niaz_pasa

ড. নিয়াজ পাশা

কাক ডাকা ভোরে মায়ের হাতের ‘বাচ্চা মুরগীর বিরান’ দিযে গরম ভাত খেয়ে বিদ্যা অর্জনের জন্য আমাদের পদযাত্রা শুরু হতো। বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানীর মা’র মতো আমাদের মা’রা হয়ত জামায় স্বর্ণের মুদ্রা সিলাই করে দিতো না, সত্যি; কিন্তু জমানো টাকা বা বোতল ভর্তি ঘি’ দিতে ভুল হতো না। কাঁধে ব্যাগে প্যান্ট, শার্ট, ফিতায় হাতে জুতা, লুঙ্গি, সেন্ডেল পায়ে বিরামহীন পথচলা। গন্তব্য আমার প্রিয গ্রাম ইটনা উপজেলার লাইম পাশা হতে কিশোরগঞ্জে। ইটনা, বলদা, টিয়ের কোণা, চামরা ঘাটের খেয়া পারাপারে কড়ি পরিশোধ এবং এখন প্রমক্তা নদী, তখন শুকনো কাটা খালের তলা দিয়ে কাদা মাটির সাথে মাখামাখি করে হেটে যখন চামরা বাজারে পৌছতাম, সূর্য তখন পশ্চিম দিকে হেলে পরতো। এখানে প্যান্ট, শার্ট পরিধান করে, জুতা পায়ে, হাত মুখ ধুয়ে ভাত খেয়ে ’বাবু সেজে’ রিকসা যোগে

কিশোরগঞ্জে যখন হাজির, চারিদিক অন্ধকার রাত হয়ে যেতো। তখনো এ রোডে বাস বা অন্য যান চলাচল শুরু হয নাই। দু’ একটি রিকসা উদাস নয়নে পথ পানে যাত্রীর আশায় বসে থাকত। অন্য পথটি ছিল, এশার নামাজের পর হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ঘাটে কাঠের লঞ্চের বেঞ্চে অবস্থান, শেষ রাতে লঞ্চ ছেড়ে সারাদিন ভ্রমন শেষে সন্ধ্যায় ভৈরব ঘাটে নামা। তড়িঘড়ি করে রেল স্টেশনে ট্রেন পেলে রাতে নতুবা পরদিন কিশোরগঞ্জে পেঁৗঁছতাম। ভৈরবে লঞ্চ ঘাটে কিচকি মাছের ঝোল দিয়ে ভাত, আহা! কি মজাই না ছিল। বর্ষায় বিকল্প পথটি ছিল “কেরায়া নৌকা, গোস্তি নৌকা বা পানসি নৌকা” কয়েক জনে মিলে ভাড়া করে বৈঠা হাতে, দাঁড় বাওয়া, গুণ টানা বা পাল তুলা নৌকা করে চামরা ঘাট বা সাঁকোয়া বাজারে রাত্রি যাপন শেষে কিশোরগঞ্জ। তখনো যাত্রীকে জানান দেয়ার জন্য ঢাক ডোল পিঠিয়ে হাতে দাড় বাওয়া ’গয়না নৌকা’ বা বর্তমানে চলমান ইঞ্চিন চালিত ” ট্রলার” চালু হয়নি।

তুমূল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলাম, কিশোরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে, নবম শ্রেণীতে, ১৯৭৯ সালে। EDUCATION FOR DISCIPAIN & CHARECTER  খচিত সুরক্ষিত গেইটের ভিতর সুন্দর, শান্ত ও মনোরম পরিবেশে স্কুল প্রাঙ্গণ। ক্লাশ চলাকালে নিরবতা দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে, এখানে অনেক কোমলমতি ছাত্ররা রয়েছে। আমীর উদ্দিন হেড স্যারের সুদক্ষ পরিচালনায় স্কুলটি জেলার শ্রেষ্ঠ স্কুলের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্লাশ টিচার বি.কে.রায়, হাবিবুর রহমান, কাইয়ূম স্যার, কামাল স্যার, মিনহাজ স্যার, সালাউদ্দিন স্যার, ওয়াহিদ স্যার, বারিক, রুহুল আমিন স্যারগণ ছিলেন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক। স্কুল প্রতিষ্ঠার শততম বছরে, ১৯৮১ সালে আমি এসএসসি পাশ করি। দুধ-মাছে পেট ভরে ভাত খাওয়া ভাটির মানুষ আমার সকালে হোস্টলের ‘হাফ মিল’ ( Half meal) নামে থালার তলায় এক মুটো ভাত আর আলু ভাজিতে হতো না। এগার বা বারটার দিকে স্কুল থেকে সরবরাহকৃত চার আনা দামের একটি গরম সিঙ্গারা আর অঞ্জলি ভরে টিউবিলের ঠান্ডা পানি তখন অমৃত সমান মনে হতো। মাঝে মাঝে আট আনা দামের সন্দেশ খেতাম। দেড় টাকায় নাস্তা হতো। বর্তমানে তা চালু আছে কিনা জানি না ? হাওরে দুর-গ্রামে স্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের এর চেয়েও (না খেয়ে থাকা) ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। মামার বাড়ির স্কুলে পড়ার সময় আমি নিজেই ভোক্ত ভোগি। আর যায় হউক, খালি পেটে বিদ্যা অর্জন হয় না। এখন অনুভব করি, স্কুল ফিডিং এর মহত্ব এবং এর রিটার্ণ অনেক বেশী। কিশোরগঞ্জে গেলে ময়মনসিংহ বাস স্টেশন থেকে এখনো রিকসায় চড়ে সোজা না এসে ডিসি মহোদয়ের বাসার সামনের আমার প্রিয় সর্পিল রাস্তা হয়ে হোস্টেলের সামনে দিয়ে স্কুলের গেইটে থামি। মন ভরে উপভোগ করি, সাদা পোষাক পরিহিত ছোট ছোট শিক্ষার্থীর ছুটা-ছুটি আর নয়ন বন্ধ করে অতীতি ফিরে যাবার ব্যর্থ প্রচেষ্ঠার করি। কত মধুরই না ছিল সে দিনগুলো।

