আমাদের ‘সুমচা’ বা ‘ভারতীয় পিট্টা’ (Indian Pitta)। ‘পিট্টা’ তেলেগু শব্দ, যার অর্থ ছোট পাখি। এরা বর্ণিল পাখি। দেহে সাদা, লাল, সবুজ, নীল, হলুদ, বাদামি ও কালো রঙের মেলা। তাই তো হিন্দিতে ‘নওরঙ’ বলে, অর্থাৎ নয়টি রঙের সমাহার। অনেকে ‘নীল পাখি’ বা ‘বন সুন্দরী’ নামেও ডাকে। বাগেরহাটের ফকিরহাটে বলে ‘সাদা হালতি’। সুমচার বৈজ্ঞানিক নাম Pitta frachyura।
এরা লম্বায় ১৮ থেকে ২১ সেন্টিমিটার। চোখের ওপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত চওড়া করে কাজল টানা। গলা সাদা। মাথা বাদামি। ঠোঁট স্লেটের মতো। চোখ কালো এবং এর চারদিকের বৃত্তটি চকলেট রঙের। বুক-পেট হলদে বাদমি। পিঠ সবুজ। ডানার পালকের কিনারা হালকা নীল। তলপেট ও লেজের তলা টুকটুকে লাল। লেজের ওপরটা নীল ও ডগা কালো। লম্বা ও মজবুত পা দুটো কাটা মাংসের মতো গোলাপি।
পুরুষ ও স্ত্রী দেখতে একই রকম। মার্চ-আগস্ট এদের প্রজননকাল।এরা পাতাঝরা ও চিরসবুজ বনের পাখি। সাধারণত ঝোপঝাড়ের নিচের ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে মাটিতে বিচরণ করতে পছন্দ করে। মাটিতে পড়ে থাকা শুকনা বা পচা পাতা উল্টিয়ে কেঁচো ও বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় খায়।
এদের গলার স্বর বেশ মিষ্টি। চিকন সুরে হুইট-টিউ-পিয়া-ট-ইউ—হুইট-টিউ স্বরে ডাকে। মাটি থেকে স্বল্প উচ্চতার কোনো ঝোপালো গাছের ডালে বা ঝোপঝাড়ের নিচে মাটিতে শুকনা লতা-পাতা-ঘাস দিয়ে গোলগাল বাসা বানায়, যা ‘হুডেড পিট্টা’ বা হালতির বাসার তুলনায় ছোট। ডিম পাড়ে চার-ছয়টি। ডিম ফোটে ১৪-১৬ দিনে। বাচ্চারা উড়তে শেখে ২০-২৫ দিনে।
সুত্রঃ আ ন ম আমিনুর রহমান