আমি মূলত নোনা পানির উদ্ভিদ।আমার পাতার ধারে রয়েছে প্রচুর তীক্ষ্ণ কাঁটা। আমার বাংলা নাম কেয়া, কেওড়া বা কেতকী।  আমার আছে নেক সম্বলকৃত নাম। যেমন-তীক্ষ্ণপুষ্পা, নৃপপিয়া, পাংশুলা,ইন্দুকলিকা, স্বর্ণপুষ্পী, কনকপ্রসবা, কন্ঠদলা, গন্ধপুষ্পা। আমার ফুলের সৌরভ প্রাচীনকালের কবি ভেষজ পন্ডিতদের কাছে সুবিদিত ছিল। দ্বাদশ শতাব্দীর কবি জয়দেব আমাও ফুলের আকার-আকৃতি নিয়েও গিত রচনা করেছেন। প্রাচীনকালে আমি সুগন্ধি নির্যাসের জন্য যে রকম সুপরিচিত ছিলাম, ভেষজ গুনের জন্যও কম সুবিদিত ছিলাম না। রাজনিঘুন্টুতে আছে-

“কেতকী কুসুমং বর্ণ্যং কেশদৌর্গন্ধনাশনম্‌,
হেমাভং মদনোন্মাদ-বর্ন্ধনং সৌখ্যকারি চ”

মানে গুন পর্যায়ে আমি বর্ণপ্রসাদক কেশের দুর্গন্ধনাশক, স্বর্ণের মতো বর্ণবিশিষ্ট,মদোন্মাদকারক, সৌখ্যকারি।নব্যের সমীক্ষায় দেখা যায়-আমার পাতার তিক্ত রস বসন্ত, ব্রন,কুষ্ঠ, ডায়াবেটিস রোগে উপকারী।আর ফুলের তেল-উত্তেজজ য় পেটের ব্যাথায় ভালো ফল পাওয়া যায়।আমার ফুলের বৈচিত্র্য তোমরা কি লক্ষ করেছো?ফুল ফোঁটার ব্যাপারে যে আমি দ্বিবাসী বা ভিন্নবাসী।মানে আমার পুরুষ ফুল স্ত্রীফুল ভিন্ন গাছে ফুটে থাকে।আমার পুরুষ ফুলের গন্ধ উগ্র।আর স্ত্রী ফুলের গাছেই দেখা যায় আমার ফল।সেন্ট মার্টিন দ্বীপে গেলে দেখা যাবে সমুদ্র পাড়ে আমার বেশ বড়ো বড় গাছে আনারসের মতো গোল ফলের অসংখ্য উঁকিঝুকিঁ।অনেকেই আমার ফল খেয়ে থাকে।আমাকে নিয়ে তো কাব্য লেখার অন্ত নেই-কি প্রাচীন সাহিত্যে বা আধুনিক কাব্যে।  – ডঃ নওয়াজেশ আহমদ