কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষকে সাত দিনের মধ্যে পদত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কলেজ পরিচালনা কমিটি। তাঁর পদত্যাগ চেয়ে গত বৃহস্পতিবার কলেজে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর গত শনিবার রাতে কমিটি এ সিদ্ধান্ত তাঁকে জানিয়ে দেয়। গতকাল রোববার কলেজে লাগানো তালা খুলে দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণে ক্লাস হয়নি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন তাঁর চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কলেজের স্নাতক (পাস কোর্স) শ্রেণী বাতিল করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিরও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।

কলেজ কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হোসেন্দী ইউনিয়নে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি পায়। ইতিমধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৪০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির আবেদনপত্রও গ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৩১ মে বর্তমান অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি দুই বছর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। কলেজে স্নাতক কোর্স চালু থাকলে অধ্যক্ষের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো যাবে না বলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে জানানো হয়।

তাঁরা অভিযোগ করেন, চাকরির মেয়াদ বাড়াতে অধ্যক্ষ স্নাতক শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করার চেষ্টা করছেন। তাঁরা অবিলম্বে অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের অফিস কক্ষ ও বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এদিকে, কলেজে তালা ঝোলানোর পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার রাতে হোসেন্দী ইউপির চেয়ারম্যান খন্দকার আশরাফুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক বৈঠক হয়। এতে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সুলতানুল আলম, অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন, কমিটির সদস্যরা এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মো. শরীফ হোসেন সাত দিনের মধ্যে পদত্যাগ করবেন এবং বিদায় নেওয়ার আগে কলেজের স্নাতক শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে যাবেন। অধ্যক্ষ এ সিদ্ধান্ত মেনে নেন। গতকাল সকালে কলেজের তালা খুলে দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী কলেজে অনুপস্থিত থাকায় ক্লাস হয়নি।

কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. সাহেদ আলী ও মো. জিয়াউর রহমান অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ নিজের স্বার্থ হাসিল করতে স্নাতক কোর্স বন্ধের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।  কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি বলেন, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মো. শরীফ হোসেন বিধি অনুযায়ী এখন আর অধ্যক্ষ পদে নেই। তবে যেহেতু নতুন অধ্যক্ষ এখনো নিয়োগ করা হয়নি, সেহেতু আরও সাত দিন তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হচ্ছে। অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। তবে সভার সিদ্ধান্ত তিনি সাত দিনের মধ্যে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন।- প্রথম আলো