জাপানের বিশ্বখ্যাত বিলাসবহুল হিনো আরএম-টু শীতাতপ বাসের বডি এখন বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে। এতে প্রথম বছরেই সাশ্রয় হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

নাভানা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড এসি বাসের বডি তৈরি করছে। এর আগে বিলাসবহুল এ বাসের ইঞ্জিন,চেসিস,বডি সবই আমদানি করা হতো। আমদানিকৃত প্রতিটি বাসের স্থানীয় বাজারমূল্য দাঁড়াতো প্রায় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এখন বডি দেশে তৈরি করা হবে বলে বিপুল ব্যয় সাশ্রয় হবে।

আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড রাজধানীতে গড়ে তোলা তার নিজস্ব বডি ফেব্রিকেশন ওয়ার্কশপে সংযোজন করায় প্রতিটি বাসের দাম পড়বে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ  প্রতিটি বাসের বিপরীতে সাশ্রয় হবে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে যাত্রীবাহী এই বিলাসবহুল এসি বাস তৈরি করায় প্রথম বছরেই সাশ্রয় হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা। পরে  চাহিদার  সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদনমতা বাড়ানো হবে। আর এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় বেশি হবে।

অত্যাধুনিক এই এসেম্বলিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন ওয়ার্কশপটিতে প্রথম বছরে মোট ৬০টি এসি বাস সংযোজন করছে আফতাব অটোমোবাইলস।এরই মধ্যে ওয়ার্কশপটিতে দু’টি এসি বাস সংযোজনের পর বিক্রিও করা হয়েছে। দেশের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রুটে এই দুটি এসি বাস চালু করা হয়েছে। আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড জানিয়েছে, যে হিনো আরএম-টু এসি বাসগুলো এর আগে আমদানি করা হয়েছে, সেগুলোর সংযোজন ও বডি ফেব্রিকেশন করা হয়েছে মালয়েশিয়ায়। বর্তমানে জাপান থেকে চেসিস আমদানি করে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে আফতাব অটোমোবাইলস-এর নিজস্ব ওয়ার্কশপে সংযোজন করা হয়। এবার সেই বডি ফেব্রিকেশনের কাজটিই আফতাব অটোমোবাইলস করছে ঢাকায়। বিলাসবহুল এই বাসগুলোর ইঞ্জিন, চেসিস থেকে শুরু করে সব ধরণের উপকরণই জাপানে হিনো’র নিজস্ব কারখানায় তৈরি হচ্ছে। ফলে এর গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

তুলনামূলক কম বিনিয়োগে বিলাসবহুল এসি বাসের মালিক হওয়ার এই সুযোগ সৃষ্টি করে পরিবহন কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে আফতাব অটোমোবাইলস। একটি এসেম্বলিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন ওয়ার্কশপ গড়ে তোলার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে আফতাব।  ওয়ার্কশপের জন্য যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানির কাজ চলছে বলেও জানায় কোম্পানিটি।

শিগগিরই বিলাসবহুল এই হিনো আরএম-টু এসি বাস বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে তারা আশা করছেন।উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে হিনো বাস বাজারজাত করতে শুরু করে আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন রুটে সাত হাজারের বেশি হিনো বাস চালু রয়েছে। আফতাব অটোমোবাইলস কর্মকর্তারা জানান, যাত্রী-নিরাপত্তা ও আরামদায়ক ভ্রমণের দিকটিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়।  এছাড়া যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকটিতে বিশেষ দৃষ্টি রেখে এর ডিজাইন করা হয়। তুলনামূলকভাবে হিনো বাসে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কম। ঝুঁকি কমাতে আফতাব কর্তৃপ নিজস্ব উদ্যোগে বাসের মালিক, চালক ও কর্মীদের জন্য নিয়মিত প্রশিণ কর্মশালার আয়োজন করে। এছাড়া যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আসনের সামনে পর্যাপ্ত লেগ স্পেস, নানা ধরণের বিলাসী উপকরণ যাত্রীদের ভ্রমণকে আনন্দময় করে তোলে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি দাবি করেছে আফতাব অটোমোবাইলস।

এ বাসের ইঞ্জিন, চেসিস আর অন্যান্য উপকরণ প্রায় সবই বিদেশ থেকে আমদানি করা। এর ‘রি-সেলিং ভ্যালু’ও বেশি , বিনিয়োগও নিরাপদ।