ঢাকার রাস্তায় বা ফুটপাতে ভ্যানে করে নানা দেশীয় ফল বিক্রি হয়। কিছুদিন আগে পুরান ঢাকায় এমন একটি ভ্যানে হঠাৎ দেখা মিলল বেশ কিছু জংলি বাদামের। বছর পাঁচেক আগে এ ফলের দেখা পেয়েছিলাম বরিশাল শহরে।
জংলি বাদামের আদি আবাস নিরক্ষীয় আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এটি আমাদেরও অন্যতম পালিত তরু। দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের জেলা বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালীতে বেশ কিছু জংলি বাদামগাছের (Sterculia foetida) সন্ধান পেয়েছি। ঢাকায় জংলি বাদাম দুষ্প্র্রাপ্য। জেনেছি, তেজগাঁও ও আজিমপুরে দুটি গাছ ছিল। ধানমন্ডি লেকের কাছে একটি গাছ আছে বলে জানিয়েছেন প্রকৃতিলেখক মোকারম হোসেন।
এর বৃক্ষ বিরাট, পত্রমোচী লম্বা। প্রায় ৪০ মিটার লম্বা। গড়ন শিমুলের কাছাকাছি। পাতার গড়ন, শাখার বিন্যাস শিমুলের মতোই। ফুল না দেখলে অনেকেই ভুল করবেন গাছটি চিনতে। পাতা করতলাকার-যৌগিক, কিন্তু শিমুল অপেক্ষা বড়। শাখাবিন্যাস ভূসমান্তরাল থাকে। ছায়ানিবিড়।
বসন্তের শুরুতেই জংলি বাদামগাছের শাখায় ফুল আসে। ফুলের পাপড়ি নেই। বৃন্তের বর্ণবৈচিত্র্য আকর্ষণীয়, লাল-হলুদ ও বেগুনিতে মেশানো। ফল গুচ্ছবদ্ধ। একগুচ্ছে ৫ থেকে ২০টি ফলও দেখা যায়। আকারে কিছুটা নৌকাকৃতি। আবরণ কঠিন ও শক্ত। কাঁচা ফল সবুজ। পাকলে রক্তিম বলে দেখতে আকর্ষণীয়। ভাজা বীজ চিনাবাদামের স্বাদতুল্য। কাঁচা বীজ বমনোদ্রেককারী। বাকল থেকে দড়ির আঁশ মেলে। বীজ থেকে তেলও হয়। প্রতিটি বাদামের ভেতরে ১০ থেকে ১৫টি বীজ থাকে। লম্বা ও কালো রঙের।বলিষ্ঠতা, ছায়ানিবিড়তায় জংলি বাদাম রূপসী তরুর যোগ্যতম প্রতিনিধি।
-prothom alo