স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় দিনে বাবাকে পিটিয়ে রাতে মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে এক বখাটে ও তার আত্মীয়স্বজন। শনিবার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের দেহুন্দা ইউনিয়নের সাকুয়া পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত সেকান্দর আলী (৫৫) চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হলে রাতে খালিবাড়ি পেয়ে বখাটে দুই সন্তানের বাবা নূরে আলম (৩০) ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে (১৩) ধরে নিয়ে যায়। রবিবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মেয়েটিকে উদ্ধার করা যায়নি।

পুলিশ, মেয়েটির পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, একই গ্রামের বাসিন্দা শহীদ মিয়ার ছেলে নূরে আলমের ভয়ে মেয়েটি কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যেতে পারছিল না। সে প্রায়ই মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করত। এ পর্যায়ে মেয়েটিকে বাধ্য হয়ে গত মাসে ঢাকায় তার বড় বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঈদের ছুটিতে সে বাড়িতে আসে। ভাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ ছাত্রীর বাবা বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সেকান্দর মিয়া জানান, নূরে আলম তাকে ধর্মবাবা বানিয়েছিল। স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না দুই সন্তানের বাবা নূরে আলমের। কয়েক মাস আগে সে সেকান্দর মিয়ার মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি সঙ্গে সঙ্গে না বলে দেন। এরপর থেকে তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। সমপ্রতি নূরে আলম তাঁর কাছে ৪০ হাজার টাকা পায় বলে দাবি করতে থাকে।

শনিবার দুপুরে নূরে আলম তার অন্য তিন ভাই সাফায়াত, কাইয়ুম ও সাদেককে নিয়ে সেকান্দরের কাছে টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা সেকান্দরকে ধরে টেনে-হিঁচড়ে এক বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে পেটানো হয় তাঁকে। পরে স্থানীয় লোকজন সেকান্দরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১২টার দিকে মেয়েটি প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হয়েছিল। এ সময় ওত পেতে থাকা বখাটেরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মেয়েটির মা রানু আক্তার তখন ঘুমিয়ে ছিলেন।দেহুন্দা ইউপির সাবেক সদস্য ফয়েজউদ্দিন জানান, বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় টাকা পাওয়ার অভিযোগ এনে ওই গরিব অসহায় লোকটিকে পিটিয়ে রাতে মেয়েটিকে ধরে নিয়ে গেছে।

করিমগঞ্জ থানার ওসি এমদাদুল হক মিয়া জানান, এ ঘটনায় সেকান্দর আলী বাদী হয়ে বখাটে নূরে আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেছেন। মেয়েটিকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

-কালের কন্ঠ