সম্প্রতি বরাক নদের ওপর বাঁধ নির্মাণকল্পে মণিপুর রাজ্য সরকার ও ভারতের ন্যাশনাল পাওয়ার করপোরেশনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যেহেতু বরাক একটি আন্তর্জাতিক নদ এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত সুরমা ও কুশিয়ারা নদী দুটির প্রবাহদাতা, তাই বাংলাদেশের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব (ইতিবাচক না নেতিবাচক) নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গ এখানে একটাই, আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। প্রশ্নটি এখানে উত্থাপিত হচ্ছে ভারতের সঙ্গে আমাদের অভিন্ন বা আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানি বণ্টনের যে সমস্যা, তা অতিমাত্রায় প্রকট হয়ে উঠেছে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে। এ বাঁধ সুরমা ও কুশিয়ারার প্রাকৃতিক প্রবাহকে বিঘ্ন করবে কি-না, হাওড় অঞ্চল লুপ্ত হবে কি-না ইত্যাদি অবশ্যই আলোচনার বিষয়।

সব রাষ্ট্রই পানি উন্নয়ন নীতির দ্বারা পানিসম্পদ রক্ষা করছে; যদিও রাষ্ট্রগুলো এক্ষেত্রে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক নদীর পানিসম্পদ বণ্টন ও উন্নয়নে কতগুলো আন্তর্জাতিক আইন ও চলিত প্রবাহরীতি মেনে চলে, যাতে ভাটির দেশগুলো কোনওরূপ ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। তা সত্ত্বেও দেখা যায় আন্তর্জাতিক নদী ও জলাধারের পানি নিয়ে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের দ্বন্দ্ধের ভূরি ভূরি নিদর্শন। পানিসম্পদকে বলা হয়, ‘একবিংশ শতাব্দীর অতি আবশ্যকীয় পেট্রোলিয়াম’। বলা হয়েছে, এটি এমন এক সম্পদ, যার ওপর নির্ভর করে একটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কেন্দ্রীয় মূল্যবোধ বা অস্তিত্ব, যে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য রাষ্ট্র যুদ্ধে পর্যন্ত যেতে প্রস্তুত।
আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীর মৃতু্য মানে আমাদেরই মৃতু্য। নদী, নদী অববাহিকা, ও বিলের সঙ্গে প্রকৃতিগত সহাবস্থানই আমাদের জীবন। সেখানেই আমাদের বুকভরা আবেগ। তবে রূঢ় সত্য হলো, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বা রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবলয়ে আবেগের মান কতটুকু? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে মানুষ জয় করছে প্রকৃতিকে অনেকটা না বুঝেই। স্খলিত আদর্শ আর অমানবিক বস্তুবাদের তাড়নায় সস্তায় বিদু্যৎ উৎপাদনের জন্য নদীর ওপর তুলছে বাঁধ, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তৈরি করছে ব্যারাজ, ঘুরিয়ে দিচ্ছে নদীর গতিপথ। এখানে আবেগের কোনও স্থান নেই; স্থান নেই ব্যক্তি সম্পর্কের। কারণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আজও, জাতিসংঘের অস্তিত্ব থাকা সত্ত্বেও সত্য হলো, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গুরু মরগেনথুর তত্ত্ব: ‘ক্ষমতার রাজনীতি দিয়ে পরিচালিত হয় রাষ্ট্র-রাষ্ট্র সম্পর্কের।’ নিজের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য যা প্রয়োজন, তা-ই করা।

