কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নে ঘন ঘন চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে অসংখ্য চুরি-ডাকাতির ঘটনায় ওই ইউনিয়নের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। পুলিশ বিষয়টিকে আমলে নিয়ে অভিযান বাড়ালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না।

এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার পিরিজপুরের বিভিন্ন গ্রামে এক রাতে চার বাড়িতে চুরি ও ডাকাতি হয়। ওই দিন ইউনিয়নের সুলতানপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মহসিন মিয়ার বাড়িতে ডাকাত দল হানা দিয়ে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়। ওই রাতে একই গ্রামের কাঞ্চন মিয়ার বাড়িতে চোর ঢুকে দুটি মুঠোফোন সেট ও কয়েক হাজার টাকা চুরি করে। গোথালিয়া গ্রামের আনিছ মিয়ার ঘরের দরজা ভেঙে একটি মোটরসাইকেল ও ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। একই গ্রামের আঙ্গুর মিয়ার ঘর থেকে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও কিছু টাকা চুরি হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে পিরিজপুর বোর্ডবাজারের একটি সাইকেলের যন্ত্রাংশের দোকানে চুরি হয়। চোরের দল ওই দোকান থেকে তিনটি সাইকেল ও টাকা নিয়ে যায়। এর আগে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পিরিজপুর বাজারের মাইওয়ান শোরুম থেকে প্রায় ছয় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী চুরি হয়। শোরুমের ডিলার শামীম রেজা বলেন, চোরের দল জানালার গ্রিল কেটে ১০০টি মুঠোফোন সেট, ডিভিডি, সিলিং ফ্যান, টেলিভিশন, ইস্ত্রি ও এক লাখ টাকা নিয়ে যায়।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পিরিজপুর বাজার, গজারিয়া ও জামতলী বাজারে একই সময়ে ১০টি দোকানে ডাকাতি হয়। ডাকাত দল পিরিজপুর বাজারের কামরুল ইসলামের মেশিনারিজ দোকান থেকে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা, আক্তার মিয়ার মুদি দোকান থেকে ৪০ হাজার টাকা এবং একটি ফার্মেসি থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। জামতলী বাজারের রতন মিয়ার মুদির দোকান থেকে ১৫ হাজার টাকা ও মুখলেছ মিয়ার দোকান থেকে ১০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। গজারিয়া বাজারের নয়ন মিয়ার মুদি দোকান থেকে ২০ হাজার টাকা, রতন মিয়ার সারের দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা, ফারুক মিয়ার মুদির দোকান থেকে ৪৫ হাজার টাকা, সোহেল মিয়ার দোকান থেকে ২৫ হাজার টাকা, কিতাব আলীর মুদির দোকান থেকে ১৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে।

পিরিজপুর বাজারের সভাপতি কবির হোসেন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে পুলিশের একটি ফাঁড়ি রয়েছে। তার পরও প্রায় প্রতি রাতে কোনো না কোনো স্থানে চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। পুলিশকে জানিয়েছি। কোনো কাজে আসছে না।’জানতে চাইলে বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ডাকাতির ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘যে কটি ঘটনা ঘটেছে, তা ছিল চুরি। আমরা চোরের সিন্ডিকেট শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’

Prothom alo