কিশোরগঞ্জে বিআরটিসির বাস বন্ধের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সড়ক অবরোধ করেছে জেলা পরিবহন মালিক সমিতি। অবরোধের কারণে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের উভয়দিকে আটকা পড়েছে কয়েক শ যানবাহন। ফলে দুপুর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সব রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে ড়েছে হাজার হাজার যাত্রী।

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অমান্য করে নিজস্ব ডিপোর বাইরে যত্রতত্র বাস রাখার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে বিআরটিসির বাস বন্ধের দাবি জানানো হচ্ছিল। আজ বেলা একটার দিকে কিশোরগঞ্জ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বড়পুল এলাকায় তাড়াইল থেকে ঢাকাগামী বিআরটিসির বাস আটক করেন। পরে তাঁরা সড়কের ওপর এলোপাতাড়ি বাস-ট্রাক রেখে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। কিশোরগঞ্জ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মানিক বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে ঢাকায় ত্রিপাক্ষীয় এক বৈঠকে বলা হয়, বিআরটিসির বাস চলাচল করতে হলে তাদের বাস রাখার নিজস্ব স্থান থাকতে হবে। তবে বিআরটিসির বাসগুলো নিয়ম মেনে না চলার কারণে বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’

এ ব্যাপারে বিআরটিসি মতিঝিল বাস ডিপোর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. খান কামাল বলেন, ১৯৬১ সনের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো রুটে বিআরটিসির বাস চলাচল করতে পারে। এ জন্য কোনো রুট পারমিটের প্রয়োজন হয় না এবং এতে নিয়মের ব্যত্যয়ও ঘটে না। বিআরটিসি বাস ডিপো জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ সরকার বলেন, কিশোরগঞ্জ সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির দাপটের কাছে বিআরটিসি জিম্মি হয়ে পড়েছে।

তবে স্থানীয় শিক্ষক আমিনুল ইসলামসহ একাধিক যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, শীততপ নিয়ন্ত্রিত বিআরটিসির বাসগুলোতে ২০০ টাকায় ঢাকায় আরামে ভ্রমণ করা যায়। বেসরকারি পরিবহন সংস্থার অন্য বাসগুলোতে ১৮০ টাকায় গরমের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়, খুবই কষ্টদায়ক। তাই প্রশাসন বিআরটিসি বাস চলাচলের প্রতিবন্ধকতা দূর করে জনগণের উপকার করবে বলে তিনি মনে করেন।অভিযোগ অস্বীকার করে কিশোরগঞ্জ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মুরাদ রেজা বলেন, ডিপো না থাকা সত্ত্বেও যত্রতত্র বিআরটিসি বাসগুলো যেভাবে খুশি চলাচল করছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে জেলা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সুরাহা না হওয়ায় মালিক ও শ্রমিকেরা বাস চলাচল বন্ধ রেখে অবরোধ সৃষ্টি করেছেন।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তন্ময় দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নূরে আলম সিদ্দিকিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের আলোচনা চলছে। জেলা প্রশাসক ও সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে প্রশাসনের আলাপ আলোচনা চলছে। সমঝোতা না হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুত্রঃ প্রথম আলো