মাহফুজ পারভেজের জন্ম ১৯৬৬ সালের ৮ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের গৌরাঙ্গ বাজারের পিত্রালয়ে। পূর্ব-পুরুষের আদিবাস কুলিয়ারচরের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বি.টি বাড়ি। পিতা ডা. এ.এ. মাজহারুল হক ঢাকা মেডিকেল কলেজের আদিপর্বের ছাত্র, ভাষাসৈনিক, কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং ‘‘আমার জীবন ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহের জীবনধারা’’সহ একাধিক গ্রন্থের লেখক। মাতা নূরজাহান বেগম সমাজসেবী।

কিশোরগঞ্জ আদর্শ শিশু বিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের শিক্ষাক্রম শেষে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সরকার ও রাজনীতি’ বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে স্মাতক ও স্মাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার জাতিগত সংঘাত প্রশমন প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শ্রীলঙ্কার ওপর গবেষণার জন্য।

১৯৭৩ সালে মাহফুজ পারভেজের প্রথম লেখা ছাপা হয় কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব স্মরণিকায়। ছাত্রজীবন থেকে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। আশির দশকের কিশোরগঞ্জের সাহিত্য-সাংবাদিকতায় উজ্জ্বলভাবে উপস্থিত ছিলেন। কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের স্থানীয় প্রতিনিধি ছিলেন। সম্পাদনা করেছেন লিটল ম্যাগাজিন ‘প্রতিধ্বনি’। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে পূর্ণ ও খণ্ডকালীন কাজ করেছেন নিউ নেশন, সাপ্তাহিক রোববার, বাংলা বাজার পত্রিকা, ইত্তেফাক ও জনকণ্ঠে। সাপ্তাহিক রোববারের ছিলেন নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাবাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাকালীন সাংবাদিক, ইত্তেফাকের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের সঙ্গে সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন। দৈনিক জনকণ্ঠের সূচনাকালে ছিলেন বিভাগীয় সম্পাদক। সাপ্তাহিক কাগজ, বিচিন্তা, আসে দিন যায় ইত্যাদিতেও নানাভাবে যুক্ত ছিলেন।

১৯৯৩ সাল থেকে গবেষণা-অধ্যাপনায় জড়িত। বর্তমান কর্মস্থল রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। আশির দশকের অন্যতম প্রধান কবি-লেখক। সকল জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে অসংখ্য গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ফিচার ও প্রতিবেদন।

প্রকাশিত গ্রন্থ: আমার সামনে নেই মহুয়ার বন; মানব বংশের অলঙ্কার (কবিতা), বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি; বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব (গবেষণা), একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ; বাংলা ভাষা ইসলাম বিশ্বায়ন (প্রবন্ধ), শতাব্দীর বাংলাদেশ (সম্পাদনা), এক ডজন মজার বিষয় (কিশোর ফিচার), সুপারনোভা (গল্প), মুঘল পরম্পরা (ইতিহাস), রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে (ভ্রমণ), পাশ্চাত্যের দশ দার্শনিক (দর্শন ও তত্ত্ব), বাংলা বানান সহায়িকা (ভাষা-ব্যকরণ), সুইসাইড বোম্বার ও এক ডজন মজার বিষয় (জ্ঞানকোষ) ইত্যাদি অন্যতম।