কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার ছোট দিঘীরপাড় মৌজার চাতলা খালের বাঁধ কেটে পানি ছেড়ে দিয়েছে এলাকার প্রভাবশালী একটি চক্র। এতে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের ছাতিরচর গ্রামের খুর্শিদ উদ্দিন, শাহেদ আলী ও আবদুল করিম এবং গুরুই ইউনিয়নের বিয়াতিরচর গ্রামের মনির উদ্দিনের লোকজন গত ৫ ডিসেম্বর গুরুই ইউনিয়নের চাতলা খালের বাঁধের মুখ কেটে পানি ছেড়ে দেয়। বাঁধের দুই পাড় থেকে মাটি কেটে খালের কিছু অংশ ভরাট করা হয়।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, খালটিতে সামান্য পানি আছে। এ সময় সেখানে অবস্থান করছিলেন কৃষক সুরুজ আলী (৭০)। তিনি বলেন, খালের পাড়ে তাঁর ১০ একর জমি রয়েছে। অনেক বছর ধরে তিনি নিজেই জমি চাষাবাদ করছেন। চাতলার খাল থেকে প্রতিবছর শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি তুলে জমি চাষাবাদ করেন। কোনো দিন শোনেননি খালটি ব্যক্তিমালিকানার।রোদার পুড্ডা গ্রামের একাধিক কৃষক জানান, চাতলার হাওরের পাঁচ হাজার একর বোরো জমি আবাদের জন্য চাতলার খালের পানির ওপরই নির্ভর করতে হয়। বাঁধ কেটে পানি ছেড়ে দেওয়ায় বোরো আবাদ হুমকির মুখে পড়েছে।

কৃষক আলম মিয়া (৫০) বলেন, বর্ষাকালে খালে জমানো পানি দিয়ে পুরো হাওরে বোরো আবাদ চলে। বাঁধ কেটে দেওয়ায় কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আগাম পানিতে গত বোরো মৌসুমে জমির ধান তলিয়ে যায়। এবারও আবাদ করা না গেলে কৃষকদের মানবেতর জীবন কাটাতে হবে। বিভিন্ন গ্রামের ৩১৮ জন কৃষক এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে গত ৬ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইউএনও ফজলুর রহমান লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ রোববার সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বলেন, চাতলার খালটি ব্যক্তিমালিকানার নয়। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে খুর্শিদ উদ্দিনসহ অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বলেন, খালটিতে আমাদের চারজনের সাত একর জমি রয়েছে। তবে এলাকার কৃষকদের চাষাবাদের স্বার্থে খালটি খনন করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

-prothom Alo