এ রূঢ় সত্য সামনে রেখে আমাদের বুঝতে হবে, এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শক্তি ভারত, যার সঙ্গে রয়েছে আমাদের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের সমস্যা। কাজটি সহজসাধ্য নয়। নয়াদিলি্লর অভিন্ন নদী পানি বণ্টনের সমস্যা রয়েছে এ অঞ্চলের সব কটি রাষ্ট্রের সঙ্গে, যাদের সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্ব রয়েছে। ভারত এ ব্যাপারে কোনও অববাহিকাভিত্তিক পানি উন্নয়ন ও বণ্টনে রাজি নয়। যদিও পৃথিবীর বহু আন্তর্জাতিক নদীর পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান হয়েছে অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রয়েছে মেকং নদীর পানি বণ্টনের উদাহরণ। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অভিন্ন পানি সমস্যার জন্য রয়েছে দ্বিপক্ষীয় ইন্টারন্যাশনাল জয়েন্ট কমিশন। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য দরকার দেশগুলোর নিজস্ব পানিনীতি ছাড়াও একটি আঞ্চলিক নীতি।

বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ পানিবণ্টন সমস্যা প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে টিপাইমুখ বাঁধকে ঘিরে। বাঁধটি কি এবং কেন_এ নিয়ে বাংলাদেশের এত উদ্বেগ, সে বিষয়ে বিশদ আলোচনার দরকার নেই। শুধু এটুকু বলাই যথেষ্ট যে, বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা পানি চুক্তি না হওয়ায় তিক্ত স্বাদের মধ্যে এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর তিন-তিনবার আশ্বাস দেওয়ার (ভারত এমন কিছু করবে না যা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর) পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের ন্যাশনাল পাওয়ার করপোরেশন ও মণিপুর রাজ্য সরকার ২২ অক্টোবর ২০১১ আমাদের না জানিয়ে বরাক নদের পানিপ্রবাহ নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে যে চুক্তি করল তা বাংলাদেশের জনগণের জন্য সুখকর নয়। নদী ছাড়া যার বেঁচে থাকার উপায় নেই, সেই বাংলাদেশের জেগে ওঠার এখনই সময়।

টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী একটি নিবন্ধ লিখেছেন (প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১৩, ২০১১)। ড. রিজভী বাঁধ তৈরির পক্ষে এবং এর দ্বারা আমাদের অনেক উপকার হবে_এর পক্ষে অনেক যুক্তি দেখিয়েছেন। আমাদের আবেগতাড়িত না হয়ে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিনির্ভর হয়ে বাঁধের পর্যালোচনা করতে বলেছেন। কিন্তু তিনি যে যুক্তিগুলো দাঁড় করিয়েছেন, সেগুলো কি কোনও যৌথ ও বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা থেকে সংগৃহীত? নাকি সেগুলো শুধুই ভারত সরকার প্রদত্ত তথ্য? এত কিছুর আড়ালে যে রূঢ় সত্য, তা হলো টিপাইমুখের ওপর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কোনও তথ্যই আদান-প্রদান হয়নি।
যেহেতু এ প্রকল্পের ওপর কোনও জয়েন্ট এঙ্পার্ট কমিটি গঠন করা হয়নি, তখন নিশ্চিন্তেই বলা যায়, কোনও পজিশন পেপার কমিটির সামনে স্থাপন করার কোনও প্রশ্নই উত্থাপিত হয়নি। তথ্য-উপাত্ত ছাড়া, কোনও জয়েন্ট কমিটি দ্বারা পরীক্ষিত হওয়া ছাড়া, যৌথ সমীক্ষা ছাড়া বাংলাদেশ কিভাবে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা ড. রিজভী জানাবেন কি? শুধু আশ্বাসের ভিত্তিতে কোনও রাষ্ট্র কি এমন সিদ্ধান্ত নেয়, যেটা তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে? নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাঁর মতবাদটাও ভীষণ জানতে ইচ্ছা করে। না জেনে না বুঝে এমন সিদ্ধানত্দকে আমি বলব আত্মঘাতী। জেনে-বুঝে নিজের জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই আত্মঘাতী নয়। পৃথিবীর সিংহভাগ দেশই তা করে থাকে। জানাতে চাই, ‘অন্তঃসারশূন্য গরম গরম কথাবার্তা দিয়ে উত্তেজিত’ করার পক্ষে আমরা নই। তবে একটি গণতান্ত্রিক সরকার কি তার পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা কোনও স্বচ্ছতার সঙ্গে করেছে? অথবা জনগণকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে? এ ব্যাপারে আমরা সরকারের বাস্তবভিত্তিক কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন পদক্ষেপ জানতে চাই।

আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের (সরকারি ও বিরোধী দল) এ কাজগুলো অবিলম্বে করা দরকার:

১. জয়েন্ট এঙ্পার্ট কমিটি গঠন ও যৌথভাবে টিপাইমুখের বিভিন্ন আনুষঙ্গিক প্রভাবের ওপর যৌথ সমীক্ষা চালানো। দরকার হলে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া;

২. বাংলাদেশের ওপর বাঁধে প্রভাবের বিজ্ঞানভিত্তিক রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ভারতকে বাঁধের কাজ বন্ধ রাখার জন্য দৃঢ় অনুরোধ করা। (তথ্যমতে, আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে);

৩. প্রকল্পের কাজ বন্ধ করার অনুরোধ রক্ষা না করলে ভারতকে জানিয়ে দেওয়া যে, এমতাবস্থায় বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আরবিট্রেশনে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই;

৪. বিরোধী দল এ ব্যাপারে নিজ দায়িত্ব পালনে যেন বিরত না থাকে। আমরা তাদের কাজ থেকে গঠনমূলক ভূমিকা চাই। যেমন তারা নিজেরাই এঙ্পার্ট কমিটি গঠন করে সমীক্ষা চালাতে পারে। সংসদে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য জনসাধারণের সম্মুখে তুলে ধরতে পারে। এরসঙ্গে সঙ্গে সরকারি ও রাজনৈতিক মহলের উচিত, ভারতের পানিসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার ওপর পর্যালোচনা করা।

এর পর্যালোচনা করার প্রয়োজন এ কারণে, যেন বাংলাদেশ সজাগ থাকে তার নিজের সম্পদ ও নিরাপত্তা রক্ষায়। নাহরীন খান লিখেছেন, ভারত বরাকের ওপর আরও চারটি এবং ব্রহ্মপুত্রের ওপর ১২টি ড্যাম তৈরি করবে। করার উদ্দেশ্য হলো, ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবাহকে মহানন্দা ও গঙ্গা হয়ে ভারতের পশ্চিম অঞ্চলের পানির প্রয়োজন মেটাতে (৭ জানুয়ারি, প্রথম আলো)। এ তথ্যে আমরা শঙ্কিত। আরও গভীরে এবং গবেষণায় দেখা যায়, ভারত ‘২০৫০: খাদ্য, জীবিকা ও নিরাপত্তা’ বলে যে প্ল্যান গ্রহণ করেছে, তার জন্য ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন ও কৃষি উৎপাদনের জন্য পানি অপ্রতুল। এ জন্য ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা থেকে লিংক ক্যানেলের সাহায্যে মহানন্দা হয়ে গঙ্গা অববাহিকায় পানির প্রবাহ বাড়ানো দরকার। ভারত যদিও এ প্রজেক্টের অস্তিত্ব স্বীকার করে না এবং দাবি করে যে, এটা এখনও ধারণা সংক্রান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

কিন্তু সত্য এই যে, প্রকল্পটি চ্যালেঞ্জ প্রোগ্রাম অন ওয়াটার অ্যান্ড ফুড, ২০০৯-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের কৌশলগত বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছে। প্রকল্পটি কার্যকর হলে এর সাহায্যে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার পানি সহজেই গঙ্গা অববাহিকায় স্থানান্তর করা যাবে। যদিও তা হবে বিশ্বস্বীকৃত নীতিমালা, যার দ্বারা ইন্টার-বেসিন ওয়াটার ট্রান্সফার পরিচালিত হয়, তার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন।

