আমি মধু বাবুর মত ভাগ্যবান নই,
তিনি কপোতাক্ষের বহতা রূপ দেখেছেন,
শুনে মুগ্ধ হয়েছেন এর কলকল ধ্বনি,
স্নেহের তৃষ্ণা মিটিয়েছেন কপোতাক্ষের জলে।

কিন্তু নরসুন্দা, তোমার উছলে পড়া যৌবন
কখনো আমি দেখিনি,
শুনিনি কখনো তোমার ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ,
তোমার বুকে কখনো চলতে দেখিনি
পাট, ধান কিংবা যাত্রীবাহী জলবাহন।

ধনু তোমায় ডাকে,
ঘরভাঙা তোমায় ডাকে,
গোপী-বর্ণী তোমায় ডাকে,
কিন্তু চৌ-গঙ্গা, সে তো ম্যালা দূর।

বাদলা থেকে কাওনা,
উত্তর থেকে দক্ষিণ,
দক্ষিণ থেকে দক্ষিন-পশ্চিম,
তুমি নিম্নমুখী,
তুমি বহমান,
তুমি খরস্রোতা,
তোমার হুংকার,
চারিদিকে শুধু তোমার জয়জয়কার।

তিরিশ মাইল জুড়ে তোমার সভ্য লোকালয়,
শহর-গঞ্জ-বিদ্যালয়-মসজিদ-মন্দির,
তুমি ছুটে চলেছ বায়ান্ন থেকে একাত্তর,
তুমি লালন করেছ নেতা-শিক্ষক-কবি-কুলি-মজুর,
কিন্তু কেউ তোমার দিকে ফিরে তাকায়নি,
ধর্ষণ করে চলেছে অনবরত,
হায়রে খরস্রোতা,
তুমি নিজেই হারিয়ে গেছো নিজের স্রোতে,
ভরসা তোমার ব্রহ্মপুত্র আর তার উপহাস।

আজ তোমার বুকে ধানক্ষেত, কচুরিপানা, ভাগাড়,
আর উপচে পড়া মনুষ্য-স্রোতের রিয়েল এস্টেট,
দোকান-পাট, পতিতালয়।

গৌরাঙ্গবাজার-আখড়াবাজার-গুরুদয়াল কলেজ-পাগলা মসজিদ,
আমি শুধু তোমার আর্তনাদ শুনি,
আমি শুধু তোমার বেঁচে উঠার করুণ আকুতি দেখি।

০৮/০৩/২০১২