setara begmমিশিগানের অগাস্টা সিটির ট্রিলিয়ন ড্রাইভে স্বামী ডা. আবিদুর রহমানসহ বসবাসরত বীর প্রতিক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) ডা. সেতারা বেগম প্রচন্ড ক্ষোভ এবং বিস্ময়ের সাথে বার্তা সংস্থা এনাকে ২৮শে  ২০১০ মার্চ একথা বলেন,

আমি মারা যাইনি এবং মুক্তিযুদ্ধে বীর প্রতিক খেতাব আমিই পেয়েছি-অন্য কেউ নয়। এ নিয়ে বিভ্রান্তির উদ্দেশ্যে কল্প-কাহিনী রচনারও কোন অবকাশ নেই। ২৮ মার্চ প্রকাশিত দৈনিক আমাদের সময়ে সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল প্রেরিত স্বাধীনতা দিবসেই অভিমানী বীরপ্রতীক সেতারার মৃত্যুদিবস! শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডা. সিতারা বেগম এনাকে আরো বলেন, যুদ্ধের সময় আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্যে যে হাসপাতাল আমরা চালু করেছিলাম, সেটির সাথে যুক্ত অনেকে এখনও জীবিত রয়েছেন। তাদের অন্যতম হচ্ছেন ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি ঐ হাসপাতালের জের ধরেই ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শফিউল্লাহসহ সকলেই জানেন যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ডাক্তার এবং নার্স ব্যতিত কোন মহিলা সৈনিক ছিলেন না। বাংলাদেশী কোন মহিলা ক্যাপ্টেন হিসেবে সেনাবাহিনীতে সে সময় ছিলেন বলে কেউ জানেন না। এতদসত্ত্বেও কোথাকার কোন সেতারা বেগমের বীরত্বের কাহিনী বিবৃত করতে গিয়ে বীর প্রতিক খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে ঐ প্রতিবেদনে। শুধু তাই নয়, যে ভদ্র মহিলাকে বীর প্রতিক খেতাব (?) প্রদান করে কল্পকাহিনী রচনা করা হলো, তিনি জীবিত নেই। এ ধরনের বানোয়াট সংবাদ তৈরী করে আমার বীরত্ব গাঁথা গৌরবকে ম্লান করা যাবে না। তবে জীবিত সেতারা বেগমকে মৃত বানানোর অপচেষ্টায় দেশ-বিদেশে আমার আত্মীয়-স্বজন এবং পরিচিতজনেরা মর্মাহত হয়েছেন। এহেন অপসাংবাদিকতা থেকে সংশি ষ্ট সকলে বিরত থাকবেন বলে আশা করছি। সেতারা বেগম পরবর্তিতে বৈবাহিক কারণে স্বামীর শেষ নাম ধারণ করায় বর্তমানে তিনি সেতারা রহমান হিসেবেই পরিচিত। তিনি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত ঢাকায় ছিলাম বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তার জন্যে। সে সময় আরটিভি এবং দেশ টিভি দুটি সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

২৬ মার্চ প্রচার হয়েছে আরটিভির সাক্ষাতকার। দেশ টিভির সাক্ষাতকারও প্রচারিত হবে শীঘ্র। ইতিপূর্বে মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্তদের খেতাব আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করা হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমার খেতাব গ্রহণ করেছেন আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবিদুর রহমান। কেননা তখন আমি ঢাকায় ছিলাম না। ঐ খেতাব বিতরণ করার সময় কথিত সেতারা বেগম জীবিত ছিলেন বলে ঐ সংবাদে উলে খ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঐ খেতাব বিতরণের অন্ততঃ ১২ বছর পর (প্রকাশিত সংবাদের তথ্য অনুযায়ী) তিনি ইন্তেকাল করেছেন। মৃত একজন সেতারা বেগমকে নিয়ে এ ধরনের আজগুবি সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছি। প্রসঙ্গত উল্যেখ যে, প্রকাশিত ঐ সংবাদের সেতারা বেগম হচ্ছেন কুমিল্লার সাদেকুর রহমানের স্ত্রী এবং পরবর্তি সময়ে ঢাকায় আব্দুল্লাহ ফারুক স্কুল, কলাবাগান লেক সার্কাস স্কুল এবং কল্যাণপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ছিলেন। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিও তার ছাত্রী ছিলেন। ডা. সিতারা বলেন, এসব তথ্য ঠিক থাকলেও এই সেতারা বেগম বীর প্রতিক খেতাব পাননি-এটা সত্য। ঐ খেতাব পেয়েছি আমি। এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। আমার বাবার নাম মোঃ ইসরাইল এবং আমাদের বাড়ির ঠিকানা হচ্ছে ইসরাইল মঞ্জিল, কিশোরগঞ্জ-যা বীর প্রতিক খেতাবে উল্যেখ রয়েছে।