এ কথা পরিষ্কার যে, ভারতের সঙ্গে অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টন ও উন্নয়নের কূটনীতিতে ছোট দেশগুলো পেরে উঠছে না। ভারতও সে সুযোগ নিচ্ছে। ফারাক্কা বা তিস্তা ব্যারাজ তৈরির সময় ভারতের অসম্পূর্ণ হলেও আলোচনা কিছু কিছু রীতিমাফিকভাবেই অগ্রসর হয়েছে। যদিও যথার্থ তথ্য দেওয়ার ব্যাপারে গোপনীয়তা ও আলোচনায় অতিরিক্ত কালক্ষেপণের কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশ বা নেপালের মতো দেশগুলোকে ভারত ফ্যাক্ট অ্যাকম্পলি অবস্থায় নিয়ে গেছে এবং তখন দেশগুলোর বিদ্যমান অবস্থায় যতটুকু দর-কষাকষি হয় তা-ই করতে হয়েছে। অবশ্য ভারত শক্তিশালী দেশ হিসেবে তার জাতীয় স্বার্থরক্ষা করতে নিজের ইচ্ছায় ছোট ও দুর্বল দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দিতে চাইবেই। অতিসমপ্রতি ডেভিল লেক দিলিমার সময় ইউএসএ চেষ্টা করেছিল ডবি্লউসিকে পাশ কাটিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশ কানাডা সরকারের সফল কূটনীতি আমেরিকার উদ্দেশ্যকে বানচাল করে দেয়। দক্ষিণ এশিয়াতেও তা-ই দরকার।

কাজেই ছোট কিংবা দুর্বল দেশ হলেই পাশর্্ববর্তী শক্তিশালী দেশের কাছে নতিস্বীকার করবে, সেটা ঠিক নয়। শক্তিশালী জাতি ও রাষ্ট্র গঠন, জনকল্যাণকর নীতি, বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি আর সুদক্ষ কূটনীতির দ্বারা বহু ছোট রাষ্ট্রই পৃথিবীর ইতিহাসে আজও স্বাক্ষর রাখছে আর সফলতার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করে চলেছে। পানির নিরাপত্তা আমাদের অবশ্যই করতে হবে। এ অঞ্চলেই পাকিস্তান সফলতার সঙ্গে ভারতের সঙ্গে পানি সমস্যার সমাধান করেছে। নেপাল পারেনি, আমরা পারিনি। যেমন বহুল আলোচিত গঙ্গার পানি চুক্তিতেই অতিরিক্ত শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ তার প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে না। (কন্ট্রিবিউটিং ফ্যাক্টরস ইন দি অনগোয়িং ওয়াটার কনফ্লিক্ট বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া, টাফটস ইউনিভার্সিটি, ওয়াশিংটন, পৃ-৭)

এক্ষেত্রে আমাদের যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা হলো: ১. জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ২. পররাষ্ট্রনীতি চালনায় স্বচ্ছতা আনতে হবে ৩. চাই বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি ৪. চাই দক্ষ কূটনীতিবিদ ৫. পানিসম্পদ আর এর উন্নয়নের ওপর প্রচুর গবেষণা ৬. বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সূচনা করা। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হবে আমাদের সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি এবং প্রচণ্ড দর-কষাকষি করার ক্ষমতা। মনে রাখতে হবে, জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কোনও রাষ্ট্রই কোনও প্রকার ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়। ভালোবেসে, করুণা করেও নয়। তবে এখানে একটি কথা জরুরি, যে যার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র যদি শুধু নিজের সংকীর্ণ স্বার্থের কথাই ভাবে, তবে সেটাও তার জন্য সুখকর হবে না। স্থিতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ভারতের জাতীয় স্বার্থের জন্য প্রয়োজন। বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে ভারতের স্বার্থও জড়িত_এ কথাটা ভারতের মনে রাখলে সম্পূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য শুভসংবাদ।
সর্বশেষে আবারও বলতে চাই যে, বাংলাদেশ জেগে উঠুক। নিজের সম্পদ আর নিরাপত্তা রক্ষায় মনপ্রাণ নিবেদিত করুক, এই আমার প্রার্থনা।

তারিখ: ২৫-০১-২০১২
দিলারা চৌধুরী: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী