ অনুযায়ী বর্তমানে তার বয়স ১৫০ বছর ৫ মাস ২৭ দিন।’