আমাদের গ্রামের দশ বর্গমাইলের মধ্যে ছিল না কোন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যারয়। হাওরের সব গ্রামে প্রাথমিক বিদালয়ও নাই এবং একই গ্রামে অন্য পাড়ায় শিশুদের স্কুলে যাতায়াতও কষ্টকর ও নৌকা ডুবির শংকার বিষয়টিও শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুলগামী না হওয়ার অন্যতম কারণ। প্রাথমিক বিদ্যালয় পাশ করে আশুগঞ্জে গিয়েছিলাম ভর্তি হতে। সেখানে ”উত্তইরা ভুত” বলে উপহাস করতো। ”হা-ভাত’র জন্য আমরা তাঁদের ”দনহাইল্লা কাউয়া’ বলে জবাব দিতাম। কিশোরগঞ্জে আমাদের ”ভাইট্রা গাবর” বলে ডাকে। ’ভাইট্রা গাবর’ গুরু দয়াল এর ’গোয়াল ঘর’ এবং আনন্দ মোহন বসুর ’আনন্দ মোহন কলেজে’ থেকেই তোমাদের মানুষ হয়ে বের হতে হয়, এ রকমই ছিল আমাদের জবাব। তারপরও আমাদের কর্মতৎপরতা দিয়ে সবাইেেক ডিঙ্গিয়ে যেতাম, আমাদের ক্লাশের উপরের দিকের রোল নম্বরধারি প্রায় সবাই ছিল ভাটির সন্তান। উল্লেখ্য, উপরেল্লিখিত দুই মহর্ষির জন্ম ইটনা উপজেলায়। এ স্পৃহা থেকেই আজ ভাটির শার্দুল হিসবে খ্যাত ও আমাদের গর্ব হাওরের মাটির খাটি সন্তান আব্দুল হামিদ দেশের সর্বোচ্চ পদ-রাষ্ট্রপতি হিসাবে অধিষ্টিত। বাংলার প্রথম র‌্যাংলার আনন্দ মোহন বসু, গুরুদয়াল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা গুরুদয়াল সরকার, ব্যরিস্টার ভুপেশ গুপ্ত, বাঙালি জাতির ইতিহাস রচিয়তা ড. নিহার রঞ্জন, সংগিতজ্ঞ দেবব্রত বিশ্বাস বা ভাটির বীর ঈশা খা’র জন্ম এই ভাটি বাংলায়। আমাদের সময় কম সংখ্যক ভাটিবাসিরই বাসাবাড়ি বা খুব অল্প সংখ্যক হাওর ভাটির শিক্ষার্থী কিশোরগঞ্জে থেকে লেখা পড়া করতো। থাকবো হারুয়া, ফিসারি রোডে, মেস করে । স্কুল থেকে আট আনা রিকসা ভাড়া দিয়ে মেসে যাওয়া যেতো। দেড় টাকায় নাস্তা কাবাব। হাওর ভাটি এলাকা হতে যে ক’জন সৌভাগ্যবান শিক্ষার্থী কিশোরগঞ্জে লেখাপড়া করতে আসতো তাদেরকে মেসভাড়া করে বা হাতে গুণা কয়েকটি হোস্টেলে থাকতে বাধ্য হতো। কেউ কেউ লজিংও থাকতো। হোস্টেল মানে ইসলামিয়া বোর্ডিং. কিশোরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের হোস্টেল, এসভি গার্লস স্কুলের ছোট কয়েকটি কক্ষ নিয়ে গড়া হোস্টল। মেসে থাকা অনেক ঝামেলা, বাজার করা, বিশেষ করে গ্রামের আত্মীয়, অনাত্মীয়, অযাযিত অতিথিদের ভীড়, তাঁদের সময় দেয়া, মার্কেটিং, মামলা বা চিকিৎসা ও সিনেমা দেখা ভাটির শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটাতো। কোমলমতি হাওর ভাটির শিক্ষার্থীরা মেসগুলোতে অভিভাবকহীন অবস্থায় অনেক সময় হাতে কাচাঁ পয়সার কামড়ে বিপথগামী হয়ে নষ্ট হয়ে যেতো। ভেবে চিন্তে পরের বছর স্কুলের হোস্টেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

কিশোরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের হোস্টেলের দোতলায় পূর্ব পাশের শেষ রোমে আমার সিট বরাদ্দ হলো। এক ররুমে তিনজন, রোকন, মকবুল ও আমি। একটি দোতালা এবং একটি একতলা বিল্ডিং নিয়ে আমাদের হোস্টেল। মনোরম, কোলাহল মুক্ত ও নিরব পরিবেশে স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে একটু দুরে এর অবস্থান। বিশাল মাঠের একপাশে হোস্টেল, পাশে পুকুর, হর্টিকালচার সেন্টার, হেড স্যারের বাসা, অন্য পাশে আদালত, আমাদের মাঠের কিছু অংশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জ মহিলা কলেজ। হোস্টেলের সামনে ছায়াঘেরা পরিবেশে সর্পিল রাস্তার পাশে মহকুমা প্রশাসক (এসডিও), পুলিশ সুপার ও জজদের বাসাবাড়ি। রক্ষিবাহিসীর ক্যাম্প হিসাবেও এর পরিচিতি ছিল বলে শুনেছি। ভাটি এলাকা, করিমগঞ্জ, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর, কেন্দুয়া ইত্যাদি এলাকার ছাত্ররা এ হোস্টেলে থাকতো। ছাত্ররা সবাই সুঠাম দেহের অধিকারি । আমাদের সাথে কোন খেলায় অন্যরা পেরে উঠতো না। আমাদের পরীক্ষার রেজাল্টও ছিল ঈর্ষষীয়। মহকুমা প্রশাসক নুরুজ্জামান সাহেবের কাছ থেকে ১৯৮০ সালে একটি টেলিভিশন এবং হোস্টেল সুপার রুহুল আমিন স্যারের সহযোগিতায় আমরা একটি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করি। হোস্টেলটিতে ছিল রমরমা ও প্রতিযোগিতামূলক পড়ার পরিবেশ। হোস্টেল বন্ধুরা আমার সবাই আজ স্ব স্ব ক্ষেত্রে দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব।

কয়েক বছর আগে হঠাৎ শুনতে পেলাম, আমার প্রিয় হোস্টেলটি বেদখল হয়ে গেছে। আমাদের বন্ধু টিটু এ দখলের প্রতিবাদের নিউজ আমরা পত্রিকায় পড়েছি। সমর্থনের চেষ্টাও করেছি। হোস্টেল বিল্ডিংটি সহ এর প্রাঙ্গণ অন্য একটি স্কুলে রূপান্তর করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তির ইচ্ছায় তা হয়েছে। ভাটির ছাত্রদের এ সুযোগটুকু নষ্ট না করে নতুন স্কুলটি অন্যত্রও প্রতিষ্ঠিত হতে পারতো। সে সুযোগও ছিল। আবার কিশোরগঞ্জের সকল প্রগতিশীল ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূতিকাগার শহীদী মসজিদ সংলগ্ন ঐতিহাসিক ইসলামিয়া হোস্টেলের সামনে এক চিলতে সবুজ মাঠ ছিল। ভাটি-বাংলাসহ কিশোরগঞ্জের অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব এ হোস্টেলে থেকে অধ্যয়ন করেছেন। যেখানে শহরবাসির একটু প্রশান্তির নিঃশ্বাস, বাচ্চাদের খেলাধূলা বা জনসভার সুযোগটুকু কেঁড়ে নিয়ে এবটি বেখাপ্পা মার্কেট তৈরী করে সৌন্দর্যহানি করেছে। রথ খলার মাঠটিও নাই বলে জেনেছি। অনেক রজনী কেটেছে আমার জরাজীর্ণ, তদারকি/ অভিভাবাবকহীন বর্তমানে বসবাস অনুপযোগী ঐ হোস্টেলেও। এর সামনে গেলে শহরবাসির প্রতিবাদহীন এমন আত্মঘাতি নিরবতা আমাকে কুড়ে কুড়ে খায়।

