হঠাৎ করেই আপনার বাসার কারো প্রচণ্ড পেটব্যথা শুরু হল। আস্তে আস্তে ব্যথা বেড়ে প্রথমে নাভির চারপাশ থেকে পরে তলপেটের একটু ডান দিকে গিয়ে স্থির হল। আপনি তাকে নিয়ে জলদি ডাক্তারের কাছে গেলেন, ডাক্তার বললেন- আপনার পেসেন্টের এপেন্ডিসাইটিস, আজকের মধ্যেই সার্জারি করতে হবে।
কী এই এপেনডিসাইটিস (Appendicitis) ?
আমাদের বৃহদন্ত্র নলের মতো ফাঁপা। বৃহদন্ত্রের তিনটি অংশের মধ্যে প্রথম অংশ হচ্ছে সিকাম। এই সিকামের সাথে ছোট একটি আঙ্গুলের মত দেখতে প্রবৃদ্ধি হল এপেনডিক্স। কোন কারণে যদি এর মধ্যে পাঁচিত খাদ্য, মল বা কৃমি ঢুকে যায়, তাহলে রক্ত ও পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। নানান জীবাণুর আক্রমণে এপেনডিক্সের ঐ অংশে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। একেই এপেনডিসাইটিস বলে।

লক্ষণ/উপসর্গ:
 পেট ব্যথাঃ প্রথমে নাভির চারপাশ থেকে পরে তলপেটের একটু ডান দিকে গিয়ে স্থির হয়। সময়ের সাথে ব্যথার পরিমাণ বাড়ে।
রোগির তলপেটে হাত দিলেই ব্যথা অনুভূত হয়, শক্ত অনুভূত হয়।
 বমিঃ বার বার বমি ভাব হয়, বমি হতে পারে।
 জ্বরঃ রোগির দেহে জ্বর আসতে পারে।
যদি এপেনডিক্স ফেটে যায় তাহলে হঠাৎ ব্যথা কমে গিয়ে ভাল লাগতে থাকবে, কিন্তু তখন ফ্লুইড পেটের ভেতরে অন্যান্য ফাঁকা স্থানে(abdominal cavity) ছড়িয়ে পড়ে অবস্থা আগের থেকে খারাপ হয়ে যাবে।
জটিলতা:
 গ্যাংগ্রিন বা পঁচন ধরা
 অন্ত্র ছিদ্র হয়ে যাওয়া
 পেরিটোনাইটিস
 শক
 এপেনডিকুলার লাম্প
 মৃত্যু
চিকিৎসা:
২৪ ঘন্টার মধ্যে সার্জারি করে এপেনডিক্স অপসারণ বা এপেনডেকটমি।

তবে যদি সার্জারির সুযোগ ওই মুহূর্তে না থাকে তাহলেঃ
1. মুখে কিছু না খাওয়া
2. রাইলস টিউব
3. সাকশন দেয়া
4. ব্যাথা নাশক ও সিডেশন দেয়া
5. এন্টিবায়োটিক দেয়া
6. বাওয়েল সচল রাখার ব্যবস্থা করা
টিকাঃ
যেহেতু সার্জারিতে এপেনডিক্স কেটে ফেলে দেয়া হয়, তাই পুনরায় এপেনডিসাইটিস হবার কোন সম্ভাবনা নেই।

ডিসক্লেইমারঃ
লেখার উদ্দেশ্য কোন প্রকার চিকিৎসা নয়, শুধুমাত্র জ্ঞানার্জন। কোন ভাবেই এই লেখাকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা। রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া যেকোন প্রেসক্রিপসন আইনত দণ্ডনীয়।