কৃষকের জন্য নতুন সুসংবাদ নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা। ধানের পাঁচটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করে তা কৃষকের হাতে পৌঁছে দিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে একটি হাইব্রিড, অন্য চারটি উচ্চফলনশীল জাত।কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি এ জাতগুলোর অনুমোদন দিয়েছে। চলতি বছর থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে এ জাতের ধানবীজ কৃষকের কাছে বিক্রি শুরু হচ্ছে।
ব্রির মহাপরিচালক সাইদুর রহমান গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, নতুন উদ্ভাবিত ধানের সবগুলোই প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু। আশা করা যাচ্ছে, এগুলো কৃষক গ্রহণ করবেন এবং সামগ্রিকভাবে ধানের উত্পাদন ৩০ লাখ টন বাড়বে।
উদ্ভাবিত পাঁচটি জাতের একটি ব্রি ধান-৫৮। এ জাতটি ব্রি ধান-২৯-এর মতোই বেশি উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। বোরো মৌসুমে চাষ উপযোগী এ জাতের ধানটি ব্রি ধান-২৯-এর চেয়ে সাত দিন আগেই অর্থাৎ১৫৫ দিনে কাটা যায়। ফলনও প্রতি হেক্টরে সাত থেকে সাড়ে সাত টন।আরেকটি নাম ব্রি ধান-৫৭। ফলন অবশ্য অন্যান্য জাতের চেয়ে কম, হেক্টরপ্রতি চার টন। রোপা আমন মৌসুমে চাষ করা যাবে এবং খরা শুরুর আগেই কৃষক এ ধান কেটে গোলায় ভরতে পারবেন।
ব্রির উদ্ভাবিত আরেকটি জাতের নাম ব্রি ধান-৫৬। এটি প্রতি হেক্টরে সাড়ে চার টন ফলন দেবে। পাকবে ১১০ দিনে।আউশ ও বোরো দুই মৌসুমে চাষ করা যাবে—এমন আরেকটি জাত নিয়ে এসেছেন ব্রির বিজ্ঞানীরা। ব্রি ধান-৫৫ নামের এ জাতটি আউশ মৌসুমে ১০৫ দিনে পেকে ফলন দেবে প্রতি হেক্টরে সাড়ে চার থেকে সাড়ে পাঁচ টন। আর বোরোতে ১৪৫ দিনে পেকে প্রতি হেক্টরে ফলন দেবে ছয় থেকে সাড়ে সাত টন।
দেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত তিনটি হাইব্রিড ধানের সঙ্গে আরেকটি জাত যুক্ত হলো। ব্রি হাইব্রিড-৪ নামের এ জাতটি ১১৮ দিনে কাটার উপযোগী হবে। ফলন দেবে প্রতি হেক্টরে সাড়ে ছয় টন। তবে এ হাইব্রিড জাতটির চাল অন্য হাইব্রিডগুলোর তুলনায় কিছুটা চিকন ও সাদা রঙের হবে। এটি রোপা আমন মৌসুমে চাষ করা যাবে।
ব্রি এ পর্যন্ত চারটি হাইব্রিডসহ মোট ৬১টি উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। এসব ধান সনাতন ধানের জাতের তুলনায় দু-তিনগুণ বেশি ফলন দেয়। বর্তমানে দেশের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষাবাদ করা হয়।
-prothom alo