শিক্ষার প্রতি হাওরবাসির এখন অনেক আগ্রহ ও ত্যাগ আমাকে প্রচন্ড আশাবাদী করেছে। বঞ্চিত হয়ে অভিজ্ঞতায় তাঁরা বুঝতে শিখেছে, শিক্ষায় বিনিয়োগে রিটার্ণ অনেক বেশী। হাওর এলাকায়ও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু মান ও গুণ সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে প্রচুর সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী শহরে থেকে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে লেখাপড়া করছে। এগুলোর উন্নয়নেও আমাদের নজর দিতে হবে। এ সব শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাড়া বা মেস করে থাকতে হচ্ছে। অতিরিক্ত খরচসহ বিভিন্নমুখী সমস্যায় তাদের শিক্ষা জীবনকে প্রচন্ডভাবে বাঁধাগ্রস্থ করছে। কলেজে অধ্যয়নের জন্য সীমিত সীট ও সুবিধা সম্বলিত হোস্টেল থাকলেও স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোন ব্যবস্থা নাই। ইসলামিয়া বের্ডিং কে/জায়গায় একটি বহু তলা বিশিষ্ট হোস্টেল নির্মিত হোক। যেটার নামকরণ মহামাণ্য রাষ্ট্রপতির নামেও হতে পারে। ভাটি বাংলাসহ কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষার্থীরা এতে অবস্থান করবে। আমি স্বপ্ন দেখি বা আমাদের দাবী হলো, প্রত্যেক হাওর উপজেলায় ছেলেদের জন্য একটি এবং মেয়েদের জন্য একটি করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্বলিত পুরাপুরি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। সাথে থাকবে একটি করে বহু বিষয়ে সমৃদ্ধ পাঠাগার। হাওর অধ্যুষিত প্রতি জেলা সদরে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের হাওর শিক্ষার্থী-ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক আবাসন/ হোস্টেল ব্যবস্থা থাকবে। কৃষি, কারিগরি, আইটি, বস্ত্র, মেডিক্যাল এসিস্ট্যিান্ট ইত্যাদি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য।

ফিরিয়ে দিতে হবে বেদখল হয়ে যাওয়া আমাদের হোস্টেলগুলো, বিনিমার্ণ করতে হবে আমাদের হোস্টেলগুলো। পাহাড়ীদের মতো আমাদের অবহেলিত, বন্ধুর ও বঞ্চিত হাওর শিক্ষার্থীর জন্য ভর্তি ও চাকুরী ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। হাওর উন্নয়ন বোর্ড/ সরকারী এবং ব্যক্তি সহযোগিতায় /উদ্যোগে হাওরবাসি শিক্ষার্থীর জন্য একটি ঘূর্ণায়মাণ শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হতে পারে। শিক্ষার্থী এ ট্রাস্ট থেকে তাঁর প্রাপ্ত সহযোগিতার সমপরিমাণ বা ততোর্ধ অর্থ কর্মক্ষেত্রে গিয়ে ফেরত দেবার অঙ্গীকারব্ধ থাকবেন। এগুলোর প্রতি আমাদের নজর দিতে হবে। হাজার বছরের ইতিহাসে আমরা একজন খাটি হাওরবাসি, ভাটির কাদাজলে বেড়ে উঠা একজন রাষ্ট্রপতি পেয়েছি। তাঁর সৃষ্ট কর্মের জন্যই তিনি হাওরবাসির হৃদয়াকাশে ঝলমল করে উজ্জল থেকে উজ্জলতর হয়ে আলোক বর্তিকা হিসাবে চির ভাস্কর থাকবেন। এ সুযোগ এখন আরো বেড়েছে। আমি বিশ্বাস করি, উন্নয়নের মুলমন্ত্র- শিক্ষা, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নের মধ্যে লুকায়িত রয়েছে। হাওরের বুক চিড়ে গ্যাস অন্যত্র যাচ্ছে, নৌ যোগাযোগ সহজ লভ্য, সস্তা শ্রমের জন্য “হাওর ইপিজেড”  বা  “হাওর শিল্প পার্ক”  স্থাপনের মাধ্যমে স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, উদ্যোগ ও সচেতনতাই পারে প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে। সুউচ্চ শত বজ্র কণ্ঠে, স্ব-শব্দে না চাইলে কেউ অধিকার/প্রাপ্য র্মযাদা দেয় না। আমাদের চাইতেই হবে, আমাদের হাওরের চারণ ভূমিতে, পুষ্পের হাসি ফুটাতেই হবে। এ হউক আমাদের অঙ্গীকার।

হাওর ভূমিপুত্র; কৃষি প্রকৌশলী ও কৃষি সাংবাদিক;
সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টার, বিএআরসি ক্যাস্পস, ফার্ম গেট, ঢাকা-১২১৫
[email protected]; ফোনঃ 01727 074 584