আমাকে আজকাল খুঁজে পাবেনা-পাবে কি করে? তোমরাতো সব হাওর বিল, সরোবরের পানি সেচ দিয়ে প্রায় শুকিয়ে ফেলেছ। আমি তো আবার জলচর কিনা। আমাকে তোমরা পদ্ম বা কমল নামে চেনো। আমি সাধারণত দুই রঙ্গের হয়ে থাকি। যেমন-গোলাপি ও সাদা।রুপকথায় যদিও নীল কমলের নাম উল্লেখ আছে আসলে আমার নীল রঙ্গের কোন ফুল নেই। বড় জাতের নীল শাপলাকেই ভুল করে নীল কমল বলে থাকে।আমার অনেক সমলঙ্কৃত নাম আছে।
যেমন-অম্বজ, নলিন, অরবিন্দ, রাজীব, পুন্ড্রীক, হরিনেত্র, শম্ভুবল্লভ, কোকনদ, অরুণ, কমল, রত্তোৎপল, পংকজ ও রবিপ্রিয়। রবিপ্রিয় কারণ আমি দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় ফুটে থাকি। সে জন্য আমার পাতা ডাঁটী কর্কশ। আর শাপলা ফোটে রাতের বেলায়। সেজন্য আমার নাম শশীকান্ত ও ইন্দুকমল। আর সব কিছুই বেশু কোমল।তবে আমার ফুল যুগ-যুগান্ত ধরে কবি সাহিত্যিকদের কে প্রেরণা যুগিয়েছে। আমার ফুল খুব উপকারী-অতিসারে যকৃৎ ও হৃদযন্ত্রের পীড়াতে ফলদায়ক।আর বীজ চর্মরোগ ও কুষ্ঠরোগে হিতকর।
আর সেই সঙ্গে বিষক্রিয়ার প্রতিষেধক।আমার ঔষধীগুনের কথা চীন ও ভারতের ভেষজ পন্ডিতগন তিন হাজার বছর আগেই জানতেন।আমার ফুলের নির্যাস থেকে তৈরী পদ্ম মধু চোখের ছানির এক মহৌষধ। আমার ফুলের ভেতর আছে বেশ কয়েক রকমের এলক্যালয়েডস। যেমন-নিলুমবিন,নুফারিন। আমি আর শাপলা একই পরিবারভূক্ত,তবে দুই গুণে বিভক্ত।শুনে হয়তো অবাক হবে আমার বীজ দুই হাজার বছর পর্যন্ত জীবন্ত থাকতে পারে।
-ডঃ নওয়াজেশ আহমদ
You must log in to post a comment.